ইউটার্ন
সেতু
কয়েক টুকরো ভালোবাসা দিও
বাকিটা আমি জুড়িয়ে জুড়িয়ে নেবো
নিরবচ্ছিন্ন যা, তা তো মরণ!
বালাইষাট, প্রেম চাইতে মরণ চাইব নাকি!
সেনেকা
তুচ্ছ বলে যা চাইনি
খারিজ
ধান ক্ষেতের নাগাল ঘেঁষে থালার মত চাঁদ। ধানগাছগুলো সন্ধ্যের হাওয়ায় সারা শরীর দুলিয়ে শিহরণ জাগিয়ে তুলেছে ক্ষেতে। হালকা সরসর শব্দ উঠছে নূপুরের মত কোনো অলক্ষ্য পায়ের। সে পায়ে যেন আলতা। চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত পাকা ধানের শরীর। বিচ্ছুরিত সাদা
গরহাজির
আজ সারাটা দিন হোক আমায় ছাড়া,
ডেকো না,
আমার অলস ভোরের বিছানা ছাড়ছে না গতকাল।
সব কিছু
সব কিছু সহজ হবে ভেবেছিলাম
সব কিছু সহজ হোক চেয়েছিলাম
নিজের দিকে তাকাতে গিয়ে
মুখ ঢাকলাম
সময়
ঘুম
যে সমাজ সুখ আর নিরাপত্তার বাইরে হাঁটার মনুষ্যত্বের পুঁজিটুকু হারিয়ে ফেলেছে, সে সমাজে একটা ছ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে মারার ঘটনা, নিতান্তই চাঁদে জল পাওয়া যায় কিনা ধরণের ঘটনা। তার ওপরে যখন সে মেয়েটা দিনমজুরের মেয়ে। আমার চারপাশ ভীষণ শান্ত। সব ব্যাপারে অত প্রতিক্রিয়
সাহস
সত্যি বলতে ওর কথায় কিছু আসে যায় কি?
পাপোসের উপর বুড়ো আঙুলটা ঠেকাবার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিপ্লব। পা পাচ্ছে না। জুঁই খাটের এক কোণায় হেলান দিয়ে বসে। দেওয়ালে লোকনাথ বাবার ক্যালেণ্ডারটা পাখার হাওয়ায় বাঁদিক ডানদিক দুলছে।
মৃত্যু নতুন কিছু বলে না
মৃত্যু নতুন কিছু বলে না
সব নতুনকে ঢাকে পুরোনো মোড়কে
মৃত্যুতে আত্মীয় তো সবাই
সব রাস্তারা অসম্পূর্ণ
নিত্যঘোর ভাঙে অচেনা চমকে
বইয়ের আলমারি
আমার বইয়ের আলমারিরর সামনে এক ভদ্রলোক দাঁড়ালেন। বাবার বন্ধু। তখন একখানাই বইয়ের আলমারি সম্বল। তার মধ্যে আমার প্রাণ ভোমরারা।
মর্ম
মর্মে যদি হলি কানা
কালো অক্ষরে কি দেখবি আলো?
দ্বন্দ্ব যুদ্ধ বাধিয়ে মরিস
জগত জোড়া করলি কালো
মর্মে গিয়ে মর্ম জাগা
সে জন মর্মে আছে মিশ খেয়ে
মর্ম ছাড়া ধর্ম কথা
যেন বোবা উঠেছে গান গেয়ে
দরজাটা খুলবে জানতাম
তাই টোকা দিইনি
...
মহাত্মা না সেলিব্রিটি?
মহাত্মা না সেলিব্রিটি? নাকি দুই-ই? একবার বাণী বসুর একটা সাক্ষাৎকারে উনি বলেছিলেন, লেখালেখির জগতে রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিলে, এ দুয়ের সাযুজ্য খুব কমক্ষেত্রেই দেখা যায়। এ প্রসঙ্গ বিতর্কের। কিন্তু যা বলতে চাইছি সেটা তর্কের জন্য না মোটেই।
আচমকা
স্মৃতিরা আসা যাওয়া করছে
উদ্বিগ্ন
মুখ চাইছে এর-ওর
কারোর কারোর ঠোঁটও কাঁপছে
অসীমকে ভালোবেসে
তুমি অসীমকে ছুঁয়ে ফিরে এসো
আমি আছি সীমানার আশেপাশে
তোমায় নিয়ে বাঁধব ঘর
তোমার চোখের সীমায়
অসীমকে ভালোবেসে
সে-ই সে
শিশিরে পা পড়লে ঠাণ্ডা অনুভূতিই হয়েছে
বৈশাখে খালি পা তপ্ত বালিতে পড়লে
গরম-ই অনুভব হয়েছে
তুমি আমি
তুমি দরজা হয়ে ছিলে,
আমি তোমায় দরজার বাইরে খুঁজেছিলাম
তুমি পথ হয়ে ছিলে
আমি তোমায় পথের প্রান্তে চেয়েছিলাম
তুমি প্রেম হয়ে ছিলে
আমি তোমায় শর্তের বাঁধনে বেঁধেছিলাম
সাক্ষী
এ নিস্তরঙ্গ, নিষ্প্রাণ সমুদ্রে
মাথা তুলে ভেসে আছি
চেতনার মত কিছু একটা নিয়ে
নাম-সংজ্ঞাতে বাঁধতে চাইছি না নিজেকে
সীমানা
ফুল গাছকে বলে,
তুমি বৃন্ত অবধি এসে থেমে যাও
বাকিটুকু আমি বানিয়ে নেব
আমার মত করে
বিরতি
