সাধ
বয়স্ক মানুষটার চোখ বোজার সময় এল
ছুটে গিয়ে দু'পা জড়িয়ে বললাম -
ওগো একটু দাঁড়াও। পুরোপুরি চোখ বোজার আগে বলে যাও, কি পেলে, কি বুঝলে এতবড় জীবনটায় বেঁচে?
সে হাসল। চোখের জল গাল গড়িয়ে পড়ল বালিশে।
সে বলল, পেলাম জীবন -
এক সমুদ্দুর দুঃখ, তাতে কয়েক ডিঙি সুখ
আশীর্বাদ
অসময় অসময়ে এসে কড়া নাড়ল
সময়ের দরজায়
গিঁট বাঁধা হল না
পুঁথিগুলো ছড়িয়ে পড়ল মেঝেয়
ভ্রমর
আমি তোমায় পেয়েছি
মুঠোতে নয়, তোমাতে ডুবে
এখন না পারো হারাতে তুমি
না পারি আমি
আমায় হারালো ওরা
আমি হারালাম ওদের
ওদের ছিল সংশয়
ওরা বলেছিল-
নেই মধু, এ শুধু ফুলের রঙীন, মিথ্যা সাজসজ্জা। যেও না!
রাস
তুমি মানে
তুমি মানে
একফালি অপেক্ষায় এ ঘর ও ঘর করা
তুমি মানে
একঝলক সুখের বুকে হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়া
তুমি মানে
বেশ কয়েক ঘন্টা এক লহমায় ফুরিয়ে ফেলা
তুমি মানে
তুমি ফিরে গেলে, তোমাতে আমায় ঘেরার পালা
তুমি মানে
এক আকাশ শূন্যতাকে সুরে ঢাকার চেষ্টা
তুমি মানে
তোমার তুমিতে আমার আমির তেষ্টা
সত্যের গায়ে জমে না মেদ
যেখানে নাকি অনেক নীতি, উচ্চাদর্শ
মহাপুরুষের গুষ্ঠিবাস
তারও নীচে জমছে ক্লেদ
তাদের কাছে যাচ্ছে যারা সরল মনে
ঠকছে তারা
এসব দেখে দেখে জমছে খেদ
নাস্তিক অন্তর্যামী
যত ভয় ভাবনা ব্যর্থতা অক্ষমতা
মনের এ কোণ, সে কোণ থেকে
সব ঝেঁটিয়ে -
ঝেঁটিয়ে ঝেঁটিয়ে কেঁদে কঁকিয়ে
এনে ফেলি সিংহাসনে রেখে
সামনে আমার ভগবান,
ইহকাল পরকাল
আছেন বরাভয় দিয়ে
রক্তবীজ বিশ্বাস
যে পিঠে ছুরি মারবে বলে
রোজ রাতে ছুরিতে শাণ দেয়
সে দিনের বেলায় মাঝে মাঝে
আমার গালে চুমু খেয়ে যায়
তার পিঠের চোখে রাখি চোখ
দেখি প্রাগৈতিহাসিক ইতিহাস
কালের প্রবাহে বইছে চোরাস্রোতে
তবু ভেসে আছে রক্তবীজ বিশ্বাস
কিছু মধু এখনো বুকে আছে
পায়ের তলায় মাটি ছিল না কোনোদিন
মাথা ভরা কল্পনাও ছিল না ভিড় করে
আমার চারদিকে, চারপাশে
শুধু ইচ্ছা ছিল কিছু
এখনো আছে
সত্য বস্তু
সত্য বস্তু চিত্তে বাঁধা
তারে খুঁজতে গেল জনম আধা
এমন গোলক ধাঁদায় ঘোরায় যে রে
সে জন কোন জনা?
চিত্ত ক্লান্ত মিথ্যা ভেকে
যারে হন্যে হলেম ডেকে ডেকে
সে যে সব ঘরেতেই আছে বসে
হয়ে একজনা
সত্য বলো, সুপথে চলো
লালন সাঁই এ মন্ত্র দিল
সে ধন পাবে যদি মন সামলে চলো
ভাগাও ছয়জনা