মুক্তি
সময়
বউটার বিষম ব্যামো।
ডাক্তার বললে, কঠিন রোগ
তান্ত্রিক বললে, মা ক্ষেপেছে
জ্যোতিষী বললে, শনি এয়েচে
বন্ধু বললে, হুম বিপদ দেখি
শত্রু বললে, বেশ হয়েছে
স্বামী তাকালো রাতের আকাশে
মন বললে, সময় হয়েছে।
কিছু কথা
কিছু কথা ঝেড়ে ফেলা যাক
কিছু বিশ্বাসের কাছে আবার ফিরে যাই
কিছু নালিশকে বলি, যাও
পুরোনো পথে নিজের পায়ের ছাপ খুঁজে
কিছুটা পথ আবার হেঁটে আসি
ফাঁকিবাজ, মিথ্যুক
সারা জীবন যার সাথে ঝগড়া করে কাটল
আজ তার জন্য মুখে কুলুপ আঁটা।
তার ফটোর ফ্রেমে নিজের মুখ ভাসে
মনে মনে বলে, "ফাঁকিবাজ, মিথ্যুক"!
ছলছল
তারে জমেছে জল
সুর আসে না তাই
বাজাতে গেলেই সে
ভরা চোখে ছলছল
ধুর - দর্শন
ধারাবাহিক আর বিজ্ঞাপনের ধারাবাহিকতা। শোয়ার ঘর, বসার ঘর, মাথার ঘর ভর্তি। তাকিয়ায় ঠেসান দিয়ে, খাটে পা এলিয়ে, বসার ঘরে পা ঝুলিয়ে - শুয়ে-বসে বিভিন্ন কাল্পনিক, পরা-বাস্তব চরিত্ররা।
সত্যি খবরের মিথ্যা গল্প আর সাথে বিজ্ঞাপনের ধারাবাহিকতা। মাথায় ধোঁয়া, চায়ের কাপে ধোঁয়া, শৌচাগারে ধোঁয়া - উড়ে উড়ে চোখের জ্বালা ধরিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে। আবার আসছে নতুন ধোঁয়া।
কালাম সাহেব
ডঃ আব্দুল কালাম মহাশয়,
বাসা
আমার আছে আশা
সব চাওয়ার শেষে
নিজেতে মিলবে বাসা।
স্বীকারোক্তি
আমার হাঁটতে
শুধু দুটো পা না,
মাটিও লাগে
আমার কাজে
শুধু দুটো হাত না,
সংসারকেও লাগে
আমার শ্বাসে
শুধু ফুসফুস আর নাক না,
বাতাসও লাগে
আমার দেখতে
শুধু দুটো চোখ না,
আলোও লাগে
আমার বাঁচতে,
শুধু হৃৎপিণ্ড আর রক্ত না,
তোমাকেও লাগে
অপরিচিত
কিছু অনুভবের নাম দিও না
ঠিকানা চেয়ো না
জানতে চেয়ো না কি রঙ তার গালে
পড়তে চেয়ো না তার চোখের অবুঝ ভাষা
শুধু বুক পেতে দাও নরম ঘাসের মত
সে ফিরুক হেঁটে চলে
বসুক নির্জনে,
একটা বকুলগাছ লাগিও না হয়
মাঠের একটা কোণে, ওর জন্য।
একটু পরেই
হাতের কাজটা সামলে নিই
একটু পরেই আসছি
কতদিন ধরে শুনছি।
হাতের কাজটা সামলে নিই
একটু পরেই যাচ্ছি
কতদিন ধরে বলছি।
সামিয়ানা
নিজের খেয়ালের সামিয়ানা টাঙিয়ে
ওই যে ছেলেটা শুয়ে
আমিও ওর সাথেই ছিলাম
ওরই পাশে, ওর হাতেতে হাত রেখে।
ওর কোঁচড়ে এখনো আঁটির ভেঁপু?
এখনো ও মেঘেতে গল্প দেখে?
দিঘীর জলে টুপ করে কি পড়ে -
এখনো সে বুঝি অবাক হয়ে খোঁজে?
আমার ওর আজ বিস্তর ব্যবধান
তবু যেন সামিয়ানাটা ঘিরে
রাতের আকাশ এখনো ভিড় করে
কালের গতির উলটো স্রোতে ফিরে
তোমায় ছোঁব বলে
তোমায় ছোঁব বলে
অনেকটা পথ এলাম।
'উদভ্রান্ত' বললে কেউ
সচকিতে ভাবি,
'তবে কি হারিয়ে গেলাম'?
