মেঘ
সেই চেনা সরষে ক্ষেত দেখে এলাম
জ্যোৎস্নায় ভিজে চুপচুপে
ডাকলাম। কেউ সাড়া দিল না।
জিভ কাটলাম মনে মনে
খেয়াল করিনি মেঘ ছেঁড়া চাঁদ ওদের মাঝখানে
আমিও তো সাড়া দিই না অন্যের ডাকে,
যখন ব্যস্ততার মেঘ ছেঁড়া তোমার চোখ
আমার চোখের সামনে
নেই?
দৃষ্টিতে নেই, স্পর্শেতে নেই বলেই কি নেই?
মিথ্যে কথা!
এই যে ঘড়িটা,
নিছক একটা যন্ত্র মাত্র
সময় কি ওর কাঁটায়?
এবার বলো, সেকি নেই?
চেষ্টা করো
আমায় জ্যান্ত চেয়েছিলে না?
তবে নাক-চোখ-মুখ চেপে ধরছ কেন?
শপিং কমপ্লেক্স
ভালোবাসা একটা বহুতল আবাসন
আবাসন? না শপিং কমপ্লেক্স?
প্রতিটা ঘরে, প্রতিটা ফ্লোরে কি প্রচণ্ড ভালোবাসা
সবাই যেন মহড়া দিচ্ছে,
কোথায় কবে যেন হবে অসম্ভব রকম প্রতিযোগিতা
মায়া
বলিহারি
তুম হো দাতা, ম্যাঁয় ভিখারী
এই সত্য ভুলে কি ঘোলই না খাচ্ছি
বলিহারি ভ্রম,
বলিহারি বলিহারি
স্রোত
শুনেছি নদী তার সমস্ত পথের সঞ্চয় নুড়ি-পাথর-মাটিকণা শেষ পথে নিয়ে এসে নিজের স্রোতকে নিজেই দুর্বল করে তোলে। মোহনায় নিজের চলার পথ নিজের সঞ্চয়ের ভারেই রোধ করে ফেলে প্রায়।
ভাবনা হয়, মনের মধ্যে যা সঞ্চিত হচ্ছে প্রতিদিন, তা যদি মনের স্রোতকেই কোনোদিন ক্ষীণ করে তোলে?
বাসনা
কোনো একটা ঘরে স্থির হয়ে বসতে দিল না
বাসনা
এক ঘরে বসে থাকতে থাকতে দরজায় হাতছানি,
বলল, ওঠো, ও ঘরে যাব এবার
অধীর হয়ে যাই
সব দীনতা হতে জাগো জাগো রে
মৌসুমী বায়ুর মত
সুখের মুহুর্তগুলো ভুলে যাও, ক্ষতি নেই
মনে রেখো কিছু যন্ত্রণা আমরা একসাথে পেয়েছিলাম,
ভাগ করে নিয়েছিলাম বলে
কিছুটা পথ এগিয়ে আসতে পেরেছিলাম
ভয় পেলে জয়পুর?
জয়পুর, অবশেষে কি ভয় জিতল তবে?
কি বললে? আরেকটু জোরে বলো... শুনতে পাচ্ছি না...
শান্তি রক্ষার জন্য?
শান্তি কে রাখে তবে... ভয়?
রেখেছে কোনোদিন?
যদি রাখত তবে মর্গকে লোকে বলত শান্তিনিকেতন
সংক্রমণ
এখন কি করবে চিকিৎসক?
তোমার ওষুধপত্র, স্টেথো, ইঞ্জেকশান সরিয়ে রাখো
সেই রবীন্দ্রনাথ
তৃষ্ণার্ত, সমুদ্রতীরে ডাবের জল
সেই রবীন্দ্রনাথ
প্রেমার্ত, হরমোনের ভুলভুলাইয়ায় দিশা
সেই রবীন্দ্রনাথ
ভালোবাসা
আরে ভালোবাসা মানে তো আমিও বুঝি
বুকের ভিতর অম্বল হওয়া বুক জ্বালা
সব সহ্য করে নিই। নিতেই হয়।
এমনকি পাঁজর ঝাঁঝাঁনো ভালোবাসাও
পারিনি
প্রচণ্ড আকণ্ঠ দেশভক্তি
পাড়ার মোড়ে মোড়ে ফুল চন্দনে ঢাকা ছবি
অনেকটা বারের পূজোর মত
(প্রসাদের মত বাণীও বাইরে রেখেই ঘরে ঢুকতে হয়। না হলে সাংসারিক অমঙ্গল)
আমি একটু দূরত্ব রেখেই চলি
আম্লিক - ভালোবাসা
অ্যাসিড ছোঁড়াটা আটকাতাম কি করে তোমার?
