মিথ্যাই তো
আমি
আমি
অস্তিত্ব
নিরবচ্ছিন্ন অব্যক্ত যন্ত্রণা
মাঝে মাঝে ভুলে থাকার চেষ্টা
জীবন
পাথেয়
কে সে?
গিঁট বাঁধতে গিয়ে জট পাকিয়ে ফেলেছে কি?
জট মানে কি অনেকগুলো অসম্পর্কিত গিঁট?
পাতার উপর শিরার যে বিন্যাস
শুকনো হলে কঙ্কালের মত তা
উদাসীন যাযাবরের তাঁবুর তলায় মদের পাত্র
সে পাত্রের মদে বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে ও কে?
যাযাবরের চিন্তার মরুভূমিতে আরেক যাযাবর?
নাকি সন্ন্যাসী?
যাযাবর কি তবে ঈশ্বরহীন সন্ন্যাসী?
ধ্যাৎ
আশ্চর্য গায়ের গন্ধ তোমার
বিকালের বাতাসের হাতে লেগে আসে
যে পাকা ধানের গন্ধ ধানক্ষেত থেকে
সেই রকম
মাটিতে বুকটা
এক মহাকাশ ব্যর্থতা
কখন যেন উঠতে উঠতে তেরো তলা অবধি উঠে আসলাম
আলো বাতাস আকাশ বদলালো না
মাটির সাথে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে আমি বদলাতে লাগলাম
আমার গায়ে লাগল ঈর্ষার ঘুণ
বিষাদ শীতলতায় রক্ত চলাচল কম শরীরে
হাঁটতে চলতে ব্যথা এখানে ওখানে
অথচ এখনো অনেক তলা চড়লেও যেন চড়তে পারি
থাপ্পড়
বিছানায় আলকুশি ছড়িয়ে তাকে নিয়ে ছাদে যাও। আকাশের দিকে তাকাতে বলো তাকে। তুমি তার চোখের দিকের তাকাও।
দেখো, সে মুগ্ধ হচ্ছে কিনা? যদি দীর্ঘশ্বাস ফেলে, জানবে ওর ভিতরে চাপা একটা গরম হাওয়ার মত দুঃখ মিলিয়ে গেল। আকাশ কখনো গরম হয় না। তাই সব গরম হাওয়া টেনে নিতে পারে।
হিসেবী
এ ভাবেই প্রেম বাঁচে
প্রেমপত্র লেখ
রোজ একটা করে প্রেমপত্র লেখ
তারপরে ডাস্টবিনে ফেলে দাও
কাগজকুড়ানি নিয়ে যাক
প্রেম বেওয়ারিশ
আরেকটা নতুন পাতা টেনে নাও
অভ্যাসে অসাড়
অভ্যাসে অসাড় আঙুলের সব চলাফেরা
একটু ভালোবাসার জন্য রং ফুটে হাঁটা
নির্জন অর্গাজম
অর্গাজমে পৌঁছালে সবাই একা
শরীর থেকে মুখ ফিরিয়ে
তুষ জমা নীড়ের ভিতর ফিরে আসা
রাতের অন্ধকারে কয়েকটা জোনাকি
ওরা পথ দেখিয়ে নিয়ে চলেছে যুগযুগান্ত ধরে
তোমার আমার খিদেকে
ফ্রীজে রাখা বাসি মাংসের দিকে
রান্না না হলে বাসি হয় কিছু?
DESTINED
হিন্দীভাষাঃ একসূত্র
হিন্দীভাষা নিয়ে আমাদের একটা ছুঁচিবাই আছে। আমরা হিন্দী গান শুনব, হিন্দী সিনেমা দেখব। কিন্তু হিন্দী ভাষাটা লিখতে বা পড়তে শিখব না। দক্ষিণ ভারতে এ গোঁড়ামি আরো ভীষণ। হিন্দী আমাদের জাতীয় ভাষা – এ কথাটা ভুল। জাতীয় ভাষা আমাদের সবক’টাই। মানে বাইশটা ভারতীয় ভাষাই জাতীয় ভাষা। সেখানে হিন্দী আর ইংরাজী আমাদের কাজের ভাষা, বা official language.
এতটাই
সেখানেই হোক শেষ ...
মনে পড়ে
সারাদিন কত কাজে থাকি ...
মেরুদণ্ডেরও হৃৎপিণ্ড
যদি মরণ নদীতে পা ডুবিয়ে
অবসাদের দলঘাস কাটো ...
Lotus-Petal Light
Came with a drizzle of love...
The rain kissed my face, my eyes, my lips...