হয় নি তা -
এখন বুঝি,
আমি ছোঁয়ার বহু জন্ম আগে
তোমার ছোঁয়া ছুঁয়ে গেছে আমায়!
কৌতুক
জোকস পড়ে যতই হাসি পাক না কেন, ছোটোবেলার বন্ধুদের সাথে- সেই অকারণে, অসময়ে, ভুলভাল জায়গায় (তা স্কুলের প্রার্থনার লাইনই হোক, কি খুব কড়া স্যারের ক্লাসই) হাসতে হাসতে, তার চেয়েও বেশি, হাসি চাপতে চাপতে চোখের জলে, নাকের জলে হওয়ার অনুভূতিটার খুব অভাব বোধ করি।
অবসাদ
অবসাদ আছে
যায়, আবার ফিরে আসে।
কারণেই যে আসে - তা না,
অকারণেও আসে।
ওর উদাস দুটো চোখে চোখ রাখি।
জীবনকে দেখার এও তো দৃষ্টিকোণ -
অবসন্নতা।
আক্ষেপ
এত বড় জীবন, কটা আক্ষেপ থাকবে না, তাও কি হয়!
ছোটবেলায় যখন লুডো খেলতাম, তখন খেলার শেষে আক্ষেপ হত না? - ইস্, ছয় পড়ল না কেন? হায় রে এই গুটিটা না খেলে ওই গুটিটা খেললেই ভাল হত...এরকম আরকি। তা সামান্য লুডো খেলতেই যদি এত ক্ষোভ, তো এত বড় জীবনটা কি করে কটা নির্ভেজাল ক্ষোভ ছাড়া হয়!
ভাঙন
চলতে ফিরতে যদি এদিকে তাকাও
তাকিয়ো
আমিও তাকাব
বিনা অনুরোধে
বিনা যন্ত্রণায়
বিনা আশঙ্কায়
বিশ্বাস করব, তুমি ভাল আছো
বিশ্বস্ত থাকব, আমার ব্যাথার কাছে
যে বলেছিল, ওকে আর চেয়ো না
আমি আরেকটা ভাঙন নিতে পারব না।
পরিবর্তন
পরিবর্তন আর জীবন, এ দুটো সমার্থক শব্দ। এ কথা বহুশ্রুত। খাঁটি কথা, সন্দেহ নেই।
তাই
ঘন জঙ্গলে না,
তোমায় পেয়েছি
উত্তাল সাগরে
তাই সারা গা
নোনতা আমার
ভাগ্যের জোরে না
তোমায় পেয়েছি
ভাগ্যের সাথে লড়াই করে
তাই সব হাতের রেখা
রক্তাক্ত আমার
গাছটার গুঁড়িটায়
গাছটার গুঁড়িটায় একদিকে রোদ
একদিকে পিঁপড়ের সারি
আরেকদিকে শ্যাওলার ছোপ
ফেরা
ঘরের আলো নিভিয়ে
দরজায় তালা লাগিয়ে
বড় রাস্তায় এসে দাঁড়ালাম
যেতে যেতে মন ইতঃস্তত
আলোটা জ্বেলে আসাই কি ছিল ভাল
ফেরার পর কেমন হবে -
যদি ঘর-বার দুই-ই থাকে অন্ধকার?
আজ
সেদিন কেউ কেউ কাছে ডেকেছিল,
বেরোনোর দরজা পাইনি।
সেদিন থেকে হাতড়ে হাতড়ে পেলাম
একটা ছোট্ট সুড়ঙ্গ আজ
নিজেকে হেঁচড়ে হেঁচড়ে বাইরে আনলাম
কোথায় গেল ওরা,
যারা ডেকেছিল?
কৃতজ্ঞ
জ্যোৎস্নাকে পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে দেখেছি।
জানি না, কে কার কাছে কৃতজ্ঞ থাকে।
জ্যোৎস্না পৃথিবীর কাছে?
সে বুক পেতেছে বলে
না পৃথিবী জ্যোৎস্নার কাছে?
সে বুকে এসেছে বলে।
আমিও জানি না
কে বেশি কৃতজ্ঞ,
আমার 'আমি' না তোমার 'তুমি'?
