Skip to main content

মেঘ আর ঠাকুমার গল্প

আচ্ছা, আমি কুসুম ঠাকুমার গল্প কি বলব? একটা দরমার বেড়া দেওয়া ঘর। ছাদ বলতে টালি। টালির কয়েকটা আবার ভাঙা। একটা জানলা মাঠের দিকে। একটা জানলা রাস্তার দিকে। ঘরের দক্ষিণ দিকে একটা খাট। খাটের উপর একটা পাতলা তোষক। একটা তেলচিটে মাথার বালিশ। খাটের পাশে একটা কুঁজো। তার মাথায় টুপির মত রাখা একটা স্টিলের গ্লাস। দেওয়ালে ঝুলছে চার বছরের আগের একটা ক্যালেন্ডার। কৃষ্ণের ছবি, ভুল বললাম, গোপালের মাখন খাওয়ার ছবি আছে বলে ঠাকুমা ফেলেনি। একটা আলনা উত্তর দিকে রাখা। কয়েকটা সাদা শাড়ি। গামছা। বিছানার চাদর দুটো। বাড়ির সামনে একটা ছোটো ঘর। ঠাকুমার ছাগলগুলো থাকে। দুটো বড় ছাগল। তিনটে বাচ্চা ছাগল। ঠাকুমা দু’বেলা ছাগল চরাতে মাঠে যায়। শাকপাতা যা পায় নিয়ে আসে। বেলায় একবাড়ি বাসন মাজে, কাপড় কাচে। এইতেই চলে যায়।

জীবন মরণের সীমানা ছাড়িয়ে

এপিকটেটাস খুব বড় একজন দার্শনিক ছিলেন। খুব কঠিন জীবন ছিল। এক ধনীর বাড়ি দাসত্ব করতেন। মালিকের খুব সুনজরে ছিলেন না। এত মার খেতেন, এত মার খেতেন যে অনেকে বলেন তিনি নাকি প্রায় পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলেন। ওনার সম্বন্ধে এই কথাটা শুনেই আমার আমাদের অষ্টাবক্র মুনির কথা মনে পড়ে। তারও দেহের আকার নাকি এমনই ছিল। সবাই তো রাম ঠাকুর বা রামপ্রসাদের মালিকের মত মালিক পান না, যারা গুণের কদর করে তাদের মান দিয়ে মুক্তি দেবেন, অগত্যা এপেক্টেটাসও পাননি।

মেনে নিতে হয়

হাতে রিমোট 

একটা টিপলে IPL
একটা টিপলে রিয়েলিটি শো
একটা টিপলে সিরিয়াল
একটা টিপলে সিনেমা

একটা টিপলে
মৃত্যু মিছিল
হাহাকার 

নাছোড়বান্দা 
    না নিভন্ত চুল্লী

মেটে, না হৃদয়?

এতটা কোনোদিন আসে না। আজ কি খেয়াল হল কে জানে? কিছু ভাবছিল কিনা নিজেও মনে করতে পারল না। আর মনে করেই বা কি হবে? ভাবনা তো ভাবনাই। নদীর মত। বয়েই যাচ্ছে। বয়েই যাচ্ছে। ওহ...

মন

মন কোথায় রাখব? স্বস্তি নেই মনে। দু বছর আগে যে জীবনটা মনে হত একঘেয়ে, তেমন কিছু কেন হচ্ছে না। আজ সেই জীবনটার চাইতে কাঙ্ক্ষিত আর কিছু নেই। সেই সাদামাটা জীবনটাই চাই। দরকার নেই কোনো বিশেষ অভিজ্ঞতার। দরকার নেই নিত্য জীবনের বাইরে কোনো অসাধারণ জীবনের। প্রাণ গলায় এসে ঠেকছে। রাতের ঘুম বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চেনা অচেনা সব মানুষের সঙ্গে যে এত কাছাকাছি রকমের বাঁধা আছি সেটা এত স্পষ্ট করে বুঝতে পারিনি আগে। এত এত মর্মান্তিক ছবি ছাপা হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেগুলোর মুখোমুখি কিভাবে হব? শুধু আতঙ্ক তো নয়। অসহায়তায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। জীবিকার জন্য কাজটুকু করেই হোয়াটস অ্যাপে, মেসেজে, ফোনে বসে পড়ছি চেনা অসুস্থ মানুষজনদের খোঁজ নিতে। আজ কেমন আছেন? কোনো মানুষ বাড়ি ফিরে গেছেন শুনে আনন্দে চোখে জল আসছে। তেমনই কেউ চলে গেছেন শুনে হেরে যাওয়া বিষণ্ণতায় আবার কুঁকড়ে যাচ্ছি।

দেশ ভগবানের ভরসায় চলছে

আজ হাইকোর্ট বলেছে বর্তমানে দেশ ভগবানের ভরসায় চলছে। অবশ্যই কোর্টের বিচারকদের দিব্যজ্ঞান হয়নি যে তারা এ কথা বলছেন। তারা এ কথা বলছেন চরম আক্ষেপের সঙ্গে, এ বলার অপেক্ষা রাখে না। 

    আসলে শুধু নেতার দোষ না। যেদিন অত বিশাল মূর্তি বসল, যেদিন অত কোটি টাকা দিয়ে মন্দিরের প্রকল্প হল, সেদিন আমরা একজোট হয়ে বলতে পারিনি, এই টাকাগুলো আগে আমাদের স্বাস্থ্যের খাতে খরচ হোক। গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো উন্নত হোক। সরকারি হাস্পাতালেগুলোতে চিকিৎসার সঠিক সরঞ্জাম আসুক। না, এগুলো

বই দিবস

আজ বই দিবস। আগের বছরও ছিল। সামনের বছরও হবে। আগের বছর অনেক মানুষ চলে গেছেন। এ বছরও অনেক অনেক মানুষ চলে যাচ্ছেন। অক্সিজেন, ইনজেকশন পাওয়া যাচ্ছে না। বইতে অক্সিজেন বানানোর পদ্ধতি লেখা আছে। বইতে ওষুধ বানানোর পদ্ধতিও লেখা আছে। এও পড়ানো হয়, demand and supply theory মানে কি। এ সব তত্ত্ব বইতে লেখা আছে। কিন্তু এখন কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। 

কতবার

দরজায় এসে দাঁড়াবে
আমি চিনতে পারব 

এইটুকু তো কথা
এইটুকু তো আশা

তবু তারই মধ্যে 

কতবার মৃত্যুর যাতায়াত 
উঠতে হল কতবার
কত ভুল মানুষের জন্য

ঘুম

যারা ভোট দিতে গেল
যারা ভোট দিয়ে ফিরল
যারা ভোট করালো
আর যারা পাহারা দিল

কর্তব্য করতে করতে
সবাই আশা করছিল
   সব কর্তব্য শেষ হলে
         একটা টানা ঘুম দেবে

Subscribe to