ওটা তো তোমার রুচি
কিসে?
ভবতোষবাবু একা কৃষ্ণমন্দিরে বসে। বহু পুরোনো মন্দির। সন্ধ্যারতি হয়ে গেছে আধঘন্টা হল। মাঘমাসের প্রথম সপ্তাহ। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। তাই আজ তাড়াতাড়ি ফিরে গেছে সবাই।
শুধু তাই তোমার হাতটা চাইছিলাম
মহৎ সাহিত্য এবং
"অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা"
দ্বিধা
ডাক পাঠালে
এসেছি দেখো
একটু দেরি হল
শুনতে পেয়েও
বুঝতে পারিনি
পা দ্বিধান্বিত ছিল
প্রতিবাদ?
মনে নেই, মনে আছে
কথাগুলো মনে নেই,
দৃষ্টিটা মনে আছে
কাঁটার মত বিঁধে আছে
অলোকেশবাবু
অলোকেশবাবুর ভীষণ হিসাবি সহানুভুতি
মালতীর ছেলের জন্য টাকা দিয়েছিলেন
ছেলেটার টাইফয়েড হয়েছিল
মালতীর স্বামীর চিকিৎসায় টাকা দেননি
বরটা মারা গেল।
ঠিক তেমন
পাও নাই পরিচয়
তোমার ভালোবাসাই নিঃসঙ্গ করল আমায়
তুমি যাকে ভালোবাসো
আমার মধ্যে যাকে দেখো, যাকে খুঁজে পাও -
সে আমার কাঠামোয় তোমার নিজের সৃষ্টি আমি
সে আমি, আমি নই
কে?
মুখ বন্ধ। জিভ শব্দ উচ্চারণ করে না।
শুনবে কে?
মাথার মধ্যে অজস্র শব্দ। বড্ড আগোছালো।
বুনবে কে?
নির্মেদ
ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার পর বুঝলেন
ওই অঙ্গটার অন্য একটা প্রচ্ছন্ন পরিচয় ছিল
তাঁর পুরুষসঙ্গীর প্রেমের নিলয় শুধু নয়
তাঁর অধুনা যুবক সন্তানের পরিত্যক্ত খাদ্য ভাণ্ডার শুধু নয়
আঁধারে মিলিবে তার স্পর্শ
রাতের বুকের কোটরে একরকমের স্নিগ্ধতা আছে। শান্ত মসৃণ স্নিগ্ধতা। বাতাসের ভাষায় ভর করে আসে। যদি হাত পাতি, কিছু এসে জমে হাতে। যদি হাত উপুড় করি, হাতের থেকে কিছু নিয়ে যায়। কি নিয়ে যায় জানি না। যেন এই রাতের অন্ধকারের আড়ালে কেউ আছে। সে আমার খুব পরিচিত, খুব আপন। এতটাই পরিচিত যেন পরিচয় দেবার ভাষারাই অপরিচিত সে পরিচিতির কাছে। শিশু যেমন মায়ের পরিচয় দিতে পারে না, প্রেমিক যেমন প্রেমের পরিচয় দিতে পারে না, তথ্
অধৈর্য
পাতাগুলো না শুকিয়েই জড়ো করলে
আগুন ধরাবে বলে।
আগুন ধরল না। শুধু ধোঁয়াই উড়ল।
বিরক্ত হয়ে গাল পাড়লে সক্কলকে -
গাছকে, পাতাকে, বাতাসকে, আগুনকে
DILEMMA
Besieging Me, You sit beside
and touch Me like a fickle air ;
calling Me afar away,
as a shining luminous glare !
Sitting beside, You fetch tear...
with moist tune in 'Rainy Silence' ;
You turn your face & stir up doubt,
like a gloom so deep & dense !
