Skip to main content

একটা দমকা হাওয়ায়


রোদে পোড়া ঝরে পড়া পাতাগুলো 
ডাঁই করা রাস্তার ধারে

দশদিক থেকে বাতাস পোড়া পাতার গন্ধ নিয়ে খেলছে দামাল ছেলের মত

সূর্যাস্তের আয়োজন হচ্ছে পশ্চিম আকাশে
  সিঁদুর রঙ লেপে

আমার বোধহয় চোখটা আবার দেখাতে হবে


আমার বোধহয় চোখটা আবার দেখাতে হবে। লেখা আছে 'Marking 10yrs of 26/11', আমি পড়লাম, 'Marketing 10yrs of... ".. 
কাছের জিনিস বড় অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে..বুঝলে হে বাঙালি সেন্টিনালি...উফ আবার ভুল লিখলাম..বাঙালি সেন্টিমেন্টালি...!!

ওগো আদিকবি


কেউ কেউ তবে কাব্য বোঝে?
তোমার রচিত বিশ্বরাজ যে
কোন ভক্তের কি মোহ ঘোরে
   আজ সে মাটির আসন খোঁজে?

বল্মিক যত বল্মিক আজ
   ধুলোয় ধুলোয় ওড়ে
ওগো আদিকবি,
    শানিত অস্ত্র, হুংকার কেন
  পূজা স্তবমালা ঘিরে?

জোনাকি পথ

        লোকটা জানত মারা যাবে। মারা তাকে যেতেই হবে। ব্যথার কথা বলে না। খিদে কমে যাওয়াটা লুকিয়ে যায়। অল্প বয়েসী মেয়েটার মাথায় সিঁদুরের দাগটা দেখলে বুকটা টাটায়। দুটো ঘুমন্ত বাচ্চার মুখে এসে পড়া স্ট্রিট লাইটের আলো, জানলার পর্দা উড়িয়ে ঘরের ভিতরে এসে জমে - সে দেখতে দেখতে আন

এমন নয়


এমন নয়
তবে?
জানি না। তবে এমন নয়।
চেনা?
না, তবে অচেনাও তো নয়
তবে কেমন?
জানি না। তবে এমন তো নয়!
 

এত কথা কেন?

        কখনও কখনও সম্পূর্ণ লিখতে পড়তে না জানা মানুষদের, যাদের আমরা চলতি কথায় 'অশিক্ষিত' আর তার সাথে গরীব হলে, অবতার-সাধু না হলে 'ছোটোলোক' বলি, তাদের মুখে এক একটা কথা শুনে মনে হয় কবিতা জিনিসটা যত বেশি হৃদয়ের কাছে থাকা যায় তত বেশি শুদ্ধ হয়। লেখাপড়া না জানা মানুষ কথা বলে

দাদা ক’টা জারোয়া দেখলেন?


        আন্দামানে সে গিয়েছিল যীশুর বাণী প্রচার করতে। বোকামি? ধর্মান্ধতা? ভক্তি? বিশ্বাস?
        জানি না।

বহুতে এক

নানক দেখেছিলেন একটা অখণ্ড মানবজীবনের ছবি। শান্তিপূর্ণ ভারতের, তথা বিশ্বের ছবি। কবীর তার পথের অগ্রজ। তার দৃষ্টিতেও ছিল একটা অখণ্ড মানবজীবনের ছবি। অখণ্ড মানবজীবন - যে জীবন শ্রদ্ধা, অনুকম্পাস্নাত আর বিকাররহিত হবে।

অচ্ছুৎ টুইটার ও ব্রাহ্মতন্ত্র

১) “বাহ্যেন্দ্রিয় ও অন্তরিন্দ্রিয়ের সংযম, কায়িক, বাচিক ও মানসিক তপস্যা; অন্তর্বহিঃ শৌচ, ক্ষমা, সরলতা, শাস্ত্রজ্ঞান ও তত্ত্বানুভূতি এবং শাস্ত্রে ও ভগবানে বিশ্বাস – এই সকল ব্রাহ্মণের স্বভাবজাত ধর্ম” - গীতা

পরকীয়া ঘোল


ওরে কে যেন হইল ভ্রষ্ট?
চারদিকে উঠিল শোরগোল

দিকে দিকে ফিরিল নীতিবাগীশ
মুখেতে শাস্ত্রের বুলি, হট্টগোল

শ্লেষ, তির্যক দিঠি, ক্লেদের বন্যা
মাখো মাখো সবে, 
      আজিকে পাঁকের দোল

হেঁসেলের সহমর্মিতা

যে কোন ism বা -বাদ এর সুবিধা হল, সে একটা করিডোর ভিসন বা টানেল ভিসন দেয়। যেমন নারীবাদীর দৃষ্টিভঙ্গীর মজা হল সংসারে আশেপাশে যাই ঘটুক না কেন, তাকে অন্যান্য যে কোনো দৃষ্টিভঙ্গীতেই দেখা যাক না কেন, তার ব্যাখ্যা একটা নির্দিষ্ট দিকেই গড়াবে, একটা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গীতেই হবে।

