ঋণ
স্বামী আমায় ভীষণ ভালোবাসতো
হ্যাঁ ভালোবাসতোই বলছি-
মারা গেছে?
বালাই ষাট! মরবে কেন?
আছে বেঁচে বর্ত্তে
শুধু নুন দিয়েছি তার ভালোবাসার মুখে।
কাঁপন
নীল আকাশকে পিছনে রেখে
নারকেল পাতার দল
কাঁপছে বাতাসে থরথরিয়ে।
একটা কাঠবেড়ালির লাফ
পাতার সাথে আকাশে ধরালো কাঁপন।
অন্বেষণ
জানলাম নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী ভেঙ্কি রামকৃষ্ণন রয়্যাল সোসাইটিরর কর্ণধার হয়েছেন। গর্বিত হলাম। অবশ্যই তা ভারতের সাথে নাড়ীর যোগ থাকার জন্য। কিন্তু পরক্ষণেই মনটা দমে গেল। আচ্ছা আমরা আমাদের দেশে থেকে পারি না কেন?
জঞ্জাল
কই শান্ত হলাম?
কই ক্ষমার আলো বুকে জ্বলল?
কই ভালোবাসার স্নিগ্ধতা
সকালের আলোর মত জড়িয়ে থাকল হৃদয়?
ওই তো, গভীর রাগ
বুকের মাটিতে পোঁতা - মরেনি তো!
ওই তো, লোভের লতাপাতার গায়ে
ঈর্ষার বিষফল ফুটে আছে থরে থরে!
ওই তো, প্রতিহিংসার ধিকি ধিকি আগুন
ফুঁসে চলেছে কালো অন্ধকারে!
কাঁদা
অসহ্য ব্যাথা গায়ে হাতে পায়ে। লোকটা হাঁটতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল কাদায়। সারা গায়ে কাদা। শুধু কাদা? না পাঁক। কি বিশ্রী দুর্গন্ধ। অবশ্য দুর্গন্ধ তো বিশ্রী হবেই। লোকটা উঠতে গিয়েও উঠতে পারছে না। আরো কাদার মধ্যে দেবে যাচ্ছে। কাদার মধ্যে শামুকের ভাঙা খোলে ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে গা হাত পা।
আঁচড়
আমার সারা বুক ক্ষত-বিক্ষত
তোমার চোখের আঁচড়ে
তবু আসি কেন জানো?
মরণ যে কাছ থেকে এত সুন্দর,
তোমায় না দেখলে জানতাম কি করে?
শান্তি আনন্দ প্রেম
শান্তি-
নিজেকে ভুললে
তোমায় ভুললে না।
আনন্দ-
তোমায় চাইলে
নিজেকে চাইলে না।
প্রেম-
তোমায় ঘিরে
নিজেকে ঘিরে না।
কখন এলে?
ভাবলাম তোমায় বৈরাগ্যে ভোলাবো
তুমি তাকালেই না।
ভাবলাম তোমায় পাণ্ডিত্যে ভোলাবো
তুমি গুরুত্বই দিলে না।
ভাবলাম তোমায় স্তবে ভোলাবো
তুমি শুনলেই না।
শেষে উদাস হয়ে, নিজের পাশে বসলাম, একা-
কখন এলে!
স্পর্ধা
দুটো শরীর ভীষণ কাছে এলো
মনকে ঠেলে সরালো।
অন্ধ ওরা দু'জনেই এখন
একে অপরকে হাতড়ে খুঁজছে-
খুঁড়ছে সন্দেহে
ক্ষত-বিক্ষত শরীর দুটোয়
শুধুই স্পর্ধা আজ।
সাগরের নীর
যাকে বাইরে দেখলাম নানা
তাকে ভিতরে দেখি এক
এক কুঁড়িতেই সহস্র দল
মন একটু তলিয়ে গিয়ে দেখ
বাইরে যতই ছোটাছুটি রে
ভিতরে সে এক স্থির
তার চোখে চোখ রাখতে পারলে
মন মাঝ সাগরের নীর
জাগা রাত
অনেক রাত।
কিছু তারা জেগে,
কটা প্যাঁচা আর পাড়ার কটা কুকুর-
ওরাও জেগে।
আমিও জেগে।
আমার চোখ আর হৃদয় পাশাপাশি শুয়ে
চোখ দেখেছে তোমার চোখ আজ
হৃদয় ছুঁয়ে এসেছে তোমার মন
ওরা দুজনে এখন তোমার কথাই বলছে
আমি শুনছি,
ঘুম ক'বার এসে ফিরে গেছে,
তা যাক।
দুই না
প্রথমে ভাবলাম,
শরীর থাকলে তুমি যাবে না।
শরীর ক্লান্ত হয়ে বলল, আর না।
তারপর ভাবলাম,
প্রাণ থাকলে তুমি যাবে না।
প্রাণ দৌড়ে হাঁপিয়ে বলল, আর না।
এরপর ভাবলাম,
মন থাকতে তুমি যাবে না।
মন কল্পনার ফানুস ফেটে পড়ল,
বলল, আর না।
ভাবলাম, সব হল শেষ
তুমি গেলে চলে বুঝি
আর রাখতে পারলাম না।
কি হবে
এত ঔদ্ধত্য তোমার!
