ও কিছু না
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
ঝড়ে আটকে গেলাম চায়ের দোকানে। টিনের চালে শিল পড়ছে। বারবার মোমবাতি নিভে যাচ্ছে। ঝড়ের দাপট সামলাতে টিনের দেওয়াল থরথর করে কাঁপছে। আর কাঁপছে কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়া।
এই মুহূর্ত
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
গুরু বললেন, তুমি যখন বাড়ি থাকবে তোমাকে তখন গিয়ে দীক্ষা দিয়ে আসব।
শিষ্য আশ্চর্য হয়ে গেল। বলল, তবে তো ভীষণ ভালো হবে গুরুদেব। আমার বাড়িতে আপনার পায়ের ধুলো পড়বে।
গুরু হাসলেন। বললেন, কাল সকালে আসব।
বাঁচতে গেলে একটা সুতো লাগে
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
যার কোনো কূলে কেউ নেই, সেও চায় তার যাওয়ার পথ কেউ অন্তত আটকাক। কেউ দাঁড়িয়ে বলুক, তুমি চলে গেলে আমার অসুবিধা হবে। তোমার থাকাটার একটা মানে আছে আমার কাছে।
যার কেউ নেই। তারও অভিমান হয়। কার উপর সে স্পষ্ট জানে না। কিন্তু হয়। কেউ চোখ মোছানোর নেই জেনেও সে চোখের জল ফেলে। সে রাগে। ভালোবাসে। কাকে সে নিজেও জানে না।
কোমল প্রাণে
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
ডাবগুলো সব বিক্রি হল। গ্রামে ফিরছে ফাগু। সোজা রাস্তা। খুব গরম। রাস্তার ধারে একটা শিবের মন্দির। ফাগু দাঁড়ালো। পকেট থেকে একটা পাঁচটাকার কয়েন বার করে মন্দিরের বারান্দায় রাখল। ফাগু শেখের বিক্রিবাট্টা ভালো হলে কিছু টাকা দেয়। ধর্ম দেখে না। জানে সবই এক। আব্বু একতারা বানাতে পারত খুব ভালো। খোলও বানাতো দারুণ। দূর দূর থেকে মানুষ আসত। তখন ফাগু কত ছোটো। ফাগু মানুষে বিশ্বাস করে। মসজিদ, মন্দির যাই পড়ে, ফাগু সামর্থ্যে কুলালে কোনো একটা জায়গায় একটা কয়েন রেখে দেয়। মানুষের জন্য। আল্লাহ যাকে দেখাবেন সে দেখবে।
মোড় ফিরিয়ে দে
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
গোঁসাই ভাবল স্টেশানে গিয়ে বসে। কিন্তু এই ফাঁকা রাস্তা। পাশে দীঘির জল। ঠাণ্ডা বাতাস, জুড়িয়ে যাচ্ছে শরীর। গোঁসাইয়ের সন্ধ্যে থেকে ভিক্ষা জোটেনি। যা হোক, না জুটুক। গোবিন্দের ইচ্ছা। সামান্য একটু মুড়ি ছিল। তাই খেয়ে একতারাটা বার করল। নাম গাইবে। নিঃসহায়ের সম্বল নাম ছাড়া আর কি? নাম মানেই প্রেম। প্রেম মানেই নাম। প্রেম মানেই সত্য। সত্য মানেই প্রেম। একতারায় সুর উঠল। নাম, প্রেম, সত্য - এক হল।
তারিখ তর্জা
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
ভদ্রেশ্বর স্টেশানে বসে আছি। ভরা গ্রীষ্মের দুপুর। কুলকুল করে ঘামছি। চোখটা বন্ধ করে বাড়ির কুয়োতলার কথা ভাবছি, তার শীতল জলের কথা ভাবছি, হঠাৎ শুনি সুমিষ্ট গলায় একজন বলছেন, এ বছরের এপ্রিল মাসের তিন তারিখ যদি রবিবার হয়, তবে আশ্চে বছর এপ্রিল মাসের বারো তারিখ কি বার হবে?
অন্ধকার, কিন্তু অন্ধ নয়
admin
1 May 2022
বুদ্ধ বললেন, আত্মা নেই। দুঃখই সত্য। বেদান্ত বললেন, আত্মা চৈতন্যময়। আনন্দই সত্য।
দুঃখ আর আনন্দ সামনা সামনি এসে দাঁড়ালো। সামনাসামনি দাঁড়ালেন যেন বুদ্ধ আর রামকৃষ্ণ। বুদ্ধ বললেন, নেই। রামকৃষ্ণ বললেন, সেও হয়। মা শূন্যও তো হয়। বুদ্ধ বললেন, সংসারে দুঃখই সত্য। রামকৃষ্ণ বললেন, দুঃখ সত্য। তবে দুঃখই সত্য নয়। আনন্দও আছে। তুমি যাকে বলো নির্বাণ। বোধে বোধস্বরূপকে অনুভব করা। সে অস্তি-নাস্তির পার।
মা-ও তাই বলেন
সৌরভ ভট্টাচার্য
20 April 2022
ধ্যান থেকে উঠে, নিত্যকর্ম সেরে মন্দির বন্ধ করে সাইকেলটা নিয়ে যখন রাস্তায় নামে পরমানন্দ, মনটা বিষণ্ণ হয়ে যায়। সমাজ আর তার ধ্যানের জগতে কিছুতেই বনিবনা হয় না। সমাজে এত অসামঞ্জস্য, এত অবিচার, এত দুঃখ, এত পাপ, এত নিষ্ঠুরতা।
বিন্দু
সৌরভ ভট্টাচার্য
20 April 2022
চিঠি হাতে আসার আগেই বৃষ্টির জলে ভিজে গেল। সব লেখা মুছে গেছে। পোস্টকার্ডের হলুদ রঙটা পর্যন্ত বদলে গেছে। ঠিকানা লিখে পাঠিয়েছিল। যে ঠিকানায় চিঠি পাঠাবার কথা ছিল তার। সে ঠিকানাই গেল হারিয়ে।
এক মুঠো সুখ নিয়ে
সৌরভ ভট্টাচার্য
20 April 2022
পটলা হয় তো ধৈর্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছিল। নইলে এমন কাণ্ড করবে কেন? পটলা কি করে এত বছর পর এরকম একটা সিদ্ধান্তে এলো, সে বিশ্লেষণ মনোবিদেরা করতে পারবেন, আমি না। আমি বলি পটলা কি করল।