ঈশ্বরের গল্প সব শেষ হলে


ঈশ্বরের গল্প সব শেষ হলে
মানুষ ফিরে আসে

কয়েক পশলা বৃষ্টিতেই
মেঘের গল্প ভাসে

আমি তো...

আমি ঘুমন্ত অবস্থায় চলতে পারি না
আমি ঘুমন্ত অবস্থায় কথা বলতে পারি না
আমি ঘুমন্ত অবস্থায় সিদ্ধান্ত নিতে পারি না

অবাক হয়ে দেখছি তোমরা কি অনায়াসে পারো

শুদ্ধতার মোহ

মানুষের কতগুলো মৌলিক প্রবণতা আছে ব্যক্তিত্বের। সুন্দরের প্রতি আকর্ষণ, ক্ষমতার প্রতি আকর্ষণ, সত্য বা জ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ, শুদ্ধতার প্রতি আকর্ষণ। খিদে, তেষ্টা, নিরাপত্তা, কাম, অহং-এর তৃপ্তি - এগুলোকে ধরছি না। এ সবার মধ্যেই থাকে, মাত্রার তারতম্যে। এরা প্রবণতা না, এরা চাহিদা।

গালিবও সাক্ষী

যুদ্ধ আর প্রেম
       আমন্ত্রণের সৌজন্যের অপেক্ষা রাখে না

    শতাব্দী সাক্ষী

পার্থক্য শুধু - 
ধ্বংস করার 
      আর ধ্বংস হওয়ার সুখে

যে গোলাপটা ফুটেছিল


যে গোলাপটা ফুটেছিল

ঝরে গেছে

যে কথাগুলো ফুটিয়ে গেল

রয়ে গেছে

স্নেহ

        স্নেহ, একটা বেড়া ঘেরা ভালোবাসা। করুণা, চাষের জমিতে খালকাটা ভালোবাসা। এর একটাও যদি না থাকে, তবে একা না থাকাই ভালো। অন্যের বেড়ার মধ্যে অথবা অন্যের খালের কাছাকাছি থাকাই নিরাপদ। নইলে শরীর ভীষণ আঁশটে ভাষায় কথা বলে। তাতে যত না নিজের বিপদ, সমাজের বিপদ আরো বেশি। 

অন্যরকম

অন্য কোনো একটা হাওয়া এসেছিল
অন্য কোনো দিক থেকেই এসেছিল

কিছু একটা বলতে চেয়ে
সব কিছুকে অন্যরকম করে 
       ভ্রুকুটিতে বড় নিষ্ঠুর হেসেছিল

আমার লাইব্রেরি বিরহ

        আজ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে বিবেক দেবরায় মহাশয় খুব আক্ষেপ করে লিখেছেন যে কলকাতার প্রধান গ্রন্থাগারেও আধুনিক বইয়ের সংযোজনের হার খুব কম। এবং কি কি আইনে সেটা দণ্ডনীয় অপরাধের মধ্যে পড়ে, তাও লিখেছেন। তা অতবড় মানুষটা যখন বলছেন, তখন অমন একটা আইন নিশ্চয় থাকবে। কিন্তু যে দেশে লাইব্রেরিতে সেই কালিদাসের পর

শোধন

সমস্ত অন্ধকার লুকিয়ে
সূর্যোদয়ের বিপরীতে হাঁটছিলাম

ভোরের শিশিরে পা পিছলালো
  সূর্যাস্তের পোড়া ইটের রঙে
    সূর্যোদয়ের কান্না কাঁদলাম

তোমারও

তোমার পায়ের তলায় ধুলো ছিল
আমারও পায়ের নীচে ধুলো

তোমার মাথার উপর আকাশ ছিল
আমারও মাথার উপর আকাশ

তোমার আশেপাশে ছিল মানুষজন
আমারও চারপাশে আছে

শুধু তোমার একদিনে ছিল 
        অনেকগুলো দিন
আমার একদিনও যেন অর্ধেক

আলোকে ভরা উদার ত্রিভুবন

ভারত একদিন বুঝেছিল, শাস্ত্র আর হোলিবুকের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। শাস্ত্র যা শাসন করে, যাকে শুধু শুদ্ধ, পবিত্র বলে মেনে চললেই হয় না, প্রয়োজনে তাকে প্রশ্ন করাও যেতে পারে। এই প্রশ্ন করা, ক্রিটিকালি দেখার প্রচেষ্টা নিয়ে ভারতের দর্শন এগিয়েছে বলেই, ভারতে ধর্মগ্রন্থ আর দর্শন গ্রন্থ কাছাকাছি এসে পড়েছে।