কি হবে-
যদি শেষরক্ষা না হয়!
চোখের জল না বুকের আগুন
কার কথা শুনবে সেদিন?
নাকি,
দীর্ঘশ্বাসকে দীর্ঘ করবে আরো-
যতদূর যায় ভাঙা অহঙ্কারের ছায়া?
ভরা বাদর
জাগো
অচেনা রাস্তা, চেনা লাগে তোমার
অচেনা তুমি সবার কাছে তাই
ঝুঁকিকে নাও মুঠোর মধ্যে পুরে
সাবধানীরা এড়িয়ে চলে তাই
দাঁড়াও একটু, আরেকটু যাক বেলা
দেখবে সবাই আশেপাশেই আছে
যাবে কোথায়?
চারদিকে যা নরককুণ্ড জ্বালা!
এবার তুমি একবার দাও ডাক
তোমারই দিকে অলক্ষ্যে সব চেয়ে
দেবেই, জেনো দেবেই মরণ ঝাঁপ!
দাঁড়িয়েছে তারা, বহু অপমান সয়ে
কিছু কথা
কিছু কথা শব্দ হতে ভয় পায়
পাছে তার অনুভব আবিলতায় ঢেকে যায়।
কিছু অনুভব কথা হতে ভয় পায়
জানে, শব্দ এত ভারে ভাঙবে দুর্বলতায়।
কিছু দুর্বলতা আড়চোখে ইশারায় বলে-
"ঢাকো ঢাকো আমায় মিথ্যার কৌশলে"
সব সত্যি-
সত্যি কথায় থাকে না আটকে
কিছু মিথ্যার বেশে ফাঁকি দিয়ে যায়
বুদ্ধির বেড়া টপকে।
কিছু শব্দ
কিছু শব্দ চেনা
কিছু শব্দ অচেনা
স্বপ্নগুলো-
এই চেনা-অচেনার ফাঁকে
নিজেকে হারালে
নিজেকে হারালে
আয়নার সামনে দাঁড়িও
নিজের দিকে তাকিও।
উঁহু, তোমার চোখে না
আমার চোখে নিজেকে দেখো
তুমি আমার প্রেমের মূর্ত ভাষ্য
এটা জেনো।
তুমি হারাবে না,
আমার যা কিছু সত্য
তা 'আমাদের' ঘিরে,
তোমারও তাই।
মানুষ সত্যে হারায় না,
হারায় মিথ্যাকে
সত্যে ফিরে।
নোঙরে কিছুটা সময়
নোঙরে কিছুটা সময় আটকে
বৈঠা সব শোধ করে দেবে
যদি পালে তোমার বাতাস পাই
ঈশ্বর আপনাকে
ঈশ্বর, কেমন আছেন? ভাল থাকার কথা নয় যদিও, জানি। শিশু আর পাগল ছাড়া ভাল থাকা খুব শক্ত প্রভু।
ফিরে আয়
বুদ্ধি
বুদ্ধির সীমাবদ্ধতাকে জানাই হল বুদ্ধিমত্তা। তাই ভালোবাসার প্রথম ধাপ। কারণ তা অহংশূন্য। একমাত্র ভালোবাসাই জানা-অজানাকে পাশাপাশি রেখে চলতে পারে স্বাচ্ছন্দ্যে। অহংকার তা পারে না বলেই, শুধু 'জানা'র দিকে ঝুঁকে চলতে চায়। আর কিছু দূর গিয়ে পড়ে মুখ থুবড়ে।
কিছু না
আমায়-
সফল হতে হবে
জ্ঞানী হতে হবে
গুণী হতে হবে
ধনী হতে হবে
মানী হতে হবে
সবেতে জিততে হবে
সব্বাইকে হারাতে হবে
এত চাপ কে দিল রে মাথায়?