আর কিছুদিন পর থেকে কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাক্ষেত্রে, নেতাদিগের বাদ-বিবাদালয়ে, গবেষণাগারে, ধর্মঘটের মধ্যখানে, হয়ত বা শল্যচিকিৎসার মধ্যভাগেও একটি নতুন বিরতির প্রচলন হবে ( হয়ে গেছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যদিও) -
'ফেসবুক ব্রেক'
Literature that stands the test of time
''An idle mind is a devil's workshop''----
হারাইনি কিছু
বুঝলাম হারাইনি কিছু,
শুধু ভেঙে গেল
যাদের আমি জোড়া দিয়ে রেখেছিলাম
বদল
গাছটা ঠিক করল, সে আর বোকা হবে না। আগে তার ডালপালা চতুর্দিকে মেলা থাকত। পাখি বাসা বাঁধত, পিঁপড়েরা বর্ষাকালে ওর ডালে উঠে আশ্রয় পেত, ক্লান্ত পথিক ওর ছায়ার তলায় বিশ্রাম নিত। গাছটা আনন্দেই ছিল। কিন্তু বোকার মত আনন্দে।
টিকিট
তুমিও বাস থেকে নেমে গেলে
অচেনা স্টপেজে হঠাৎ
কথা তো ছিল না এমন!
আবরণ
সকালে বসলে সূর্যের ধ্যানে
বললাম চোখ খোলো,
সূর্য পূর্ব দিগন্তে,
দেখো, কি তার রঙ, কি তার রূপ!
দান
সারাদিন ধরে শুকনো কাঠ জোগাড় করছিলাম, রাতে আগুন জ্বালাব বলে
খেয়াল করিনি ঈশানকোণে কখন জমেছে মেঘ
ঘন কালো মেঘ
তুমুল বৃষ্টি নামল
সব কাঠ ভিজল,
ভিজলাম আমিও
যাক
ওটা কি পাখি? মাছরাঙা?
উড়ে গেল -
শুভ নববর্ষ
আম্বেদকর
"Cultivation of mind should be the ultimate aim of human existence."
নাম
মালীটা প্রতিটা ফুলের গায়ে নিজের নাম লিখে রেখেছিল গোপনে
কেউ জানত না
প্রজাপতি না, বাতাস না, মাটি না।
জানত শুধু মালী
আর ফুল
দেবতা
সিংহাসনে দেবতার গায়ে একটা মাকড়সা
দেবতা নির্বিকার
মাকড়সাও
পুরোহিত উঠল চীৎকার করে -
অপবিত্র হল সব!
আসলে তো
আসলে তো আমি তাড়াতাড়ি হাঁটছি না
মৃত্যুও শুনেছি এদিকেই আসছে
দুজনেই তাড়াতাড়ি হাঁটলে
বড্ড তাড়াতাড়ি দেখা হয়ে যাবে
নাই বা হল পারে যাওয়া
...
সংশয়
বারণ তো কেউ শোনে না
না নিয়তি
না ঝড়
রীতি - নীতি - ধর্ম
মানুষে মানুষে বিভেদ ঘটায় না কে? গায়ের রঙ, বিত্তের পরিমাণ, ভৌগলিক সীমারেখা, রাজনৈতিক অবস্থান, মেধার সুক্ষ্মতা, স্মৃতির আয়ুষ্কাল, আরো আরো কত কি... এত হিসাব কে রাখছে? তবে আর ধর্মের নামে একা দোষ চাপানো কেন?
Lord within
The dwarf measured the sea,
In his own li'l steps,
And made a puddle in the ocean green....
And he painted a demon,
Of satanic hue
Out of the fearless Lord within.
নিজের মাপে গড়তে গিয়ে
সাগরের বুকে পুকুর কাটল যে
...
বিশ্বাস
তফাত যাও
অস্পষ্ট আলো
আগে বাঁক
বাঁকের সামনে অন্ধকার
তুমি
বলল, এটা পাহাড়
যখন
ঘুমন্ত মানুষগুলোর পাশে জেগে থাকতে থাকতে মাঝে মাঝেই চোখ জুড়িয়ে আসে
নিজেকে ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে তুলে চারপাশে দেখি,
নাহ্, জাগেনি কেউ,
শুধু নড়াচড়া আর পাশ ফিরে শোয়া
শাণ
ভীষণ অস্পষ্ট চারিদিক
প্রশ্নেরা বিরুদ্ধ বিশ্বাস
বিশ্বাস বড় স্পর্শকাতর আজ
যখন তখন লুকানো নখে আঁচড়ে
শান্তির বার্তা বুঝিয়ে দিতে চায়
পিচ
নতুন পিচ ঢালা রাস্তায় হাঁটতে নেই
রাস্তার দুপাশে লাল কাপড় দেওয়া থাকে,
দু'একজন তবু অবাধ্য হয়। অ-সভ্য হয়।
জানতাম। হাঁটে গোঁয়ারের মত।
বিচার
বিচার চলছে
আসামী বেবাক বোকা বেইমান হৃদয়
ফরিয়াদী আমি
ওর পক্ষের উকিল নেই কেউ
আমার পক্ষের উকিল তো মেলা
যুক্তির পর যুক্তি সাজিয়ে...
