অর্থহীন
আসলে তো সব অর্থহীন।
অর্থ কিছু বানিয়ে নিই।
অর্থ কিছু বানিয়ে দিই।
আসলে তো সব অর্থহীন।
উদ্দেশ্যহীন। শূন্যে লীন।
সব যুক্তির শেষে দাঁড়ানো
যুক্তিহীন।
আসলে তো সব অর্থহীন
অর্থহীন অর্থহীন।
তবু একদিন
তবু একদিন
একট্রেন বোঝাই অফিসযাত্রী চীৎকার করে উঠবে - আর না!
এক শপিংমল ভরতি মানুষ চীৎকার করে বলবে -
তফাৎ যাও!
ট্র্যাফিকে দাঁড়িয়ে থাকা অজস্র মানুষ চীৎকার করে বলবে -
রাস্তা ছাড়ো!
সিনেমাহলের সব কটা মানুষ উঠে দাঁড়িয়ে বলবে -
চুপ করো!
স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে বাচ্চাগুলো জড়ো হয়ে বলবে -
গাছ চেনাও, কালো বোর্ডটা সরাও!
স্পষ্ট
স্পষ্ট তাকিয়েছিলাম
স্পষ্ট তাকালে তুমিও
স্পষ্ট কথা বললাম
স্পষ্ট কথাগুলো তোমারও
রেস্টুরেন্টের খাওয়ার বিল
সংশয় নেই, স্পষ্ট হিসাব
মিটিয়ে উঠলাম
উঠে দাঁড়ালে তুমিও
তাড়া আছে
তাড়া তো আছে তোমারও
তবু কেন যেন বেয়াড়া কষ্ট
বুক তো চিরছে তোমারও
লোকটা
রাত এগারোটা প্রায়
রাস্তার উপরে হলুদ স্ট্রিট লাইটের মায়া মাখানো আলো
সার দেওয়া বাড়ি
জানলা দিয়ে গা এলিয়ে পড়া ঘরের আলো রাস্তায়
এখানে ওখানে কয়েকটা পাড়ার লালু ভুলু শুয়ে
লোকটার কাঁধে একটা কালো ব্যাগ
ওতে দোমড়ানো আজকের খবরের কাগজ
না ধোয়া তরকারি লাগা ফাঁকা টিফিনবক্স,
আর একটুখানি অবশিষ্ট জল ছলকানো প্লাস্টিকের লম্বাটে বোতল
বাকি সব বোগাস
হাওড়া স্টেশান ছেড়ে ট্রেনটা যখন বেরোয় রাত্তিরবেলা কি সন্ধ্যেবেলা, ওই হলুদ হলুদ, কমলা কমলা আলোগুলো দেখলে আমার ভীষণ মন খারাপ করত ছোটোবেলায়।
এখন করে না।
সন্ধ্যেবেলায় যখন চারদিকে শাঁখ বাজত, ঘন্টা নাড়ার আওয়াজ আসত, আকাশটা শেষ আলোর রেখাকে 'যেতে নাহি দিব' বলে আঁকড়ে রাখতে চাইত বুকে, আমার বুকের ভিতরটা ফাঁকা হয়ে যেত।
এখন হয় না।
আসলে তো ভাল নেই
১
===
মেয়ে তুমি নিরাপদ নও
ঘরে বাইরে দেবালয়ে
কোথাও নিরাপদ নও
সুন্দর
সুন্দর
তুমি আগন্তুক,
চমক জাগিয়ে ডাকো
কান্না
তুমি তো একলা নদী
গোপনে বইতে থাকো
প্রেম
তুমি নিঃশব্দ বাণী
মরণে অমৃতকে ধরে রাখো
তুমি নির্বাক
তোমার হাতের স্মৃতিতে আমার শৈশব
আমার হাতের তালুতে মিশে তোমার বার্ধক্য
তুমি নির্বাক। আমিও নিশ্চুপ।
আইসিউতে খালি পা আমি
সময়ের সাথে চটি খুলে রাখা বাইরে
অপেক্ষা আর অসহায়তার গভীর পার্থক্য
এমন একটা ভোর আসুক
এমন একটা ভোর আসুক
বাড়ির পিছনের পুকুরটার পাড় ঘেঁষা
নারকেলগাছের সারির মাথা ছুঁয়ে উঠুক সূর্য
আমি দুটো ফুসফুসের
সবকটা কোষ ভরানো শ্বাস নিয়ে
সর্বান্তঃকরণে, নিঃসংশয়ে বলি-
"সবার মঙ্গল হোক"
এমনই থাক
এক আকাশ নিঃশব্দতা হঠাৎ হাতের মুঠো ছুঁয়ে গেল
মুঠো কুঁড়ির মত ফুটল নিঃশব্দে
কি আবেশে, বিবশ হয়ে
নীল ওড়না ঢেউয়ের মত স্পর্শ করল
অপরিচিত আঙিনায় পরিচিত আদর
আকাশ আর খোলা হাত পাশাপাশিই থাক
মুঠোর বাঁধন অতীত এখন