হব না কিছু
যা ভাগ!
সাড়া দাও
প্রয়োজনের চাদরটা সরিয়ে
তাগিদকে পিছনে রেখে
দু-পা এগিয়ে দেখো-
তোমার অপেক্ষায় অনেকে আছে
অপ্রয়োজনের আমন্ত্রণ হাতে করে
সাড়া দাও।
সান্ত্বনা
একটা ব্যাথা
আরেক ব্যাথার দ্বারে
সান্ত্বনা খুঁজে ফেরে
না হয়
মনে কোরো না তোমায় আমি দেখতে পাচ্ছি না।
ভুলেও ভেবো না সে কথা।
ঈশ্বরও তোমায় ভুললে ভুলতে পারেন।
আমি পারি না এক দন্ডও
এমনকি তুমি লক্ষ যোজন দূরে থাকলেও।
ছাড়বে না তো?
সে বলেছিল, ছেড়ো না আমায়।
আমি ছাড়িনি।
মৃত্যু এসেছিল না বলে
মাঝপথে।
সেদিন আবার কেউ বলল,
ছাড়বে না তো?
আকাশে যতদূর চোখ যায় তাকালাম,
কোনো মেঘ নেই।
মাটিতে কান পেতে শুনলাম,
কোনো কম্পন নেই।
সমুদ্রের ধারে এসে দাঁড়ালাম
ঝড় নেই।
দ্বিধান্বিত কণ্ঠে বললাম-
ছাড়ব না
এখানেই
অবশেষে ফিরে আসলাম
যাওয়ার আগে যেখানে ছিলাম
সেখানেই
সোজা পথ না
একটা বৃত্ত পাড়ি দিলাম
এখানেই
কোথায় গেলে
বুকের ভিতর তীর বিঁধল
তুমি এলে?
চোখের পাতা ঝলসে গেল
তুমি তাকালে?
শ্বাস-প্রশ্বাসে ঝড় উঠল
তোমার গন্ধ এলো?
মন্দ- ভালো গুলিয়ে গেল
আমায় ছুঁলে?
সব কিছু যে থেকেও নেই
কোথায় গেলে?
পার্থ দে
পার্থ দে আর কঙ্কাল। আলাদা করে কিছু বলার নেই। রোমহর্ষক, ভয়ংকর, রহস্যজনক সন্দেহ নেই।
পিঁপড়ের সারি
পিঁপড়ের সারি ডিম মুখে করে
দেওয়াল বেয়ে উঠছিল
আকাশ ছেয়ে কালো মেঘ এলো।
জল বলল, ডুবিয়ে দেব
বাতাস বলল, উড়িয়ে দেব
মানুষ বলল, হারিয়ে দেব।
পিঁপড়ের সারি ডিম মুখে করে
উঁচু গর্তে বসেছিলো।
জল থামল
ঝড় থামল
মানুষ ভুলল
পিঁপড়ের সারি ডিম মুখে করে
দেওয়াল বেয়ে ফিরছিল।
চোখের কাজল
চোখের কাজল চোখকে বলল-
আমার জন্যই তোর রূপ ভাই
চোখ বলল, হ্যাঁ-
অপর জনের চোখেই শুধু পড়া চাই
উইয়ের দাগ
ইঁট বেরোনো বারান্দায়
হাড় বেরোনো মানুষটা
বেতের চেয়ারে বসে।
চেয়ারের নীচে ঘুণের শব্দ
দেওয়াল জুড়ে উইয়ের দাগ।
বোসো
রোদ পড়ছে সবুজ পাতায়
সবুজ পাতা রোদকে বলল-
এসো।
বিছে
ঘর মোছার ন্যাতার নীচে একটা বিছে থাকে। বাড়ির বৌটা জানে আর কাজের মেয়েটা জানে। কেউ কাউকে বলেনি কোনোদিন। তবু দু'জনেই জানে যে তারা জানে। সাবধানে হাত দেয়। ঘাঁটায় না। কারণ ন্যাতাটা ছাড়া ঘরের কাজ হবে না। ঘরের কাজ না হলে, ঘরে থাকার অধিকারও থাকবে না।
কেউ খেলছে
কেউ খেলছে
তবু খেলছে না
কেউ খেলছে না
তবু খেলছে
চোখের কোণায়
চোখে জল আসেনি এখনো।
তবে আসত।
চোখ বোঝার আগে,
তুমি বুঝলে কি করে?
সে জল তোমার চোখের কোণায়
মাটি
রজনীগন্ধার দিকে গোলাপ চেয়ে বলল,
আমার কই অমন সৌরভ?
