আরো জোরে
বেঁচে থাকাটা
যার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে
প্রতিদিন একটু একটু করে
দোহাই একটু জোরে পা চালাও
ওর পাশে পৌঁছাতে হবে আজই
আর বেশি দেরি না করে।
যার দীর্ঘশ্বাসে বালিশ বিছানা পুড়ছে
এমনি কি ঘরের ছাদেও যার পোড়ার দাগ
দোহাই ভাই, আরেকটু জোরে ছোটো
ওর শেষ নিশ্বাস বেরোবার আগেই
ওর বুকে রাখতে হবে হাত।
স্বর্গ-মর্ত্য
তোমার হাতে শালগ্রামশিলা?
আমার হাতে ঘাস
তোমার হাতে কোরাণ না গীতা?
আমার হাতে বাতাস
তোমার হাতে জপের মালা?
আমার হাতে জল
তোমার চোখে স্বর্গের ছবি?
আমার চোখে মাটি
তোমার পা শুদ্ধ শুকনো
আমার পা কাদায় ভিজে
তুমি চলেছ অমৃতের পথে
আমি চলেছি ক্ষেতে
তোমার অপেক্ষায় ভগবান
আমার অপেক্ষায় মানুষ
তখন
তোমার আসার আগে বুঝতে পারি,
তুমি আসছো
তুমি যাওয়ার আগে বুঝতে পারি,
এবার বলবে, আসি
শুধু বুঝি না মাঝের সময়টা-
তখন আমি কোথায় থাকি?
তেষ্টা
জল ঝরছে বিন্দু বিন্দু
সারা আকাশটার প্রতিবিম্ব তার গায়ে
মাটির বুকে মিলিয়ে যাচ্ছে
এক মহাকাশ তেষ্টা মেটানোর দায়ে।
যদি না
তুমি আমার গায়ের রঙ, চুলের রঙ
জানতে পারো
আমার উচ্চতা, বুকের গঠন
বোধন
শুনিলাম কোনো বিজ্ঞানী
স্থির সিদ্ধান্তে আসিয়াছেন
সর্ব সমক্ষে ঘোষিয়াছেন-
ঈশ্বর নাই
আম জনতা দলে দলে
তাহারি পদতলে আসিতেছে
বলিতেছে গদগদ ভাষে-
হেন সত্য উদঘাটিলে
তবে তুমি তাই!
তুমি গেছ
তুমি গেছ
তবু মনে হয় ফেরার জন্যই গেছ-
আমায় ছাডা থাকবে কি করে,
আমার ঘরে বাইরে উতলা মন।
আঘাত
সব আঘাত ভুলতেই তো চাই।
তবে কিছু আঘাত
ভুলতে চাই না,
এমনকি পরজন্মেও না।
কিছু সুরের আঘাত-
সে হোক না মোহরদি
কিম্বা মেহেদি হাসান
বিসমিল্লাহ্ কিম্বা রবিশঙ্কর
অথবা খোদার কণ্ঠস্বর- আমির খান
সেই আঘাতেই তো বেঁচে আছি
পারের কড়ি অলিন্দে লুকিয়ে।
ঋণ
স্বামী আমায় ভীষণ ভালোবাসতো
হ্যাঁ ভালোবাসতোই বলছি-
মারা গেছে?
বালাই ষাট! মরবে কেন?
আছে বেঁচে বর্ত্তে
শুধু নুন দিয়েছি তার ভালোবাসার মুখে।
কাঁপন
নীল আকাশকে পিছনে রেখে
নারকেল পাতার দল
কাঁপছে বাতাসে থরথরিয়ে।
একটা কাঠবেড়ালির লাফ
পাতার সাথে আকাশে ধরালো কাঁপন।