Skip to main content

তবু তুমি

আমার মনের বার দুয়ারে কপাট দিলে
ভিতরে তুমি
দরজা এঁটে বাইরে এলে
পথে তুমি, ধুলোতে তুমি, আকাশে তুমি
দীঘির জলে তুমি, বটের ছায়ায় তুমি
চিলের চীৎকারে তুমি, দোয়েলের শিসে তুমি
রাতের আকাশে ধ্রুবতারায় তুমি
পাগল করা দক্ষিণের হাওয়ায় তুমি

আমি কি কোথাও নেই?

আমি আছি অপেক্ষায়
অনন্তকালের আকুল অপেক্ষায়
তোমার জন্য
তোমার সাথে মিশব বলে

লজ্জা

রাস্তায় দেখলাম অন্য মহিলা
সমস্ত যৌবন, দুই স্তন আর ক্ষীণ তনু
উন্মুক্ত করে প্রকাশ্য দিবালয়ে
পাগলী?
লোকে বলে তাই

রাস্তার চারিদিকে
ছুটন্ত ব্যস্ত বেহুঁশ মানুষ

পাগলীর দুহাত জোড়া ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো
কাকে পরাবে?

ভেবেছিলাম বুদ্ধি বলবে-
কি নির্লজ্জ অবস্থা

অন্ধকারের আলোয়

সারাক্ষণ আলোর দিকে তাকিয়ে থাকো
যেখানে আলো নেই সেখানে আমি
আমায় দেখবে কি করে?
তুমি হাত বাড়াও শুধু, আমি ধরে নেব
আমি অন্ধকারেও দেখি
অন্ধকারেরও একটা আলো থাকে
যে আলোতে থাকে সে টের পায় না

আর জানে বিসমিল্লাহ্‌

কিছু অকথিত কথা
কিছু আত্মভোলা ব্যাথা

কিছু কাছে থাকা দূর
কিছু বোবা কান্নার সুর

কিছু পোড়া চিঠির ছাই
কিছু পালক সুখের ঠাঁই

সানাই জানে
আর জানে বিসমিল্লাহ্‌

আমি-রা


নিজের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলাম
দরজা খুলে দেখি অনেক লোক
জিজ্ঞাসা করলাম, তোমরা?!
ওরা একটা অন্ধকার দরজার দিকে ইঙ্গিত করল
সে দরজা দিয়ে ঢুকে দেখি আরো অনেকে দাঁড়িয়ে
আশ্চর্য! সবাইকেই খুব চেনা লাগলেও চিনতে পারছি না
কারা তোমরা? চীৎকার করে উঠলাম
হাজার কণ্ঠের ফিসফিসানি কানে এল-
আমরা তোমারই অতীতের এক একটা খন্ড
আমি বললাম, তবে আমি কে?

চিরনূতন

তুমি বললে আমাদের ভালবাসা নাকি পুরোনো হয়ে গিয়েছে
কেমন খটকা লাগল শুনে
প্রেম কি কখনো হয় পুরোনো?

সারারাত ঘুমালাম না, মাথার মধ্যে প্রশ্নচিহ্নের বাড়ি
প্রেম কি কখনো হয় পুরোনো?

সকাল বেলা উঠে ছাদে আসলাম
ডিমের কুসুমের মত রঙ সূর্য্যের
মনে হল এ সূর্যোদয় কি পুরোনো?

লাল সিগন্যাল

সন্ধ্যেবেলা স্টেশানে দাঁড়িয়ে
প্ল্যাটফর্মের শেষে লাল সিগন্যালটা
                       একলা দাঁড়িয়ে
পিছনে একরাশ অন্ধকার নিয়ে

আড়াল রেখেছি বনফুলে

বুকের মধ্যে একটা আলপিন ফোটালে
জিজ্ঞাসা করলে, লাগছে?
বললাম, না

তারপর একটা বড় পেরেক গাঁথলে
                            পাঁজর চিরে
জিজ্ঞাসা করলে, লাগছে?
দাঁতে দাঁত চেপে বললাম, না তো!

উতলা

আমার খুব রাগ তোমার চোখের পাতার উপর
কেন তারা যখন তখন পড়ে?
আর যেখানে সেখানে ঝরে?

আমার খুব হিংসা তোমার ঠোঁটদুটোর ওপর
কেন নিজেদেরকে ছোঁয়
আর নিজেকে আদর করে?

আমার খুব ঈর্ষা তোমার পোশাকগুলোর ওপর
কেন তাদের সাথে এত আঁট তোমার?
আমায় পাগল করে ছাড়ে

আমার খুব লোভ তোমার গায়ের গন্ধের ওপর
কেন তারা আমার গায়েও নেই?
যে এতই উতলা করে?

সেই ঢের

আমার কথা তুই বুঝিস না,
এত নিশ্চিন্ত তাই তোকে নিয়ে
আমায় তো বুঝিস!

আমার কথার জালে আমি নিজেই থাকি জড়িয়ে,
তুই ছাড়া তোর প্রাণের আনন্দে
আমার ভাবনা পেরিয়ে আমায় ছুঁতে তো পারিস!

আমার গান, তাল, লয় কিছুই বুঝিস না,
মুখ্যু ঢেকি
কেন গাইতে চেয়েছিলাম, সেটা তো বুঝিস!

Subscribe to কবিতা