উইয়ের দাগ
ইঁট বেরোনো বারান্দায়
হাড় বেরোনো মানুষটা
বেতের চেয়ারে বসে।
চেয়ারের নীচে ঘুণের শব্দ
দেওয়াল জুড়ে উইয়ের দাগ।
বোসো
রোদ পড়ছে সবুজ পাতায়
সবুজ পাতা রোদকে বলল-
এসো।
বিছে
ঘর মোছার ন্যাতার নীচে একটা বিছে থাকে। বাড়ির বৌটা জানে আর কাজের মেয়েটা জানে। কেউ কাউকে বলেনি কোনোদিন। তবু দু'জনেই জানে যে তারা জানে। সাবধানে হাত দেয়। ঘাঁটায় না। কারণ ন্যাতাটা ছাড়া ঘরের কাজ হবে না। ঘরের কাজ না হলে, ঘরে থাকার অধিকারও থাকবে না।
কেউ খেলছে
কেউ খেলছে
তবু খেলছে না
কেউ খেলছে না
তবু খেলছে
চোখের কোণায়
চোখে জল আসেনি এখনো।
তবে আসত।
চোখ বোঝার আগে,
তুমি বুঝলে কি করে?
সে জল তোমার চোখের কোণায়
মাটি
রজনীগন্ধার দিকে গোলাপ চেয়ে বলল,
আমার কই অমন সৌরভ?
গোলাপের মুখে চেয়ে রজনীগন্ধা দীর্ঘশ্বাস ফেলল-
আমার কই অমন রঙ?
ঘাস দুজনের কথা শুনে নিজের দিকে তাকাল, হাসল, বলল-
ভাই আমার না আছে রঙ, না আছে বাস
আমার আছে যা, তা তোমাদেরও তো আছে
যা সব চাইতে খাঁটি-
গোলাপ সাথে রজনীগন্ধা বলল-
কি?
ঘাসের দল সমস্বরে বলল-
মাটি মাটি মাটি....
এ হৃদয়
এ হৃদয় বারোয়ারী আজ
কোথায় কখন কার খোঁজে থাকে
খেয়াল রাখি না আর
ওর কান্না হাসি আশা হতাশা খুব চেনা আমার
বিশ্বাস করে ঠকে যাওয়া
বিশ্বাস না রাখতে পারা
এগুলো জলভাত এখন আমার কাছে
এমনিই ভালোবেসে
একটা ছোট্ট ঘাস
রাস্তার ধার ঘেঁসে
চাকার, পায়ের ধূলো
তাকে ঢেকেছে একশেষে।
হঠাৎ একবিন্দু জল
আকাশ থেকে এসে
ধুইয়ে দিয়ে গেল তাকে
এমনিই ভালোবেসে।
মা
একটা বাচ্চা পার্কের স্লিপে
উঠছে হাসছে নামছে
মা দাঁড়িয়ে দেখছে।
স্লিপের নীচে মা কুকুরটা
বাচ্চাগুলো নিয়ে ঘুমোচ্ছে।
বিশ্বাসহীন
বিশ্বাসহীন উদ্বাস্তু একটা মানুষ
সকাল থেকে চৌকাঠে দাঁড়িয়ে
ওর বাইরে যেতে ভয়
ওর ভিতরে থাকতে সংশয়।