Skip to main content

ফিরে এসে


সারাদিনের পর যখন তোমার কাছে ফিরে আসি
মনে হয় দিনের অন্য সব চাওয়াগুলো ব্যর্থ হলেও এমন কিছু ক্ষতি হবে না
ওগুলো শিশিরের মত মিলিয়ে যাবে
বুকে দাগ না রেখেও।
কিন্তু ফিরে এসে তোমায় না পেলে একলা হয়ে যাবো
অন্য সব চাওয়াগুলো ফুটে থাকবে কাঁটার মত বুকে
চারিদিকে নামবে এক চোরাবালি শূন্যতা 

তুমি থেকো

আরেকটু হলেই


যেন ছুঁয়েই ফেলেছিলাম আরেকটু হলেই 
আরেকটু হলেই যেন জেনে ফেলেছিলাম
বোধায় বুঝেই ফেলতাম প্রথম থেকে শেষ

হল না যে

যবনিকা পড়ল হঠাৎ, যেমন পড়ে
প্রজাপতির মত উড়ে গেল, ফুড়ুৎ!

মন বলল, ইস্, আর একটু হলেই..
প্রাণ বলল, ধুস্

কে যেন বলল, বেশ হয়েছে

ভুল কথা

একটা মাছ জলে ডুবে মরেছিল
একটা মাকড়সা জালে আটকে মরেছিল
একটা মৌমাছি মৌচাকে আটকে মরেছিল
ভুল কথা
একটা মানুষ সংসারে আটকে মরেছিল
ঠিক কথা

প্রার্থনা

দরজা আমার এদিক থেকে
শক্ত করে আঁটা
তুমি যদি ওদিক থেকে খোলো
বেরোতে পাই তোমার টানে
আসা যাওয়ার পথ খুলে যায়
মোহ আমায় বাঁধতে না পায়
যদি তোমার বাঁশি বাজে
আমার প্রাণে

মৃত্যুঞ্জয়


কিছু ধুলো আলোর সাথে উড়ছে
কিছু কাদা স্রোতের সাথে ভাসছে
কিছু কাঁকড় ভিজে রাস্তা বাঁধছে
কিছু ডাস্টবিন কিছুতো খেতে দিচ্ছে
কিছু আস্তাকুঁড় এখনো আশ্রয় হচ্ছে
কিছু প্রতিবাদ অলিতে গলিতে মরছে
তবু ঝোঁপে ঝাড়ে নতুন ভ্রুকুটি উঠছে
সব আশা শেষে, সব চিতা নিভে
বুকের ভিতরে তবু ওটা কি নড়ছে?

স্পর্শ

কেউই হাত বাড়ায় না
বাড়ায় কেবল শর্ত

শর্ত না চাই
চাই হাতের সরল স্পর্শ

আমন্ত্রণ

দেখো, তোমার ভালবাসা গ্রহণমুক্ত আজ
দুঃস্বপ্নের পাখিরা ওই গা ঝাড়া দিল
তোমার বিন্দু বিন্দু অশ্রুতেই হবে সাগর
ততদিন শুধু হাসিটা জীবিত রেখো

কোনো দিগন্তে সূর্যাস্ত যদি দেখো
জেনো, কোনো দিগন্তে সূর্যোদয়ও আজ
রাতের গুহায় কান্না ঘুমিয়ে আছে
তোমার বুকের তলায় গঙ্গোত্রীর ডাক

ঢেউ

পুরীর সমুদ্রে যখন প্রথমবার বাবার হাত ধরে নামি, আমার সে কি উত্তেজনা! ঢেউ আসলেই তার উপর দিয়ে লাফাবার চেষ্টা করছি। এমন সময় একটা বড় ঢেউ আসল। লাফাতে গিয়ে বালির তীরে পড়লাম ছিটকে। বাবা হাসলেন, বললেন, "বড় ঢেউ আসলে লাফায় না বোকা, মাথা নীচু করে দিতে হয়। মাথার উপর থেকে ঢেউটা চলে যায়, আর ছিটকে পড়তে হয় না।"

একাকীত্ব



-----
তুমি যখন আসো
আমার সামনে এসে দাঁড়াও
মনে হয় তুমি আমার বহু জন্মের চেনা
কৃষ্ণগহ্বর সৃষ্টিরও আগে থেকে
তুমি যখন যাও
আমার মনে হয়
আমি যেন জন্ম জন্ম একা
ইতিহাস সৃষ্টিরও আগে থেকে



----
আমার একাকীত্বের কোনো মানচিত্র নেই
তুমি যে ভাবে খুশী এসো

নিস্প্রাণ

সংসারের দিকে পিছন ফিরে
সিংহাসনের দিকে মুখ করে
ওনার তিরিশটা বছর কাটল
স্বামী পূত্র পূত্রবধূ পৌত্র সবাই আছে
শুধু উনি থাকলেন না
এত বছর ধরে উনি এত বড় সংসারের
দিকে পিছন ফিরেই কাটালেন
থেকেও না থেকে

সেদিন রাস্তায় যেতে যেতে আবার চোখ পড়ল
ওনার গারদ ঢাকা শীর্ণ শরীর
সিংহাসনের দিকে ফেরা
আনন্দহীন শুকনো মুখে বন্ধ দুটো চোখ

Subscribe to