যে ভাবে তুমি মিশেছ আমাতে।
শুধু জানি আমি ভয় পাই
কালো মেঘ আর গ্রহণের আড়ালকে।
পথ
পথ -
পূবে পশ্চিমে না
উত্তর দক্ষিণে না
পথ -
চলার তাগিদে
চলার দিকেতে না।
প্রভু
রথের দিন,
সাজো সাজো রব চারিদিকে।
কেউ গাঁথছে মালা, কেউ বাঁটছে চন্দন,
কেউ গাইছে ভজন, কেউ করছে নর্তন।
মালীর ছোট মেয়ে,
বছর আটেক হবে
বলে, নিজের গাঁথা মালাখানি
প্রভুর গলায় দেবে।
বাড়ির লোক কত বোঝায়
আরে আমরা যে জাত নীচু
বোঝায় যত বাড়ে জেদ
বলে শুনব না তো কিছু!
একলা আনমনে
একটানা বৃষ্টির আওয়াজ
বাইরের দরজায় খিল দিয়ে
মন মেঝেতে অ্যালবাম ছড়িয়ে বসে,
হাসে, কাঁদে, উদাস হয় আনমনে।
বৃষ্টি তার সব কথাই জানে।
ছাদের উপর
পাতার উপর
টুপ টাপ যেই পড়ে
সে যেন তার ছোটবেলার হাত, আনে
বুড়োবেলায় খেলতে যাওয়ার ডাক,
অবশ্যই মনে মনে।
শুনেছি কি?
মনকে বলেছি, ভেবো না
চোখকে বলেছি, চেয়ো না
হৃদয়কে বলেছি, শান্ত হও
সময়কে বলেছি, বয়ে চলো
বৃষ্টিকে বলেছি, ঝরে চলো
রক্তকে বলেছি, ছুটে চলো
ওরা শুনেছে হয় তো
আমি শুনেছি কি ?
ভিজে পায়ের ছাপ
এখানে খুব বৃষ্টি হচ্ছে জানো
তোমার ওখানে?
তোমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজেছি
সারা সকাল
তোমায় না বলে।
উপমা
এখনো জীবন বিজ্ঞান বইগুলোতে লেখা থাকে, মাছের দেহ কেমন? না, মাকুর মত।
বোঝো, এ যুগের কটা ছেলেমেয়ে মাকু দেখেছে, যে চিনবে। তখন বাধ্য হয়ে বলতে হয়, মাকু ওই মাছের দেহের মতই আর কি।
নাও, কে কার উপমা হয়!
বিশ্বাস
বিশ্বাস করেছি, ঠকেছি। ফের বিশ্বাস করেছি, আবার ঠকেছি। কারণ -কখনো আমার নির্বুদ্ধিতা অথবা কখনো অন্যের সুনিপুণ অভিনয় ক্ষমতা।
সন্দেহ করে কি হবে? কাকে, কখন, কোন ক্ষেত্রে, কতটা সন্দেহ করতে হবে - এ কি খুব সহজ হিসাব? আর সব হিসাব মিললও বা যদি, তাও যে ঠকব না তার কি নিশ্চয়তা আছে?
অনেকবার শূন্য থেকে শুরু করতে হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে।
দৃষ্টি
ঘুরে ফিরি
তোমার মুখের দিকে চাই
তুমিও চাও
বুঝি, তুমি চেয়েই থাকো -
তা জেনে
প্রাণে নিবিড় শান্তি খুঁজে পাই।
আবার ফিরি সংসারেতে
আবার কাজে জড়াই
ভয় নেই তো
পড়ি যদি, ধরবে তো গো-
তোমার দু'হাত বই
আমার, আর যে কিছু নাই।
ফিরো না আমার সাথে
আমার সাথে ফিরো না
কি হবে হেঁটে?
আমি তো বাজারে যাব না।
আমার কেনার মত কিছু নেই,
পাওয়ার মত একটা কিছু আছে অবশ্য,
নিজেকে।
আলো জ্বালো
শুধু বাইরে না,
হারায় মানুষ ভিতরেও।
খুঁজবে কি করে?
সে ভাবেই খোঁজো,
যে ভাবে খোঁজো বাইরে,
আলো জ্বেলে।
আলো জ্বালবে কি করে?
