দিগন্তরেখায়
তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে
সমুদ্রকে পিছনে রেখে দাঁড়িয়ে আছি
বহু শতাব্দী ধরে
পায়ের শিরা ফেটে রক্ত পড়েছে বালিতে
ধুয়ে নিয়ে গেছে সমুদ্রে
মুক্ত এসেছে ঝিনুকের খামে
ফিরিয়ে দিয়েছি
শুধু তাকিয়ে থেকেছি তোমার চোখে
সে আছে বলে
ছল
ভেবেছিলাম তোমায় আমি দেব
আমার যা কিছু সব উজাড় করে
দিলাম তোমায় এমন কিছু
ভাবিও নি যা দিতে পারি
গর্বে মেতে ঘরে ফিরি
এমন দান পাও নি জীবন ভরে!
ঘরে এসে চমকে উঠি
সারা ঘরে একতিলও নেই স্থান
রাখি পায়ের পাতা
সবখানেতে তোমারই দানে ভরে!
তৈরী তো?
কে যেন বলে
বেশ জোরের সাথে বলে
আত্ম-বিশ্বাসের সাথে বলে
আমার কানে কানে বলে
তৈরী তো?
জানি
রাস্তাটা শেষ হবে আরেকটুখানি এগোলে, জানি
তবু হাঁটছি
তোমার হাতটা আরেকটু পরেই ছেড়ে যাবে, জানি
তবু আঙুলে আঙুল রাখছি
তোমায় বাঁধিনি আমি, নিজেকে বেঁধেছি, জানি
তবু কোথাও একটা বাঁধন খুঁজছি
আমার জীবন 'তবু' তে আটকে জানি
তবু চলার পথে 'কিন্তু' কে দূরে রাখছি
ধূলোর মত যারা
সবাইকেই একই রকম দেখতে
রিকশাওয়ালা, মিস্ত্রী, সব্জীওয়ালা
এরকম আরো অনেকের মুখগুলো
আলাদা করে চিনতে পারি না
তাকানো হয় না কখনো ভাল করে
লুঙ্গি পরা, কালো গায়ে গেঞ্জি অথবা জামায়
সবাই একই রকম
আমার মানিব্যাগের সাথেই সম্পর্ক ওদের
জখম
তোমার পাশে বসার জন্য
কত চেষ্টা করলাম।
জানতাম না-
পাশে তোমার অন্য কেউ তখন,
এখন ইরেজারে মুছতে মুছতে
খাতার পাতাই জখম।
এড়িয়ে
সব খারাপ কথার উত্তর দেওয়ার দরকার নেই। যখন কেউ বলছে, তখন তার দিকে না তাকিয়ে জানলা দিয়ে বাইরে চলে যাও। কান থাকুক কানে। মন থাকুক চোখের সাথে বাইরে- খেলুক, ঘুরুক, দেখুক, ছুটুক। তারপর ফিরে এসে দেখবে, যে বলছিল সে নেই। ব্যস হয়ে গেল।
কঠিন একটু। বাইরে যাওয়াটা না, যেতে চাওয়াটা। মনে হয় আমিও বলি। যেই বললে, অমনি ফাঁদে পা দিয়ে দিলে। আর ওড়া হল না।
স্বার্থপর
যে গাছটা জল না পেয়ে শুকিয়ে গেল
সে গাছটার তলায় রোজ দাঁড়াই
আজও দাঁড়িয়ে
শিকড়ের কথা ভুলে
গাছটার ডাল ফুল ফল পাতা খুঁজছি
মনে হয় ওরা আসছে
অশ্রুত শিকড়ের দীর্ঘশ্বাস
আমায় ছোঁয় না।
আগুন
বুকের ভিতর যে আগুন
তা নিভতে দিও না
দেখেছি যে ভিতরে পোড়ে
সে বাইরে পোড়ে না