পদ্ম-পাপড়ি আলো
খুব ভোরবেলা থেকে চারদিকে আমার
ঝিরঝিরে ভালোবাসার ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি
আমার মুখে চোখে ঠোঁটে লাগছে
ঝরেঝরে পড়ে যাচ্ছে,
পায়ের পাতা, হাতের আঙুল
ভিজিয়েছে বিন্দু বিন্দু ভালোবাসারা
আমি পুরোপুরিভাবে ভিজে
বিলুজ্যাঠা
লোকটা হনহন করে হেঁটে যাচ্ছিল। সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা হবে। এই গ্রামের দিকটায় এই সময়টা শীতকালে বড় একটা বাইরে কাউকে দেখা যায় না। চারদিকের বাড়িগুলোর জানলা বন্ধ। লোকটা একা একাই হেঁটে চলেছে। মাথাটা মাফলার আর কান ঢাকা টুপিতে মোড়া। শুধু চোখদুটো বেরিয়ে আছে।
ভুল গল্প
দরজা খোলা ছিল। দমকা বাতাস ভিতরে এসে পড়ল। কড়ি-বরগা, দেওয়াল, মেঝে রে রে করে উঠল। গেল গেল গেল সব গেল। কে খুলে রেখেছিল দরজা? - হুঙ্কার দিল ছাদ।
খাটের তলার জমে থাকা অন্ধকার গুটিগুটি পায়ে বাইরে বেরিয়ে এসে বলল, আমি। তার মুখে নম্রতা আছে, কিন্তু লজ্জা নেই। শ্রদ্ধা আছে, অথচ অনুতাপের গ্লানি নেই। সক্কলে তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। মনে মনে বলল, বেটির ক্ষমতা আছে। মুখে বলল, তবে রে!
দ্বিধা
বলতে আটকাচ্ছে
দ্বিধায় হোঁচট খেলাম ক'বার
(গুনিনি)
চিন্তার রাজ্য অবিভক্ত
কে বলল?
সীমারেখা আছে তো!
আছে বুনো ঝোপঝাড়
না চলা, অতি চলা, কম চলা পথ
অসতর্ক হয়ে কাঁটা ফোটেনি পায়ে?
আচমকা কুয়াশায় রাস্তা হারায়নি?
মেহেদি হাসান
সব প্রেম হারিয়ে গেলে
মেহেদি হাসান আছে
অনেক জন্ম এমনি এমনিই
বন্ধক ওর কাছে
এসো
কেন এসেও এলে না?
আমি অন্যমনস্ক ছিলাম?
না তুমি ছিলে সংশয়ে?
একবার সব ছেড়ে এসো
মনে হবে
একদিন সব ছেড়ে গিয়েছিলে
ভাগ্যে
ভাগ্যে তুমি আমার সামনে অতবড় প্রাচীরটা তুলেছিলে,
না হলে জানতেই পারতাম না - আমি এতটা উঁচুও চড়তে পারি!
ভাগ্যে তুমি আমার সামনে এতটা অন্ধকার তৈরি করেছিলে
না হলে জানতাম কি করে- আমি এত অন্ধকারেও দেখতে পারি!
দু-মুখো আয়না
ভিতরে যেন দু-মুখো আয়না বসানো। বাইরের দিকে মুখ করা যেদিক, তাতে পড়ছে বাইরের ছবি। আর ভিতরের দিকে মুখ করা যেদিক, সেদিকে পড়ছে ভিতরের ছবি।
বশীকরণ
নিবারণ সমাদ্দার ওলটা সিদ্ধ করতে দিয়ে চুপ করে তার দোকানের সামনে এসে বসে আছে। নিবারণের দোহারা মাঝারি উচ্চতা। চাপা রঙ। বেশ গোলগাল মুখ। একটা নীল শার্ট আর ধুতি পরে দোকানের সামনের বেঞ্চে বসে পা দুলাচ্ছে। বয়েস এই পঞ্চান্ন'র কাছাকাছি হবে। বাড়িতে স্ত্রী আছে (বাসন্তীদেবী, লোকে বলে উনি বাপের বাড়ি গেলে নাকি পাড়ায় কাক-চিলের সংখ্যা বেড়ে যায়) আর এক মেয়ে, নাইনে পড়ে, ফুলটুসি।
বিকল্প
সারাটা জীবন এমন ভাব করলে
যেন তোমার জমিতে রয়েছে শুধুমাত্র একটা আগ্নেয়গিরি
আর তোমার কাজ যেন একটাই -
সকাল সন্ধ্যে, বর্ষা বসন্ত
শুধুই অগ্ন্যুৎপাত ঘটানো
কেন গো
জমিতে একটা বাগান করলে কি হত?
শক্তি মানে কি শুধুই আগুন?
শিকড় না?!
তবে ধৈর্য মানলে না কেন?
নোনতা কমলালেবু
একটা কমলালেবু। তুমি দাঁড়াও,
আমি একটা একটা কোয়া ছাড়িয়ে তোমার হাতে দিই,
তুমি খাবে কি না খাবে, তা শুঁকে দেখে ঠিক কোরো ...
অপেক্ষা
সকালের আলোয়
ফুটবে বলে ...