বিশ্বাসে।
যুক্তির নুড়ি
বিশ্বাসের আকাশকে ছোঁয় না।
হাত
হাতটা ছেড়ে দাও,
হয়তো হাতটা ধরতে গিয়ে
অজান্তেই বেঁধে ফেলেছো,
হাতের চাপে।
এবার ছেড়ে দাও,
হাতের স্পর্শের সুখ
হাতের মোচড় হওয়ার
দুঃস্বপ্নের আগে।
PTO
প্রতিটা সমস্যার নীচে
ছোট্ট করে লিখে রাখি
PTO
প্রতিটা ভালো মুহুর্তের নীচে
বড় করে লিখে রাখি
PTO
পাতা উল্টে চলি,
ক্ষোভ
ক্ষোভ এই জন্য না, যে পাইনি
পেয়েছি যোগ্যতার চেয়ে অনেক বেশি।
ক্ষোভ এই জন্য যে, দিতে পারিনি
যতটা দিতে চেয়েছিলাম।
আমার ছোট হাতে যতটুকু কুলিয়েছে
তা তোমার মান রাখেনি
ছুঁতে পারেনি তোমার তৃপ্তির সব চাইতে নীচের রেখাটাও।
গ্রীল
ঘুম থেকে উঠে রোজ গ্রীলের পাশে আসেন।
ভোরের আকাশ তখন সূর্যোদয়ের অভ্যর্থনায় ব্যস্ত।
তিনি মনে মনে বলেন, আমিও আছি।
অবশেষে
অবশেষে রোদ উঠল
সূর্যকিরণ ভরা মাঠের জলে
সাঁতরে এসে ঘাসকে ছুঁলো
Not Two
Your presence, becomes
independent of my body
independent of my life
independent of my mind
Our existence remains indifferent,
entity remains one.
(Bengali Version: দুই না)
[Translated By: Subhajit Roy]
Situations and We
Dolts never cope up with any changing situations.
Clever always change themselves easily with changing situations.
Fragrance
Opened window :
your fragrance come with breezes.
Closed window :
my odor suffocates
(Bengali Version: বিন্দু ৮)
[Translated By: Subhajit Roy]
Someone
Someone is playing
but only in front.
Someone is not playing
but gaming from behind
(Bengali Version: বিন্দু ১৩)
[Translated By: Subhajit Roy]
Your vision
Your vision
enlighten my darkness.
Your vivacity
rives my obstacle.
(Bengali Version: বিন্দু ৬)
[Translated By: Subhajit Roy]
Then
I could feel,
when you come
I know,
when you would say, "bye".
But never felt your presence
Do you know,
where I was then?
(Bengali Version: তখন)
[Translated By: Subhajit Roy]
Dot
In your unheard words
confines my silent cry
In your undiscovered presence
lies my unattended haven.
(Bengali Version: বিন্দু ১)
[Translated By: Subhajit Roy]
কিছু বলার নেই
তোমায় কিছু বলার নেই আমার
কোনো অঙ্গীকার করানোর নেই
কোনো অভিমান, কোনো অভিযোগ নেই
সব বোঝো তুমি
সব জানো।
অসঙ্গ
হৃদয়ে নিঃসঙ্গ হও
কিছুক্ষণের জন্য অন্তত।
তার সঙ্গ পাবে
যে অনেক গভীরে থাকে,
অসঙ্গ।
দমকা হাওয়া
দমকা হাওয়া
ঝড়ের বেগে ভিতরে ঢুকল,
উল্টালো, লন্ডভন্ড হল
যা কিছু ছিল
সাজানো গোছানো।
অথচ, দরজাটা ভেজানোই ছিল
সে জানত না।
এখন আমরা দু'জনেই অপ্রস্তত।
প্রণাম
অনেকদিন প্রণাম করিনি
না নীচু হয়ে হয়ে কোমরটা এমন শক্ত হয়েছে -
কার সাধ্যি তাকে নীচু করে!
মাথাটা ঘাড়ের উপর সোজা রাখতে রাখতে
ভুলেই গেছি
কিছু জায়গায় মাথা না নীচু করলে
মাথাটা ভারী হয় বড্ড
জগদ্দল পাথরের মত,
ঘাড়ে ব্যাথা করে
অহংকারের গাঁটগুলো টাটায়।
তাগিদ
সারাটা দিন ধরে
বেঁচে থাকার তাগিদ বানাচ্ছিলাম
খুঁজছিলাম না, অত রসদ নেই।
বানাতে বানাতে
কিছু পুরোনো আলপিনে পড়েছে
অন্যমনস্ক হাতের আঙুল।
পিনগুলো সরাতে সরাতে
আরো কিছু আঙুল হল ক্ষত-বিক্ষত।
ওদের সরাবো আজ সারাদিন,
আঙুল না সারলেও।
এটাই হোক, আমার আজকের বাঁচার তাগিদ।
কাঁটা
বুকের ভিতর কাঁটা বিঁধে আছে
তুলতেই পারি জোর করে
রাখব কোথায়? ফেলব কোথায়?