ওরা তিনজন


গন্তব্য নেই আর গন্তব্য হারিয়েছে - এমন দুজন রেল স্টেশানে দাঁড়িয়েছিল

যার গন্তব্য আছে, তার ব্যস্ততা দেখে
  যার গন্তব্য নেই মৃদু হেসেছিল 
    যার গন্তব্য হারিয়েছে লজ্জা পেয়েছিল

সিগন্যাল হল
লাইন জোড়া হল
ইঞ্জিনের ধোঁয়া দেখা গেল

ট্রেনটা এলো না

শিশুদিবস


        আজ এই প্রথম ১৪ই নভেম্বর আমার কাছে শিশুদিবস নয় শুধু। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর জন্মদিন। আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম।

যুক্তি


রক্তকে যুক্তি বানালে
মিথ্যাচারকে যুক্তি বানালে
শোষণ অত্যাচারকে যুক্তি বানালে

ক্ষণ ও সুর

        মানুষ বাণীতে বাঁচে। অতীতে বাঁচে। আক্ষেপে বাঁচে। ক্ষোভে বাঁচে। ঈর্ষায় বাঁচে। প্রতিযোগিতায় বাঁচে। ছলনায় বাঁচে। ক্রোধে বাঁচে। বিষণ্ণতায় বাঁচে। অপমানে বাঁচে। অহঙ্কারে বাঁচে। হীনমন্যতায় বাঁচে। রোগে বাঁচে। অভাবে বাঁচে। প্রাচুর্যে বাঁচে। মধ্যবিত্ততায় বাঁচে। অলসতায় বা

শান্তি

বললাম, শান্তি
ঘুমিয়ে পড়লে
বললাম, শান্তি
চোখে ঠুলি পরলে
অথচ একবারও দুটো বিরুদ্ধ স্রোতের মাঝে
পাটাতনটা খুঁজে দেখলে না

মানুষটা হাস্পাতালের বিছানায় শুয়ে

        মানুষটা হাস্পাতালের বিছানায় শুয়ে। কয়েক মাস হল। বয়েস হয়েছে, লোকে বলে। এখন মারা গেলে অস্বাভাবিক হবে না, তিনিও বিশ্বাস করতে চান। তবু কান্না পায়। প্রস্টেট ক্যানসার, সারা শরীর ছড়িয়ে গেছে। 

পলাশ

        বাচ্চাটার জামায় নীল বোতাম। সাদা সুতোতে সেলাই। বাচ্চাটার লাল জামাটা একটু ছোটো। নীল হাফ প্যান্ট। পার্কের একটা কোণে বসে মোবাইলে গেম খেলছে।

তত্ত্বকথা


বুকের মধ্যে পায়েস ভরতি কাঁসার বাটি
তর্জনী ডুবিয়ে বসে

অন্ধকার ঘরে পোড়া সলতের গন্ধ


অন্ধকার ঘরে পোড়া সলতের গন্ধ

ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয়ে আসা প্রদীপের বুক

শিউলির হাতছানিতে স্মৃতির ব্যথার অভিসার

পূর্ব আকাশে খোলা জানলার

      প্রাগৈতিহাসিক প্রতীক্ষা

জিভ

        বাচ্চাটার মুখে একটাই কথা, আমি বড় চিপসটা খাব। মা মুখের দিকে তাকিয়ে বড় চিপসটা হাতে দিয়ে, চারদিকে তাকাল। চিপসের প্যাকেটটা মাটিতে পড়েছিল, মা কুড়িয়ে পেয়েছে। মুখটা খোলা, তবু, বাচ্চাটা চাইছে, কি আর হবে?!

ফুলটা নিঃশব্দেই ফুটেছিল

ফুলটা নিঃশব্দেই ফুটেছিল
তাকাবো না-ই ভেবেছিলাম

আঙুলে কাঁটা ফোঁটার পর বুঝলাম
    অজান্তেই তাকিয়েছিলাম
 

কিছু না

হঠাৎ করেই হারিয়ে গেল

সন্ধ্যের আকাশের সামনে দাঁড়িয়ে বললাম
    হারিয়ে গেল

সন্ধ্যের আকাশ বলল, একটু দাঁড়াও

সারারাত দাঁড়িয়ে রইলাম

শেষ রাতে হলাম অধৈর্য, বললাম
    কিছু বললে না যে

তুমি তো মহাকাল নও

ইতিহাসের কয়েকটা পাতা ছিঁড়তে চাইছ
ছেঁড়ো
সে ছেঁড়া পাতাগুলো রাখবে কোথায়?
তুমি তো মহাকাল নও!
 