নীলাচলে তিনদিন
আজীবন
নিজের থেকে পালাবে বলে ঈশ্বরকে খুঁজলে আজীবন
ঈশ্বরের মুখোশের আড়ালে কে যেন ভয় দেখিয়ে গেল তোমায় আজীবন
কলঙ্কে তোমার ভয়
তাই কলঙ্ক সৃষ্টি করলে মনের আনাচেকানাচে
ওদের ধুয়ে ধুয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখলে আজীবন
FEAR
as long as, it is Upright,
ভুলে যাও
প্রতিবার তোমার হাত ছুঁতে গেলে ভয় হয়
মনে হয়, বুঝি ধরা পড়ে যাব!
সব দুর্বলতাগুলো
স্পর্শে অনুদিত হবে
তুমি ছুঁয়ো না আমায়
দূরে থাকো
অজস্র সহস্র মুহুর্ত দূরে থাকো
ভয়
ততদিনের নিশ্চিন্ততা
যতদিন একেও নকল না করে
বাজারে আনে কালো ছাপ
ফাঁকি যদি ধরতে না পারি
নতুন বন্দুকের যতই বড়াই করি
ওদিকে বাঘেও শিখছে নতুন লাফ
তাই মনে বাসি ভয়
কোন ক্ষমতা রাতারাতি
আবার রাজ ইঙ্গিতে লোপ হয়
সরিষার মধ্যে ভুত
দুষ্ট মাছ ধরা পড়িবে, জাল বিছানো হইল। জালে ধরা পড়িতে লাগিল, খাবি খাইতে লাগিল শুধু চুনোপুটি। রাজা বলিলেন, বড় মাছ কই?
পাত্র-মিত্র-সভাসদ আদি সবাই কহিল, তাই তো, বড়মাছ কই?
মন্ত্রী কহিল, আসিবে।
পাত্র-মিত্র-সভাসদ সক্কলে কহিল সমস্বরে -
আসিবে, আসিবে, আসিবে
ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়
রাজা মশায়ের কাছে খবর আছে, কারা যেন বেশি বেশি খায়। রাজা মশায় পাত্র-মিত্র-সভাসদ আদি সক্কলরে ডাকেন আর প্রশ্ন করেন - তোমরা জানো কে কে বেশি খায়? পাত্র-মিত্র-সভাসদ আদি কেউ বলল, হ্যাঁ, কেউ বলল, না। রাজা বললেন, তা তোমরা তাদের আটকাতে পারো না?
সব্বাই সাথে সাথে রে রে করে চীৎকার করে উঠে বলল, পারি না...পারি না...পারি না...
উচ্চতা
লোকটার থাকার ঘর চোদ্দতলায়
লিফটে করে ওঠে
জানলা দিয়ে নীচে তাকায়
ফুটপাথের সংসারকে দেখে আত্মশ্লাঘায়
ফুটপাথে প্লাস্টিক মোড়া ছাদের নীচে একার সংসার
সে প্লাস্টিকের ফুটো দিয়ে দেখে শরতের আকাশ
শোনো
গোড়ায় একটা মস্ত ভুল হয়েছে
কি খুঁজছ তুমি? প্রেম?
ভুল করছ
ছট
বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো
কারো কারো হৃদয়
মুখের সাথে মনের দেখা হয় না বলে ...
ইচ্ছে ! –ইচ্ছে
আনন্দলহরী
যুদ্ধ ও শান্তি
আমার মালিকানা
সময়, আলো, মাটি সব মিলিয়ে
তখন তোমায় পুরোটা পাই না। ...
তাই হয়
তুমি কি আকুতি ভরা দৃষ্টিকে উপেক্ষা করে, 'না' বলোনি মুখের উপর?
তুমি কি সাহায্য চাওয়া দুটো হাতের সামনেই দরজাটা ধড়াস করে বন্ধ করোনি? ...
Your eyes
Your biography
Like two crystals of frozen anguish ...
প্রাচীনা
যেন খুব আলাদা কিছু বলার ছিল
আলাদা শব্দে,
আলাদা ভাবে,
আলাদা সুরে
বলতে গিয়ে বেরোলো সেই চিরাচরিত ধারা-
তোমার সময়
তোমার সময় তোমার জন্মসূত্রেপ্রাপ্ত সম্পদ। উত্তরাধিকারে পেয়েছো মহাকালের থেকে। কারোর থেকে ধার করে পাওয়া না। তাই তা কখন কিভাবে তা ব্যবহার করবে, তা সম্পূর্ণ তোমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
কেউ সে সম্পদের ভাগ চাইতে পারে, দাবী করতে পারে না। আর তুমি তা দিতে না চাইলে, সে যদি কৈফিয়েৎ চায়, সে তো নিতান্তই জুলুম!
ভাইফোঁটা
বুকের ভিতর চিচিংফাঁক ...
দিদি-বোনেরা
শোনো নাগো কথা কিছু করি নিবেদন