রাস্তা শুধু হাঁটার জায়গা কে বলল, রাস্তা বসারও জায়গা। যেমন খাট শুধু শোয়া বা বসার জায়গা নয়, ওখানে লাফানোও যায়। যেমন বড় হয়ে বুঝলাম কান শুধু শোনার জিনিস নয়, বড়রা ওদের কিছু পছন্দ না হলেই কানটা মুচড়ে দিয়ে যায়। ভালো লাগে না। কিন্তু মেনে নিতেই হয়। এরকম আরো জিনিস আছে। যেমন টিভিতে অ্যাড যতটা ভালো ওসব কান্নাকাটি ঝগড়াঝাঁটি ভালো না। কিন্তু বড়দের কে বোঝাবে?
তো হল কি বলি, সেদিন রাস্তায় বসে আছি। কেউ কোত্থাও নেই। হঠাৎ একটা ষাঁড় আর গরু এলো। বলল, আমাদের বিয়ে আজ, কিন্তু তোকে তো নেমন্তন্ন করা যাবে না। কি দারুণ কচি কচি ঘাসের বিরিয়ানি রেঁধেছি। আর তার সঙ্গে বিচুলির পায়েস। তোরা তো খাবি না। আর শোন তোরা আমাদের হাগু দেখলেই তুলে নিস কেন বল তো? ঘুঁটে না কি যেন সব দিস। যাক গে, বিয়ে বাড়ি না যাস, আমাদের একটা ইংরেজি গান শিখিয়ে দিস তো। মুম্বাই থেকে আমার এক দিদি আসবে। উনি ওখানকার খুব বড় নাম করা গাইয়ে গাই একজন। শুধু ইংরেজি গান গায়। আমাদের একটা প্রেস্টিজ আছে না!
আমি তক্ষুনি ওদের "হাণ্ড্রেড মাইলস" গানটা শেখাতে শুরু করলাম। ও মা! কি সুন্দর শিং নেড়ে নেড়ে গানটা শিখতে লাগল। হঠাৎ একটা ছাগল কোত্থেকে এসে আমাদের সঙ্গে গলা মেলাতে লাগল। উফ, কি যে বেসুরো কি বলি! আমি যত বলি থাম… কিছুতেই থামে না…. বলে আমার আসলে এই সিজন চেঞ্জে সর্দি লাগে তো… তাই আরকি একটু গলাটা বসা… নইলে সুর আমার দারুণ।
আর কি বলি, তার সেই হেঁড়ে গলা শুনে চারদিকে ব্যাঙ, চামচিকে, গাধা, মুরগী সব্বাই মিলে এমন চীৎকার জুড়ে দিল আমাদের আর গান শেখা হল না। মাঝখান থেকে এত আওয়াজে সূর্যটা ঘাবড়ে গিয়ে পশ্চিম আকাশে পা ফসকে গিয়ে ঝুস করে ডুবে গেল। সব অন্ধকার। শেষে আমি আর কি করি, গরুটা আর ষাঁড়টাকে কংগ্রাচুলেশনস জানিয়ে বাবার সঙ্গে বাইকে চেপে বাড়ি চলে এলাম।
যা হোক, এ সব গল্প বেশি বলি না। তবু আজ নাকি বাচ্চাদের দিন তাই বলে ফেললাম। ভালো থেকো তোমরা, টাটা।