সিঁড়ি
সিঁড়ির প্রথম ধাপের সাথে
শেষ ধাপের যে সম্পর্ক
যদি তুমি বোঝো
পা পিছলাবে না আর
প্রথম ধাপেই থাকে শেষ ধাপের ইঙ্গিত
সে দিশা যে বোঝে, যে খোঁজে
সে তার
টান
আমার বুকের থেকে কিছু রঙ চুঁইয়েছে
দেখো ওরা তোমার আঁচলে লেগে এখনো
ওরা গড়িয়ে তোমার সর্বাঙ্গ ভেজাবে
চুঁইয়ে চুঁইয়ে ঢুকবে তোমার ধমনী শিরায়
স্নায়ুতে লাগবে পূর্বজন্মের টান
ভেজা মাটির গন্ধে শিকড়
পায় যেমন জলের সন্ধান
অচল স্রোত
জোনাকি
একাকীত্বের খাঁজে খাঁজে
জমাট বাঁধা বিষাদ
তাতে জোনাকির মত ছোট ছোট সুখ
কখনো জ্বলে, কখনো নেভে।
আমি কুয়াশায় ঢাকা হতাশাকে বলি
"আর কতদিন?"
বিভ্রান্ত হতাশা আকাশ হাতড়ায়
সূর্যের খোঁজে
ক্ষত বিক্ষত হয়ে আসে ফিরে, ক্ষুব্ধ হয়ে
ধূমকেতুর সাথে আঘাত লেগে।
মায়া
একটা গাছ, তার-
শিকড়কে বিশ্বাস করে না
পাতাকে বিশ্বাস করে না
তার চারপাশের-
মাটিকে বিশ্বাস করে না
জলকে বিশ্বাস করে না
বাতাসকে বিশ্বাস করে না
সে আকাশের দিকে তাকিয়ে
দীর্ঘশ্বাস ফেলে
হতাশ্বাস ফেলে
বিষাদের জাল ফেলে
হতেও তো পারত!
তোমার আঁচলের খুঁটে কটা শব্দ বাঁধা থাকত, গোপনে।
ওদের কি করলে?
কুটনো কুটতে গিয়ে, কেটে ফেলছো?
শাক ধোয়া জলের সাথে ভাসিয়ে দিয়েছো নর্দমায়?
না বোধহয়।
তোমার চুলের কাঁটার সাথে কিছু শব্দ আটকে আছে, এখনো।
ওরা তোমার দু-একটা পাকাচুল নিয়ে খেলে,
তুমি চাইলে ওরা তোমায় খোলা আকাশে নিয়ে যেতে পারত
গ্যাস বেলুন দেখেছিলে না, ময়দানে?
ফুলগুলো
পাপড়িগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে
ফুলদানীতে সাজালে রোজ
ভাবলে প্রজাপতি আসবে
তোমার শোয়ার ঘর রঙীন করে
হল না।
তুমি জানতে না
পাপড়ির সাথে বৃন্তের কি সম্পর্ক
বৃন্তের সাথে কি কথা বলে শিকড়
আমার আকাশ
যদি মনন, চেতনার হাত ছেড়ে ছোটে?
যদি অনুকম্পার কণ্ঠ, প্রকাশ ভঙ্গীর অলঙ্করণে পড়ে চাপা?
যদি স্থির জলাশয়ের স্বচ্ছ তলদেশ দেখাটা হয় অতিসরলীকরণ,
দেখতে হয় তাকে - গুলিয়ে, নেড়ে, ঘেঁটে..তারপর আন্দাজে তলদেশে ছুঁয়ে?
যদি বলতে চাওয়ার তাগিদের চেয়ে, বলতে চাওয়ার ভঙ্গীতে করতে হয় মুগ্ধ?
এই যা রক্ষে!
কত ভদ্রতা দাঁড়িয়ে আছে
দর্জির সাথে দর করে,
কত চরিত্র দাঁড়িয়ে আছে
(দরজা জানলার)
ছিটকিনিতে ভর করে
চোখে তো পড়ে কত কিছুই
ভাগ্যে অনেক কিছুই যায় এড়িয়ে
শুভদৃষ্টি
যতবারই চাঁদের সাথে চোখাচোখি হয়
কত জন্মের শুভদৃষ্টির কথা মনে পড়ে
সেদিন শ্রাবণের পূর্ণিমা
মেঘের ঘোমটা টেনে
চাঁদ আসল আমার নিকানো উঠানে
অনেক গভীর রাতে।