ক্ষ্যাপা তুই কি রাস্তা গুলিয়েছিস?
এদিক ওদিক ঝোপঝাড়ের মধ্যে
      কি মাতাল করা ফুল ফুটিয়েছিস?

জানিস না, আমার বাঁধানো পথ?
জানিস না, আমার পাকা দেওয়াল?
জানিস না, আমি কাজের মানুষ?

কারোর কারোর মিথ্যা বলতে
তেমন কোনো কারণ লাগে না
সন্তর্পণে খোঁজে চোরাগোপ্তা গলি
সোজা রাস্তায় হাঁটার অসুবিধা না থাকলেও

কারোর কারোর দু'দিক সামলানো গোঁজামিলে
পুলটিস দিতে দিতে চুল পেকে যায়
কোন্ নৌকায় যে বেশি সুখ অথবা ফুটো
না বুঝে দু'নৌকায় দেয় বেসামাল লোভী পা

যে জানে
  সে শুধুই খুঁজে ফেরে জানাকে
যে বিশ্বাস করে
  সে-ই আবিষ্কার করে নতুনকে

ছেলেটা হোয়াটস অ্যাপ থেকে চোখ তুলে স্টেশানে তাকালো। অফিস থেকে ফেরার সময় রোজ এই সময়টা তার ওর সাথে কথা হয় ঘন্টাখানেক। মানে শিয়ালদহ থেকে পৌঁছাতে যতটা সময় লাগে আর কি।
স্টেশানের অন্ধকারে আলোতে তার নিজেকে দাঁড়ানো মনে হয়। আর কিছুটা দূরে ওকে। ওকে মানে, যে এখন ন'বছর হল তার স্ত্রী। প্রেমিকা ছিল চার বছর।

তুমি ডুবসাঁতার জানো?
পানকৌড়ির মত ডুব দাও
যেন গাছের ছায়াগুলোও জানতে না পারে
জলের বুকে ঢেউ না ওঠে দেখো
  এ পাড়া ও পাড়া খবর যাবে

এ পারে এসো আমার বুকে মিশে
 আমি গাছের ছায়ায় লুকিয়ে আছি
  কালোর সাথে মিশে
        আলোতে চোখ রেখে

বন্ধ দরজা। স্বপ্নগুলো পায়চারি করছে। দরজার ওপাশে আলো। দরজার এপাশে জায়গা কম। স্বপ্নগুলোর ধাক্কাধাক্কিতে মাথায় ফেট্টি।

লোকটা পানশালায় বসে, ফাটা মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে, স্বপ্নগুলোকে স্বপ্ন দেখিয়ে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে।
সময় সারাটা দেওয়াল জুড়ে টিকটিকিগুলোর সাথে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলে।

কানায় কানায় পাত্রটা উঠেছে ভরে
   উপুড় করে নেবে কবে?

বৃষ্টি শেষে বাড়ি ফিরে গেছে ছেঁড়া মেঘ
        নীলাকাশে ডুবিয়ে নেবে কবে?

সব খেলাঘর ছেড়ে এসেছি
   কোণের প্রদীপ নিভিয়ে নেবে কবে?

অফিস থেকে ফিরে লোকটা তার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আদর করতে লাগল। মুখে নানা অর্থহীন শব্দমালা। বাচ্চাটা কোলে খিলখিল করে হেসে উঠতে লাগল।
পাশের ঘর থেকে লোকটার বাবা শব্দগুলো শুনছিলেন। চশমাটা খুলে বিছানায় রেখে, খবরের কাগজটা পাশে মুড়ে, বালিশে হেলান দিয়ে আধা শুলেন। চোখ বোজা।

কালের আগুনে পুড়ছি সবাই
  আমি তুমি সে
পুড়তে পুড়তে হচ্ছি ক্ষয়
    প্রতিদিন একটু করে রোজ

ভাষারা সঙ্কেত জানায় যে চোখে
সে সঙ্কেতগুলো সারাটা মুখে ছড়িয়ে
তোমার বুক থেকে হাত বাড়াও
সে ভাষাকে তুমি পাবে হাতের মুঠোয়