জীবন-মরণ
তার আসা যাওয়া
আমার বুকের অলিতে গলিতে যখন তখন
এখানে ওখানে তার পায়ের ছাপ
যেখানে যেখানে নরম মাটি
সে যে নরম মাটিতেই হাঁটে, শুনেছি তার কোমল চরণ
মরণ রে, তুঁহুঁ মম শ্যাম সমান
মৃত্যু আর প্রেম - সুতোর মত পার্থক্য দুটোর রহস্যময়তায়। ভীষণ আগ্রহ আমাদের - কেমন করে হল? কিভাবে হল? কি করে হয়? কিরকম লাগে সেই সময়টায়? মৃত্যুতে ভয় মিশ্রিত কৌতুহল, উত্তেজনা। আর প্রেমে উত্তেজনা মিশ্রিত উদ্বেগ।
মূর্খ হয়েই বাঁচি
আমার দিদিমা
ঘুম থেকে উঠে মাটিতে পা রাখার আগে
মাটিকে প্রণাম জানাতেন
আমি জানাই না। মাটি জড় আমার জ্ঞানে।
দ্বিধা
তুমি পাশে বসে।
হাওয়ার মত চঞ্চল
তবু আমায় ঘিরে
আমায় ছুঁয়ে।
জাগাও পথিকে সে যে ঘুমে অচেতন
তুমি বলো
তুমি অনুরোধ করলে
কবিতা লিখতে পারিনি কোনোদিন
আজও পারি না।
আমি কবিতা লিখি তোমার চোখের জন্য
তোমার চোখের ভাষায় কথা বলার শব্দদের খুঁজি
মাঝি
দোতলা
ভালোবাসা শিখিয়েছে আলো জ্বালা
আমায় বাতাস শিখিয়েছে ভাসা
আমায় আলো শিখিয়েছে দেখা
আকাশের চোখে তারার নতুন গল্প
বাঁকা রাস্তা
বাঁকা রাস্তা। সোজা হাঁটার চেষ্টা করো। তুমি আদর্শবাদী।
বাঁকা রাস্তা। বাঁকা হাঁটার অভ্যাস তোমার। তুমি সুবিধাবাদী।
বাঁকা রাস্তা। রাস্তাটাকে সোজা করার চেষ্টা করো। আরে আরে পাগল হলি!
একা একা
খুব নিষ্ঠুর মানুষেরাই একা একা বাঁচতে পারে। আমি পারি না। আমার একা বাঁচতে কষ্ট হয়। খালি দেওয়াল দেখতে ভালো লাগে না আমার। মন খারাপ লাগে। দেওয়ালের একটা পিঁপড়ে অন্তত খুঁজি।
কল্যানী বই উৎসব ২০১৭
অনেকদিন পর বইমেলায় থুড়ি কল্যাণী বই উৎসবে এত ভালো বাদাম খেলাম। একটাও পচা বাদাম পেলাম না। মেলায় ঢুকতে টিকিট পঞ্চাশ টাকা নিল। বাইক রাখতে কুড়ি টাকা।
কবে যেন
তোমার ঠোঁট রেখেছিলে আমার ঠোঁটে
কয়েক নিমেষ
হাওয়ার সাথে মিলিয়ে গেলে পরক্ষণেই
ওম
ওমেরও জাগতে ইচ্ছা করল না
ঋতুরও করেনি
কেন?
কাজ ফুরিয়ে গিয়েছিল?
বাড়তি শ্বাস-প্রশ্বাসে ঋণী হতে চায়নি?
When you try
সফল
কোথায় তুমি?
বলেছিলে, ছায়ার মত তোমার সাথে আছি
ঠিক বলেছিলে।
বুঝলাম, যেদিন অন্ধকার রাস্তায় হাঁটলাম
কোথায় তুমি?
অ-সভ্য
ভাঁড়ে চা দাও
একটু না হয় মেটে গন্ধ থাক
লাওপালাগুলো তুলে রাখো
নীলপাখী
ওপার
নিয়ে যাওয়া যায় না
ফিরে আসা যায় না
রেখে যাওয়া যায়
ফেলে যাওয়া যায়
এখানে ওখানে
উচ্ছিষ্ট খুঁজে ফেরে স্মৃতিরা
সরে দাঁড়াও
সরে এলাম
তুমিও একটু সরে দাঁড়াও
মাঝখান থেকে অভিমানগুলো বয়ে যাক
ক্ষেতে জমে থাকা বর্ষার জলের মত
মিশুক নদীতে
তুমি একটু সরে দাঁড়াও
বিষ্টুবাবু
...
শুভ নববর্ষ
দাবী একটাই
ইচ্ছা একটাই
বাসনা একটাই
লোভ একটাই
স্বপ্ন একটাই
সবাই মিলে
কাছাকাছি থাকি
পাশাপাশি থাকি
ঘেঁষাঘেঁষি থাকি
এমনি ভাবেই
শুভ নববর্ষ