ফাঁকি
ফাঁকি দিয়েছি। পড়াশোনা, বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদির লম্বা লাইন। এ সবেতেই ফাঁকি দিয়েছি কম বেশি। সময়, দায়িত্ব, কর্তব্যতেও ফাঁকি আছে।
তাই আমায় কেউ ফাঁকি দিলে রাগ হয় না, হাসি পায়। মনে মনে বলি, এ কৌশল আমিও জানি।
যার জন্য
সারা বিশ্বে একজনই আছে
যার বুকে মাথা রাখলে ঘুম আসে
সে তুমি
সারাদিন ঘুরে ঘুরে, ক্লান্ত হয়ে
যার জন্য ফিরে কলিং বেলের সুইচে হাত রাখি
সে তুমি
"আপন দুটি চরণ ঢাকো"
প্রত্যক্ষ চাপ তো জীবনে আছেই। আরেকটা আছে পরোক্ষ চাপ। যখনই আমি কারোর নিন্দা করছি, বা সমালোচনা করছি, তখনই আমার মনে একটা ক্ষোভ, বিদ্বেষ, বিরূপতা তৈরী হচ্ছে। সেটা আমার মনের পক্ষে অতিরিক্ত চাপ।
তার চেয়ে থাক। 'আমি কারোর স্বভাব শুধরাতে পারি না' এই সহজ সিদ্ধান্তটা মেনে নিলেই হল।
ঈশ্বরকে বলব
আমি ঈশ্বরকে বলব
আমায় স্বর্গে না রাখতে
বলব, তোমার চোখের পাতাগুলোর
একটা পাতায় রাখতে
"সে থাকে না, থাকে বাঁধন"
আমার ধরা ছোঁয়ার জগতে যখন তোমায় চাই, তখন তোমার সাথে সাথে নিজেকেও বেঁধে ফেলি সীমায়। সে সীমা নিরাপদ বটে, তবে সে সীমাতে গর্বেরও কিছু নেই। আমার মাথার ওপর যে নীলাকাশ, সে তো আমার প্রয়োজনের বস্তু না, সে আমার মুক্তি! সারাদিন সংসারে জোয়াল বাধা ঘূর্ণিতে, একটু ফাঁক পেলেই চোখ যায় ঐ দূরের নীলাকাশটায়। তখন সে দূর কই?
হাত
পথ হারালাম।
ভাবলাম, চলতে হবে বাকিটা পথ একা।
হারানো পথ
কাঁধে রাখল হাত
বলল-
আমি চলব পাশে পাশে
হবে কি আর একা?
"হাতের নাগালে পেয়েছি সবারে নীচুতে"
সেই কবে থেকে কিছু জিনিস জোগাড় করতে শুরু করেছিলাম। কয়েকটা জিনিস বানাতেই হবে এমন সাধ ছিল। একটা অট্টালিকা, একটা ওই উঁচুতে - যেখানে দেবা-দেবীরা থাকেন, সেখানে ওঠার সিঁড়ি, আর বিশাল একটা সেতু।
দুই-ই
কারোর না আসার অজুহাত
কারোর যে কোনো ভাবে আসার ছুতো
দুইই দেখেছি
কারোর চোখে পাশে বসেও অস্থিরতা গোপনের চেষ্টা
কারোর গলায় দূরে থেকে কাছে না থাকার যন্ত্রণা লুকাবার অভিনয়
দুইই জেনেছি
কারোর মনে পড়েও ভুলে থাকার চেষ্টা
কারোর ভুলে গিয়েও মনে পড়ানোর অভ্যাস
দুইই বুঝেছি
এমন কেন করেন
ছোঁয়াছুঁয়ি
অনেকক্ষণ ছোঁয়াছুঁয়ি খেলার পর বুঝলাম
ও আমায় ধরতে চাইছিল না,
আমায় দৌড় করাতে চাইছিল।
না হলে খেলাটা থেমে যেত বহুক্ষণ আগেই।
ও, না ধরা দিল
না ধরে রাখল
এতগুলো বছর শুধু খেলার ঘুঁটি হয়ে কাটলো