ফের যদি বেঁধে কারো বুক চিরে?
অবিশ্বাসী
খানিক তাকাও অবিশ্বাসী।
সন্ধ্যের পর রাস্তার ধূলো পথে
কে যায়?
গভীর রাতে
ঝিঁঝিঁর ডাকে
পাতার অঙ্গুলিহেলনে
জোনাকির আলোয়
নদীর বাঁধানো ঘাটে জল আছড়ানো শব্দে
কোনো বাচ্চার আর্তনাদে
চমকে উঠেছো কখনো?
পাঠ
নিস্পাপ দুটো চোখ
পূর্ণ বিশ্বাসে যখন আমার মুখের দিকে তাকায়,
কুন্ঠিত হই মনে মনে।
এ বিশ্বাসের যোগ্য কি আমি?
তার সরল শৈশব, কৈশোরের কাছে
অসহায় আমার জটিল মনের ভাঁজ।
যে শুদ্ধতা ধর্মগ্রন্থের পাতা পারে নি শেখাতে,
সে শুদ্ধতার পাঠ, ওই দুটো চোখে
ওই সরল, নিস্পাপ, বিশ্বস্ত দুটো চোখে।
আরো জোরে
বেঁচে থাকাটা
যার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে
প্রতিদিন একটু একটু করে
দোহাই একটু জোরে পা চালাও
ওর পাশে পৌঁছাতে হবে আজই
আর বেশি দেরি না করে।
যার দীর্ঘশ্বাসে বালিশ বিছানা পুড়ছে
এমনি কি ঘরের ছাদেও যার পোড়ার দাগ
দোহাই ভাই, আরেকটু জোরে ছোটো
ওর শেষ নিশ্বাস বেরোবার আগেই
ওর বুকে রাখতে হবে হাত।
স্বর্গ-মর্ত্য
তোমার হাতে শালগ্রামশিলা?
আমার হাতে ঘাস
তোমার হাতে কোরাণ না গীতা?
আমার হাতে বাতাস
তোমার হাতে জপের মালা?
আমার হাতে জল
তোমার চোখে স্বর্গের ছবি?
আমার চোখে মাটি
তোমার পা শুদ্ধ শুকনো
আমার পা কাদায় ভিজে
তুমি চলেছ অমৃতের পথে
আমি চলেছি ক্ষেতে
তোমার অপেক্ষায় ভগবান
আমার অপেক্ষায় মানুষ
তখন
তোমার আসার আগে বুঝতে পারি,
তুমি আসছো
তুমি যাওয়ার আগে বুঝতে পারি,
এবার বলবে, আসি
শুধু বুঝি না মাঝের সময়টা-
তখন আমি কোথায় থাকি?
তেষ্টা
জল ঝরছে বিন্দু বিন্দু
সারা আকাশটার প্রতিবিম্ব তার গায়ে
মাটির বুকে মিলিয়ে যাচ্ছে
এক মহাকাশ তেষ্টা মেটানোর দায়ে।
যদি না
তুমি আমার গায়ের রঙ, চুলের রঙ
জানতে পারো
আমার উচ্চতা, বুকের গঠন
বোধন
শুনিলাম কোনো বিজ্ঞানী
স্থির সিদ্ধান্তে আসিয়াছেন
সর্ব সমক্ষে ঘোষিয়াছেন-
ঈশ্বর নাই
আম জনতা দলে দলে
তাহারি পদতলে আসিতেছে
বলিতেছে গদগদ ভাষে-
হেন সত্য উদঘাটিলে
তবে তুমি তাই!
তুমি গেছ
তুমি গেছ
তবু মনে হয় ফেরার জন্যই গেছ-
আমায় ছাডা থাকবে কি করে,
আমার ঘরে বাইরে উতলা মন।
আঘাত
সব আঘাত ভুলতেই তো চাই।
তবে কিছু আঘাত
ভুলতে চাই না,
এমনকি পরজন্মেও না।
কিছু সুরের আঘাত-
সে হোক না মোহরদি
কিম্বা মেহেদি হাসান
বিসমিল্লাহ্ কিম্বা রবিশঙ্কর
অথবা খোদার কণ্ঠস্বর- আমির খান
সেই আঘাতেই তো বেঁচে আছি
পারের কড়ি অলিন্দে লুকিয়ে।