অনুভবের স্রোত আর চিন্তার জাল
মত ও অভিজ্ঞতা দুটো আলাদা শব্দ। মত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাজাত। যেমন রসগোল্লা মিষ্টি। এ সমষ্টিগত অভিজ্ঞতা। কিন্তু রসগোল্লা সব চাইতে ভালো মিষ্টি --- এ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। মত। "আমার মনে হয়" --- এই কথাটা বেঁচে আছে, ভাষা আছে বলেই। নইলে আমার কি মনে হয়, তাকে পৃথকভাবে জানার বা জানানোর উপায় ছিল না।
বিদ্যাসাগর, কমলা ভাসিন প্রমুখেরা
সংসারে বিদ্যাসাগরের অভাব হয়নি কোনোদিন। আজও নেই। বরং বিদ্যাসাগরের সুনামিতে সমাজের প্রাণান্তকর অবস্থা হয় মাঝে মাঝে। বিদ্যাসাগরেরা প্রাচীনকালেও ছিলেন, আজও আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। বিদ্যাসাগরের ঢেউয়ের গর্জনে কান ঝালাপালাও হবে।
একান্নবর্তী পরিবার
একজন আমার কাছে খুব দুঃখ করত, "দেখো আমাদের একান্নবর্তী পরিবার। আজকাল তো দেখাই যায় না এরকম। কিন্তু কেমন যেন সব ছাড়াছাড়া। কেউ কারোর ঘরে আসে না। সব আলাদা আলাদা রান্না। ভালো লাগে না।"
আমি শুনে, 'হাঁ, হুঁ' বলতাম।
খেলনার দোকানগুলো
বিশ্বকর্মা পুজো মানে দারুণ উত্তেজনা। উঁহু, এই আজকের কথা না, সে বহুযুগ আগেকার কথা, যখন আমার উচ্চতা কম ছিল, দাড়িগোঁফ হয়নি, কেশ কৃষ্ণবর্ণ ছিল, চোখে চালসে পড়েনি, এবং সর্বোপরি সংসারে নানা বস্তুর উপর কুতুহল ছিল বেজায়।
অথোরিটি
কয়েকটি কথা আবশ্যক বিবেচনা করিয়া লিখিবার প্রয়াস পাইতেছি। আমি নানাবিধ বিষয় লইয়া লিখি। যে বিষয় আমায় পাইয়া বসে সেই বিষয়ই আমায় দিয়া লিখাইয়া ছাড়ে। কিন্তু কোনো বিষয়েই আমি নিজেকে অথোরিটি মনে করি না। অথোরিটির কোনো বাংলাই মনোমত না হওয়ায় অথোরিটিই লিখিলাম।
পরিবার
পরিবার মানেই কি ভালোবাসার ক্ষেত্র? "মায়ের ভায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ?"... এ পুরো ঢপের কেত্তন। এত অত্যুক্তি বাপু খুব কম গানেই শোনা যায়। পদে পদে অতিকথন। সে যাক, গীতা মনে আছে? আর ধুর, পুরো গীতাটা কে মুখস্থ বলতে বলেছে, কনটেক্সটটা নিশ্চয়ই জানা আছে। সেটা কি পারিবারিক সুখকর কিছু ভাবভালোবাসার উদাহরণ?
মার্টিন লুথার কিং ও ভারতবর্ষ
প্রতিটা মেয়ে আত্মগোপন করে সমাজে জন্মায়
সেদিন খাঁচার পাখি আর বনের পাখির মধ্যে তুমুল তর্ক হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের গান কি কবিতা যাই বলুন, আমরা পড়েছি। তাদের মধ্যে যে একটা মিলনের পিয়াস ছিল, তাও পড়েছি। কিন্তু তা হয়নি। বিধাতার মনে কি ছিল সে জানি না, কিন্তু বনের পাখিটার মনে কি হয়েছিল তারপর, বনে ফিরে গিয়ে? তার কি একবারও মনে হয়নি যে খাঁচার পাখি যা বলেছে সে তার প্রাণের কথা নয়?
অতিশয়োক্তি
সত্যের সমস্যা মিথ্যাকে নিয়ে ততটা নয়। মিথ্যা সত্যের সতীন। তাদের মধ্যে কোন্দল আছে যেমন, তেমন পাশাপাশি অবস্থান করে সংসার চালানোও আছে। সত্যে মিথ্যায় মিলে জগৎ সংসার। এ আমরা একপ্রকার মেনেই নিয়েছি। এইতেই স্বাভাবিক ছন্দ আমাদের। কে আর বেছে বেছে খাঁটি সত্যে জীবন ধারণ করবে রে বাবা, অমন পরমহংস হলে আমাদের পেট ছেড়ে দেবে। তাই মানুষের আরেকটি আবিষ্কার হল, অতিশয়োক্তি।
বিশ্বাসে ডুবায় তরী, রাখো ভরসা সংশয়োপরি
Every passion is mortified by it (scepticism), except the love of truth - David Hume