গোলাপের মুখে চেয়ে রজনীগন্ধা দীর্ঘশ্বাস ফেলল-
আমার কই অমন রঙ?
ঘাস দুজনের কথা শুনে নিজের দিকে তাকাল, হাসল, বলল-
ভাই আমার না আছে রঙ, না আছে বাস
আমার আছে যা, তা তোমাদেরও তো আছে
যা সব চাইতে খাঁটি-
গোলাপ সাথে রজনীগন্ধা বলল-
কি?
ঘাসের দল সমস্বরে বলল-
মাটি মাটি মাটি....
এ হৃদয়
এ হৃদয় বারোয়ারী আজ
কোথায় কখন কার খোঁজে থাকে
খেয়াল রাখি না আর
ওর কান্না হাসি আশা হতাশা খুব চেনা আমার
বিশ্বাস করে ঠকে যাওয়া
বিশ্বাস না রাখতে পারা
এগুলো জলভাত এখন আমার কাছে
এমনিই ভালোবেসে
একটা ছোট্ট ঘাস
রাস্তার ধার ঘেঁসে
চাকার, পায়ের ধূলো
তাকে ঢেকেছে একশেষে।
হঠাৎ একবিন্দু জল
আকাশ থেকে এসে
ধুইয়ে দিয়ে গেল তাকে
এমনিই ভালোবেসে।
মা
একটা বাচ্চা পার্কের স্লিপে
উঠছে হাসছে নামছে
মা দাঁড়িয়ে দেখছে।
স্লিপের নীচে মা কুকুরটা
বাচ্চাগুলো নিয়ে ঘুমোচ্ছে।
বিশ্বাসহীন
বিশ্বাসহীন উদ্বাস্তু একটা মানুষ
সকাল থেকে চৌকাঠে দাঁড়িয়ে
ওর বাইরে যেতে ভয়
ওর ভিতরে থাকতে সংশয়।
কবে?
মেসেজ আসার শব্দে
ফোন আসার শব্দে
কলিংবেলের শব্দে
কবে মিশেছো?
বাইরে রাখা জুতোর তাকে
আলনায় কাপড়ের মাঝে
চশমার খোলা খাপে
কবে ঢুকেছো?
আমার চায়ের কাপে
উড়ন্ত চুলের ফাঁকে
আমার ঘামের গন্ধে
কবে এসেছো?
আমার টুথপেস্টের ভাগ
মাথার বালিশের ভাগ
একফালি অবকাশের ভাঁজ
কবে চেয়েছো?
জানলা
খোলা জানলা
বাতাস এলো তোমার গন্ধ নিয়ে
বন্ধ জানলা
আমার গন্ধে বাতাস উঠল ভারী হয়ে
উনুন খুঁড়ে
অনেক শরীরের স্বাদ পেতে পেতে
যে মানুষটা হৃদয়ের স্বাদ ভুলল-
সেদিন সে বুকে হাত দিয়ে দেখে
খুব বড় একটা অন্ধকার গর্ত
তার অনেক নীচে একটা গরম চাটু
সে জল খুঁজছে এখন, উনুন খুঁড়ে।
তোমার দৃষ্টি
তোমার দৃষ্টি
আমার অদৃষ্টের পথ ঘিরে
তোমার হাসি
আমার বাধা-বিঘ্ন চিরে
খোঁজ
সাজানো কথা ক্লান্ত হয়ে ফিরে
নীরবতায় ঘুমিয়ে পড়ে রোজ
নীরবতা সারা আকাশ চেয়ে
ধ্রুবতারার আবার আনে খোঁজ
লাল টকটকে সিঁদুর
বাজার করতে ফুটো ব্যাগ
জল আনতে ফুটো হাঁড়ি
কুটনো কুটতে ভোঁতা বঁটি
রান্না করতে বাঁকা বাসন
যে হাত দুটোতে এ সংসার-
সে হাতে দুটো সাদা ধবধবে শাঁখা
আর তাতে লাল টকটকে সিঁদুর
নীল আঁচল
তখন মা অসুস্থ। তবু কয়েকদিন কিছুটা সুস্থ আছেন দেখে নিজেই একদিন আমায় বললেন, সারা দিন আমায় নিয়ে থাকিস, বাইরে কোথাও থেকে একটু ঘুরে আয়।
মরার তার সময় আছে নাকি
রোজ রাতে যে মরতে পারলেই বাঁচে
পরের দিন সে সবার আগে ওঠে
ফুল চোরকে দেয় গালি
উঠোন ধুয়ে, চা বসায়
মরার তার সময় আছে নাকি?
