তুমি কথা বলতে বলতে পাশ থেকে উঠে গেলে
আমায় বোঝাতে কি সব
আঁকিবুকি কথা
বোঝালেও
মানে বোঝানোর চেষ্টা করলে
শেষে বললে, বুঝেছ?
আমি মাথা নেড়ে বললাম, হ্যাঁ

কি বোঝালে বুঝিনি
বুঝলাম এটুকুই-
তুমি পাশ থেকে উঠে গেছো

তোমায় নিয়ে একটা কবিতা লিখব?

সামনে দাঁড়াও তবে

কেমন লাগল?

ভাল

আমার চোখের থেকে চোখ সরাও এবার
আমি পাতা উল্টাবো

হিসাব করব
মাসকাবারি বাজারের

রাত দুটো

পরদাটা একটু নড়ল
তুমি এলে?

রাত আড়াইটে

ঘরে তোমার গায়ের গন্ধ
তুমি এসেছ?

রাত তিনটে

আমার বুকের মধ্যে ছুঁচ ফুটছে
তুমি দেখতে পাচ্ছ আমায়?
আমি পাচ্ছি না তো!

ভোর চারটে

আমার গলার কাচ্ছে কান্না
চোখদুটোতে জ্বালা
তুমি চলে যাচ্ছ?
আবার!

আসবে আবার?

আমার দু'চোখ জোড়া ঘুম

(কীর্তনাঙ্গের প্রচলিত সুরে গেয়)
------------------------------

মরিব মরিব সখী নিশ্চয় মরিব
আমার এত সাধের অ্যান্ড্রয়েডখানা
                           কারে দিয়ে যাব

সন্ন্যাসী একটা বড় তালা মঠের দরজায় আটকালেন
দু'বার টেনে দেখলেন, আশ্বস্ত হলেন

তিনি ভগবানে বিশ্বাস করেন
মানুষের দেবত্বে বিশ্বাস করেন

তালাতে ভরসা রাখেন

ভেবেছিলাম ফাঁকি দিয়ে নেব
পেয়েছিলামও হাতে

কে নিয়ে গেল ফাঁকি দিয়ে?
আমি আবার শূন্যহাতে

গায়ে কেউ কটা ফুল ছড়ালো
গলায় কেউ মালা পরিয়ে গেল
                        অতর্কিতে
ভাল লাগছিল
তারপর ফুলগুলো কুটকুট করতে লাগল সারা গায়ে
মালাটা ভারী হতে হতে 
আমার মাথাটাকে নীচে নামিয়ে আনছিল
আমারই পায়ের কাছে

রূপ নেই, অস্তিত্ব আছে
বাঁধন নেই, প্রেম আছে
তাপ নেই, জ্যোতি আছে
দাবী নেই, প্রকাশ আছে

দেরি ছিল আসার। বাঁধানো উঠানের ধারে দুটো কলাগাছ। তার পাশে একটা বড় জামগাছ। তাতে মৌচাক হয়েছে বেশ কয়েকমাস হল। খুব কথা বলত ছোটবেলা থেকে, তাই বাড়ির লোক নাম রেখেছিল, ফুলঝুরি। বর্ধমান থেকে কিছুটা ভিতরে এক অখ্যাত গ্রামে জন্ম ফুলঝুরির। এখন বয়স চৌষট্টির দোরগোড়ায়। শরীরে গড়ন বেশ মজবুত এখনো। চোদ্দ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে এল রাণাঘাটে। এটা ২০১৪।

আমার চারিদিকে চারটে মরা নদী
আগে জল ছিল, কোনো না-দেখা পাহাড়ী ঝরণা থেকে নামত
এখন খালি নুড়ি পাথর বালি আর বালি
আমি জল চাইতে এ পাড়া ও পাড়া ঘুরেছি
কই জল?
শুকনো খাল, শুকনো দীঘি, শুকনো নদী
ওরা বলল, চলুন খুঁজি জল, যাবেন?
হাঁটতে হাঁটতে বন পাহাড় পেরিয়ে মরুভূমিতে এলাম সবাই
ওরা বলল খুঁড়বেন বালি?
বালি খুঁড়তে খুঁড়তে নীচের দিকে নামছি তো নামছি