সেকি ধুন্ধুমার কাণ্ড!
অবসাদ
শরীরে ক্ষত হলে জীবাণুর আক্রমণ হয় বেশি। অনাক্রম্যতা কমে গেলে সামান্যতেই প্রবল রোগের আকার দেখা যায়। বাংলার মন অবসাদের আঁতুড় ঘর হয়ে পড়ছে কেন? তাই এত উত্তেজনার চাহিদা? একটা ভেন্ট খুঁজছি কি? জানি না। খবরটা যেন জানা, তবু স্বীকার করতে লজ্জা কোথাও একটা...
কৃতজ্ঞ
আমার প্রতিদিনের অন্নের ধান যে বুনে দেয়
তার ধর্ম কি জানি না
আমার প্রতিদিন পরা পোশাক যে বুনে পাঠায়
তার ধর্ম কি জানি না
বন্ধ দরজা
বন্ধ দরজাটা যখন খুলল অবশেষে
সবাই ভাবল এবার বুঝি উনি উঠবেন
কারণ সকাল থেকে উনি বসে
দরজাটা খোলার অপেক্ষায়
Un-Words
Some untold words,a lightyear distance can build.
Wrong sounds repeatedly shake the culvert,
and rob my speech,in halfway field.
|| রাম ||
তুলসীদাসের রাম যে অযোধ্যায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেখানে ট্রেনে স্থূল শরীরে পৌঁছানো যায় না। কবীরের রাম দশরথের পুত্র রাম না। মহাত্মার রাম এ বিশ্বসংসারের প্রাণকেন্দ্রে থাকা সচ্চিদানন্দ। তুলসীদাস তাই দুই হাতজোড় করে সমগ্র জগতকে প্রণাম জানিয়ে
কিশোরি আমোনকার
বড্ড নিঃশব্দে চলে গেলেন। গতকাল। কিশোরি আমোনকার। যাঁর সুরে মল্লারকে চিনেছিলাম। একটা ঘটনা মনে পড়ছে, ওর কণ্ঠে, 'মন শিব শিব কা শরণ হো' শুনে মা মুগ্ধ হয়েছিলেন। মা তখন ভীষণ অসুস্থ। গানটা কোথাতেও পাচ্ছি না। কিন্তু মায়ের এই ইচ্ছাটাও অপূর্ণ রাখতে চাইছি না। বুঝতে পারছি তাঁর সময় হয়ে
ভুল শব্দেরা
কয়েকটা না বলা শব্দ
বহু আলোকবর্ষ দূরত্ব তৈরি করতে পারে
বহুবার ভুল শব্দেরা সাঁকো ঝাঁকিয়ে
অথবা মাঝপথে লুঠ করে নিয়ে গেছে তা-
হ্যাঁ রে মেয়ে
এত অভিমানী চোখ কেন গো?
মেঘ জমেছে, না লাভা ফুটছে বুকে?
ছাদের উপর তিনটে শালিক
না দরজার আগলে দশটা চড়াই?
কি হারালো? বল না রে মেয়ে?
কি হারালো, বেরিলি বাজারে ঝুমকা?
দুর্বল
অনেকদিন পর মাটিটায় হালকা সবুজ ঘাস এলো
কদিন হেঁটো না তুমি মাঠের ওদিকটায়
আবর্জনা ফেলতে এসেছো, এসো, ফেরাব না
তুমি জানো আমি মহান নই, দুর্বল
আটকে
জোয়ারের জলে কোথা থেকে রাশ রাশ কচুরিপানা ভেসে এলো গঙ্গার বুকে
ভাঁটায় ফিরে গেল না ওরা
পাড়ে পাড়ে বেধে থেকে গেল
ফিরে গেল জোয়ারের জল
পারতে না?
না হয় দাঁড়াতে আরেকটু
আমার চলার তো কোনো সময়সারণি নেই
নেই জোয়ার ভাঁটার মত আসা-যাওয়াও
না তো আছে উদয় অস্ত যাওয়ার মত আহ্নিক গতি
কি এত খোঁজে?
ব্যস্ত পাঁচমাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে,
একা দুপুরে কোনো মাঠে বসে
শ্মশানের বাইরে বসে দাহ পূর্ণ হওয়ার অপেক্ষায়
কিম্বা মন্দির থেকে বেরিয়ে
অথবা সমুদ্রের ধারে
বোকা
...