পান্নালাল


        জনবহুল রাস্তা। আলোয় আলো চারদিক। দুর্গাপূজোর জামা দ্বিতীয় দফায় কালীপূজোতে বেরিয়েছে আবার। কচিকাঁচা, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী-বয়স্করা রাস্তায় --- ঠাকুর দেখতে, প্যাণ্ডেল দেখতে, আলো দেখতে, মানুষ দেখতে।

বোধ

 অনেকটা রাস্তা চলে আসার পর বুঝল পাকা রাস্তাটা ছেড়ে গেছে অনেকক্ষণ হল। একটা জঙ্গলের মধ্যে অন্যমনস্কভাবেই চলে এসেছে অনেকটা। মাটিতে বসল। যাবে কোথায়? কোনোদিকেই যাওয়ার নেই। কিন্তু দাঁড়াবার জোও তো নেই। মানুষ মনের গুণে ঘুরে মরে। আমি কিসের খোঁজে ঘুরছি তবে? ঈশ্বরের মৃত শরীর দেখে এসেছি নিজের চোখে।

কাটাকুটি খেলা চলছে


        কাটাকুটি খেলা চলছে। হঠাৎ কে একজন চীৎকার করে বলে উঠল, আমার পুট পড়েছে, পুট.. পুট.. পুট। যেই না বলা, অমনি একজন কাছা খুলে মেঝেতে ডিগবাজি খেয়ে বলতে লেগেছে, আগডুম বাগডুম ঘোড়াডুম সাজে। কেউ নেচে উঠে বলল, ছু কিত.. কিত.. কিত... কেউ হামাগুড়ি দিয়ে কারোর পিছনে লুকিয়ে বলল, টুকি! 

#COCO

আজ এই সিনেমাটা (#COCO) ভীষণ মনে পড়ছে। যারা দেখেছেন তারা জানেন কেন মনে পড়ছে। যারা দেখেননি তাদের জন্য বলি, একটা অপূর্ব দর্শন সিনেমাটা মাথায় এঁকেছিল। আমার পরলোকগত প্রিয় মানুষেরা সেই লোকে ততদিন জীবিত থাকে আর নির্দিষ্ট দিনে আমাদের সাথে দেখা করতে আসার অনুমতি পায় যতদিন আমরা তাদের মনে রাখি, তাদের ছবিতে তাদের পার্থিব অবয়বকে যত্নে রাখি। কি অপূর্ব সিনে

এমন দৃষ্টি

কুকুরটা একটা একটা করে সাতটা বাচ্চা জন্ম দিল
    তার গোঙানি, তার অসহায় অসহ্য চীৎকারের সাক্ষী থাকল 
        কার্তিক মাসের তারা ভরা নির্মল আকাশ 
        বাগানের কয়েকটা আধফোটা জবা, আর কয়েকটা ঘাসফুল

আগ্রা-দিল্লী-হরিদ্বার-হৃষীকেশ

পুরীর সমুদ্র প্রথম দেখে বুকের ভিতরটা 'ধক্' করে উঠেছিল। আজ বহুদিন পর সেই স্মৃতিটা উসকে উঠল তাজমহলের সামনে দাঁড়িয়ে। আমি এই মুহূর্তে তাজমহলের সামনেই বসে। নীল সমুদ্রে একটা সাদা পালকের মত ভেসে আছে। মানুষের নিজের সৃষ্টির যে কয়েকটা গর্ব আছে অবশ্যই তার মধ্যে এক অতুলনীয় সৃষ্টি। যার অনুপ্রেরণা ভালোবাসা।

সর্দার

কিছুক্ষণ জঙ্গলে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে সর্দার ঘুমিয়ে পড়েছে। সর্দার মানে সর্দারজী নয়, ডাকাতের সর্দার। অমনি গাছ থেকে একটা ইয়াব্বড় ডাব মাথায় পড়ে সর্দার অক্কা। বেঘোরে মরলে মানুষ কি হয়? ভূত হয়। তো এই সর্দারও তাই হল। প্রথম প্রথম খুব করে শরীরের নানা গত্ত দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে দেখল, কিন্তু হল না, পোষালো না। অগত্যা দেহের মায়া ত্যাগ করে খাঁটি ভূত হয়েই জীবনটা কাটিয়ে দেবে ঠিক করল।