Skip to main content

তোতলা বিবেক

তোতলা ছিল। তাই কথা কম বলত। ভাবত। দেখত। হাসত। কাঁদত।

বোবা না, তোতলা ছিল। ...

দরদ থাকলে

মিষ্টি কথা ডানা মেলে ডালে গিয়ে বসল।
          সূর্যের আলো এসে পড়ে বলল, এক্ষুণি শুষে নেব তোকে, তুই শেষ হবি আমার হাতে, আমি সত্য।
           মিষ্টি কথা বলল, আমায় শুষে নিতে পারো, আমার যে মাধুর্য প্রাণে জাগিয়ে এলুম, তাকে শুষে নেবে কিসে? শিশিরের গায়ে যে মুক্তো জাগাও, সেও তো মিথ্যা তবে!
...

রাধা-গোবিন্দ

রাধা বলল, হ্যাঁ গো, এ যে পুজো সম্পূর্ণ না করেই গেল চলে!
          গোবিন্দ বলল, ওই যে দেখো, একটা পাখির শাবক পড়েছে মাটিতে। নীড় ছেড়ে। বেড়ালে খাবে যে ওকে। তাই সে দৌড়ালো পুজো ছেড়ে।
          রাধা বলল, তুমি সে পাখিকে পড়তে দিলে কেন?
....

শুকনো নদী

শুকনো নদী। রাতের তারাভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, আর কতদিন?

কেউ উত্তর দিল না।

ভোরবেলা এলো মেঘ। বৃষ্টি শুরু হল মুষলধারে। নদী ভাসল জলে।

রাতে তারাদের ছায়া পড়েছে উচ্ছল নদীর বুকে। তারা ফিসফিস করে নদীর কানে কানে বলল, আমরা তোমার মোহনা অবধি দেখতে পাই, জানো, তোমার রহস্য বলে কিছু নেই!

নদী বলল, মোহনায় পৌঁছানোর সুখ পাও কি?

পাগল

পাগল ধেই ধেই করে নাচতে লাগল।

সবাই বলল,
   এই পাগল কি হল?

পাগল বলল,
  আমি সব বুঝে ফেলেচি...সব

সবাই বলল,
  কি বুঝলে?

সব জানে সময়

ঢিল পড়ল জলে। টুপ।
ঢেউ উঠল। ঢেউ এসে লাগল পাড়ে। ছলাৎ।

বাতাস উঠল বেগে।
জল উঠল কেঁপে কেঁপে।
সে কাঁপন লাগল পাড়ে এসে। ছলাৎ ছলাৎ।

মাটি উঠল কেঁপে। ভূমিকম্প।
জল উঠল ভীষণ হয়ে।
পাড়ের উপর এসে ধাক্কা খেল জল।
ছলাৎ, ছলাৎ, ছলাৎ।

জলের বুকে আকাশের ছায়া উঠল চঞ্চল হয়ে।

অপেক্ষা

অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন জন্মালো। স্বপ্নেও অপেক্ষা হল না শেষ। এলো না সে। অথচ আসবার কথা দিয়েছিল যেন, স্পষ্টভাবে নয়, ইঙ্গিতে। এমন কতবার হল!

    "অপেক্ষা করার দায় কি শুধু আমার!" - নিজেকে চীৎকার করে বলল সে, নিঃশব্দে। ঠিক করে নিল, আর অপেক্ষা নয়।

ধরো ধরো, সুর ধরো

কোনো অজ্ঞাত কারণ ছিল। কেউ কিচ্ছু জানল না। কারণ কি ছিল, কাকে জিজ্ঞাসা করবে আজ? সে কই?

    কারণ জিজ্ঞাসা করা হয় না। সময় পাওয়া যায় না। সবটুকু সময় তো আমার একার। তোমায় দেব কেন? সবটুকু সময় নিংড়ে নিংড়ে বার করব আমার জীবনের মহাকাব্য। সময়কে ঘাড় ধরে সকাল সন্ধ্যে, গ্রীষ্মবর্ষাশীতবসন্ত আমার ক্ষেতে জোয়াল টানাই। তুমি কে?

তুমি তো

তুমি তো আগন্তুক নও। তবু দেখো, আমি দরজা জানলা এঁটে এমনভাবে রয়েছি যেন তুমি ফিরে যাবে আমায় না পেয়ে খোলা দরজায়। 

তুমি তো অনাহূত নও। তবু দেখো, আমি তোমার থাকার আয়োজন না করে এমন নির্বোধ সেজে আছি, যেন তুমি ফিরে যাবে বিনা আপ্যায়নে। 

Subscribe to গদ্য কবিতা