অনুবাদ
সেনেকা
তুমি অন্ধ
অধীর হয়ে যাই
আছে কি সম্পর্কের বিন্দুমাত্র লেশ
আছে কি সম্পর্কের বিন্দুমাত্র লেশ
তোমার মায়ের সাথে মায়ের আমার?
কি আছে সম্পর্ক বলো
তোমার পিতার আর আমার পিতার?
যে তোকে দেয় কাঁটার জ্বালা
তোমার চোখের নীরব ভাষার
তোমার চোখের নীরব ভাষার
নিতল গহিন কথার মাঝে
ডুবতে দেবে?
আকাশছোঁয়া অহং আমার
তুচ্ছ নীরস পাতার মতো,
তোমার স্রোতে ভাসিয়ে নেবে?
হৃদপ্রাসাদের নিচের মহল--
অলিন্দ তার যত্নে খুলে,
পাতাল ছোঁবো,
ডাক পাঠাবো।
তোমার মত আমরা সবাই একাত্মলীন, কৃষ্ণশ্যামা--
আপন মনের আগল খুলে
এই পৃথিবীর রঙ্গ দেখি,
চোখের তারায় সুদূর মায়া
সন্ন্যাসী ও যুবক
দূরপাল্লার রেলগাড়ি। অনেক দূরে পাড়ি দেবে বলে স্টেশনে দাঁড়িয়ে লম্বা নিশ্বাস নিচ্ছে। জানলার ধারে বসে আছে একটি যুবক। তার ঠিক উল্টোদিকে এক সন্ন্যাসী উপবিষ্ট। যুবকের মুখটি ভারী বিষণ্ণ। পাংশুবর্ণ। সন্ন্যাসী নীরবে কিছুক্ষণ লক্ষ্য করে প্রশ্ন করলেন তাকে, সে চলেছে কোথায়? জবাব পেলেন না কোনো।
থমকে যাওয়া সময় দোলায়
থমকে যাওয়া সময় দোলায়
ছিন্নপাতা সত্ত্বাকে-----
পর্ণমোচী চেতনকে কোন
অস্তরাগের ঝড় ডাকে
আমার ঝরা পত্রছায়ায়
লগ্নজিতা প্রেমের মায়া
বেলাশেষের সুর আঁকে,
জীর্ণপাতার মলিন ঘরে
অলয় প্রেমের মধুর স্বরের
রাগরাগিণীর তান থাকে।
(অনুবাদিকাঃ সুকন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়)
আমার একটা ছোট্ট ভুবন আছে
আমার একটা ছোট্ট ভুবন আছে,
সাতসাগর আর লক্ষতারার মাঝে,
নিবিড় করে ধরা বুকের কাছে---
আপন, বড় আপন ভুবন আছে।
নগণ্য সেই পথের ধূলিকণা,
সবুজ পাতায় বৃষ্টিরই আলপনা-
রামধনুরঙ কাঁচপোকাদের ডানা--
সবাই আমার মনের বাসায় থাকে,
নীরব সুরের হাতছানিতে আমায় তারা ডাকে।
তাদের গহিন গোপন খেলাঘরের লুকোচুরির ছবি,
যত্ন করে আমার চোখে আঁকে।
তোমার নীরব বাঙ্ময়তা
তোমার নীরব বাঙ্ময়তা,
আমার নৈঃশব্দ্যপ্রাচীরের কানে কানে,
কথা বলে যায় কত---
আমার ভীরু, অস্ফুট
ভাষা যে ঠিকানাহীন--
তুমি ধারণ করোনি তাকে আপন সত্ত্বামাঝে---
তুমি হরিণছন্দে এসো--
আমার অশ্রুমুকুল চয়নে,
এসো আমার হৃদনূপুরের ভাবনাব্যাকুল গুঞ্জনে--
আমার আঁধার নয়ন আলোকিত হোক
তোমার নীরব আনন্দস্বপনে।