বৃত্ত
সবই আছে, সবই হচ্ছে
তবু কোথায় যেন
একটা ছেড়ে যাওয়ার ব্যাথা
একটা শূন্যতা,
তরী মাঝ সমুদ্রে বলে?
জানি না।
এত গতি, এত টানাটানি, কাড়াকাড়ি
হাসি কান্না আশা হতাশা - সব কোন কালের গহ্বরে হচ্ছে লীন?
সেখানে গেলে কি আমার ফেলে আসা অতীতের সাথে আবার হবে দেখা?
কেউই জানি না।
তবু মনে হয়,
মন বোধহয় কিছুটা তার আভাস রাখে।
মেঘ রোদকে বলল
মেঘ রোদকে বলল, ধর
ছায়া দীঘির জলকে বলল, ছোঁ
ফুল মৌমাছিকে বলল, আয়
ঝরাপাতা গাছকে বলল, যাই
প্রাণ অনন্ত অসীমকে বলল, আছি
তখনই বাধে গোল
অনেকে বাড়ির সামনের দরজার সাথে সাথে পেছনের দরজাও রাখে খোলা,
চালাকি করে।
যারা সামনে দিয়ে আসতে না পারে
তারা ঘুর পথে পিছনের দিক দিয়ে ঢোকে নির্দ্বিধায়।
মাঝে মাঝে -
কিছু পেছনের দরজা দিয়ে ঢোকা লোক সামনের দরজা দিয়ে ঢুকতে যায়
আচমকাই, অন্ধকারের ধাঁদায়
আর তখনই বাধে গোল।
তোমার অশ্রুত বাণীতে
তোমার অশ্রুত বাণীতে
আমার নিঃশব্দ কান্না
তোমার অদেখা উপস্থিতিতে
আমার অবলম্বনহীন আশ্রয়
যে মানুষটা
যে মানুষটা ডান হাতে সৎ
আর বাঁ হাতে অসৎ
তার কোন পাশে থাকব?
তুমি বললে, এমন মানুষ হয় নাকি?
বললাম, কোন মুখে বললে?
বাঁদিক ফেরানো মুখে
না ডান দিকে ফেরানো মুখে?
তুমি বললে, মানে?
বললাম, মানে?
বুঝলে না,
না বুঝতে চাইলে না?
ভয়
ভয় আতঙ্ক উদ্বেগ দুশ্চিন্তা....এদের পার্থক্য বোঝা খুব কঠিন। এদের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট হল, এরা খুব একটা যুক্তির ধার ধারে না। মনের মধ্যে অসম্ভব কল্পনাকে সম্ভব করে ভাবাতে এদের জুড়ি নেই। অকারণ, অযৌক্তিক এমন সব ভাবনার জাল বুনতে শুরু করে আর তাতে যে কখন আটকা পড়েছি - তা বোঝারও বিবেচনা শক্তি হারিয়ে যায়!
তোমারই মত
মন খারাপ আমারও করে
তোমারই মত।
মাঝে মাঝে সব ফেলে দিই ছুট-
আমিও ভাবি
তোমারই মত।
মাঝে মাঝে হাতের ঘামে
হাত পিছলে থুবড়ে পড়ি
তোমারই মত।
বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজেছি আমিও সেদিন
তোমারই মত।
সব ছেড়ে দিয়ে বাঁচতেই চাই
বেঁচে থাকাটাই সুখ বুঝি আজ
তোমারই মত।
তখনই
এবার আসলে
এবার আসলে
পায়ের নূপুর খুলে এসো
তুমি চলে গেলেও
ওদের আওয়াজ যেতে চায় না
এবার আসলে
গায়ে সুগন্ধী দিয়ে এসো না
তুমি ফিরে গেলেও
ওরা আমার চারপাশ ঘিরে ফেরে
এবার আসলে
কোনো কথা বোলো না
তুমি ফিরে গেলেও
কথাগুলো সব এ পাশ ও পাশ ভাসে
ঘরে-বাইরে
বাড়ির যেমন একটা বাইরের ঘর আর ভিতরের ঘর আছে, মনেরও সেরকম করে নিলে ভালো। কাকে বাইরের ঘরের থেকেই বিদায় করব আর কাকে ভিতরের ঘরে ডাকব - এ বিচারটা সহজ হয় তাহলে। না হলে ভুল লোককে ভিতরের ঘরে আনার মাশুল দিতে দিতে বেলা বয়ে যায়।