অনেকটা রাস্তা সমতলে হাঁটার পর পাহাড় এলো। পথকে বললাম, এবার?
পথ বলল, ওই তো। সে পাহাড়ের দিকে ইশারা করল।
বললাম, পথ কোথায়? এ যে চড়াই শুধু। ঘন জঙ্গল।
খানিক এগোলাম। পথ হারালো জঙ্গলে। ঢুকলাম জঙ্গলে। মানুষ সব হারিয়েও নিজেকে আর হারাতে পারে না, সেই ভয়, সেই ভরসা।
ঘন জঙ্গলের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে বললাম, কোনদিকে যাব কেউ জানো?
আমার কণ্ঠস্বর আমারই কাছে এলো ফিরে - প্রতিধ্বনি হয়ে।
আরো এগোলাম, ঝরণাকে দেখলাম লুটোপুটি খেলছে সকালের হালকা রোদের সাথে। বললাম, পথ বলতে পারো?
সে বলল, যাবে কোথায়?
বললাম, সামনে।
ঝরণা বলল, জানোই তো পথ। সামনে।
আমি হকচকিয়ে গেলাম, তাই তো, এ উত্তর তো আমারই মনে ছিল, আমার চেতনার গোপনে।
ঝরণাকে বললাম, যদি বাধা পাই?
সে বলল, পাথর বাধা দিয়েছিল বলেই তো হলাম ঝরণা। তুমিও ঝরণা হোয়ো।
বললাম, কিসে তোমার এত জোর? এত সাহস?
সে বলল, বুকে যে আমার সাগরের অভিসার আহ্বান! সেই আমার সাহস, সেই আমার জোর।
মনে ভাবলাম, আমার কি আছে সাগরের অভিসার আহ্বান?
ভাবতে ভাবতে সন্ধ্যা হল। আকাশে উঠল তারার দল। আমার প্রাণের গভীরে লাগল নিশার ছোঁয়া। কে অন্ধকার থেকে ডেকে বলল, থেমো না... এসো... এগোও... আমি তোমার জন্য যুগান্তরের অপেক্ষায়।
বললাম, কে তুমি?
সে বলল, তোমার জাগা-ঘুমের অনন্তকালের সাক্ষী, তোমার 'আমি'র আমি।