এই তো কবিতা
পদ্মপাতার উপর এক বিন্দু জল
টলোমল
তার অবয়ব ঘিরে নীলাকাশের ছবি
ছলছল
শান্ত মন, আত্মগত প্রাণ
দূরে, বহুদূরে সব কোলাহল
আরেকটু
যদি জানলাটা আরেকটু খোলা থাকত
বিস্তীর্ণ মাঠ, সবুজ পুকুর, নীল আকাশ
জেগে থাকত আরো খানিকক্ষণ
ভেজা মাটি, গাছ লাফানো জলবিন্দু, ব্যাঙের উল্লাস
হয়ত আরো বেশি প্রয়োজন ছিল
মসৃণ দেওয়াল বেয়ে ওঠানামা
সহজ হত
বন্দর
শেষ জাহাজ কবে ছেড়ে গিয়েছে মনে নেই
এমন কোনো এক পরিত্যক্ত শ্রীহীন বন্দরে
সেদিন পূর্ণিমার আলো এসে পড়েছিল
নাম না জানা কোনো এক পাখি ডেকে যাচ্ছিল অবিরাম, প্রত্যাশাহীন
কর্মনাশা!
সোঁদা গন্ধে পিছলে পড়েছ কখনও?
আচমকা দেখলে, জানলায় বাইরে টাঙানো কালো স্লেট আকাশ?
তোমার ঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছে তোমারই মত আরেকটা মেঘলা তুমি?
তাকে সামাল দিতে হাতড়াচ্ছ গীতবিতান
কবিতার ফেরিওয়ালাকে বলছ,
“এই ঝাঁকা নামিয়ে বসো দেখি”
তোমার ভেজা চোখে কোনো বিগত দিনের ডুব সাঁতার
ছায়া
বারবার একটা ছায়া মুখের ওপর এসে পড়ছে
বারবার সরিয়ে দিতে চাইছি
হাতের তালুতে পাঁচ আঙুলে চেপে ধরে
ছুঁড়ে দিতে চাইছি আস্তাকুঁড়ে
বারবার ছায়াটা ফিরে ফিরে এসে মুখের ওপর পড়ছে
ছায়ার সাথে কথা বলি না
মজলিশ
আজও মজলিশে একটা তাকিয়াও খালি যায়নি
আজও হাসির ফোয়ারা উঠেছিল নিঃসঙ্গ দেওয়ালের
আত্মমগ্নতাকে ক্ষুব্ধ করে
ভিক্ষুণী
প্রচণ্ড দাবদাহ
তাপ প্রবাহ চলছে আবহাওয়া দপ্তরের পরিভাষা অনুযায়ী
দুপুর দুটো। জনশূন্য রাস্তা।
ঘরের কাছে কান পাতলে টিভির আর পাখার আওয়াজ
বিকল্প
গুঞ্জন চলছে, এটা কি করে হতে পারে?
বিকাশের চায়ের দোকান। চালু দোকান।
অফিস পাড়ায় সকালের ভিড়।
পাশে ফাস্টফুডের দোকান – রেহমতের,
উত্তরপ্রদেশে বউ, দুই ছেলে, তিন মেয়ে
ছোটোছেলেটা এখানে এখন, ছুটিতে এসেছে
দোকানটা খোলে বেলায়
একদিন
সব জানাশোনারা
পাঁচিলের মত দাঁড়িয়ে
আগাম জানাশোনারা
গুহাপথের মত সামনে
একদিন এই জানাশোনার বাইরে যার পা পড়বে
সে আমি না
জানাশোনার বাইরে কেউ
এমন যদি হয়
এমন যদি হয়
বাজারে আনকোরা কিছু নেই আর তোমার জন্য
এমন কোনো
পাহাড়, নদী, ঝরণা, জঙ্গল, সমুদ্র নেই যা তুমি দেখোনি
অথবা এমন কোনো রতিসুখ নেই
যা তোমার অভিজ্ঞতার বাইরে
কি করবে সেদিন?