Skip to main content

 

 

বাবার মাথাটা খারাপ ছিল। ছেলেটা মারা যাওয়ার আগে থেকেই ছিল। ছেলেটা মারা গেল অকালে। বাড়িতে সেদিন নিয়মভঙ্গ। খাওয়াদাওয়া চলছে। ছেলের বাবাকেও আনা হল। তিনি চেয়ারে বসলেন, মানে বসানো হল। যে লেবুলঙ্কা দিতে এলো, তার চোখ ভিজল। যে শুক্তো দিতে এলো, তার চোখ ভিজল। যে ভাত দিতে এলো, একবার না, দুবার, তিনবার, তার গলা বুজে এলো। আসবে না? মানুষটা বারবার ভাত চাইছে যে! কে বোঝাবে ওর ছেলের শ্রাদ্ধের নিয়মভঙ্গ হচ্ছে আজ। এ উৎসব না, আজ ওর গভীর শোকের দিন। শেষে মিষ্টির পালা এলো। উনি দুটো রসগোল্লা নিলেন। একবারে মুখে পুরলেন। বললেন, দইটা দাও না আরেকবার.... মিষ্টিটা বড় ভালো... আরো দুটো রসগোল্লা দাও না।

খাওয়া শেষ হল। তাঁকে তোলা হল চেয়ার থেকে। ধীরে ধীরে সিঁড়ির দিকে যাচ্ছেন, ছাদে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন তো। সিঁড়ির বাঁদিকে, টেবিলে সাদা কাপড়ের উপর রাখা ওঁর ছেলের ছবি। চন্দন পরানো। ফুলের মালায় মালায় ঢেকে গেছে প্রায়। উনি দাঁড়ালেন, বললেন, ও খেয়েছে? কোথায় ও?

আজ টিভির দিকে তাকালেই আমার ওঁর কথা ভীষণ মনে পড়ছে। কিন্তু উনি তো পাগল ছিলেন। বুঝতে পারেননি। বাস্তব হল, রীতিনিয়ম চলবেই, কিন্তু সে আনন্দের না বিষাদের সে বোধটুকু স্বাভাবিক বুদ্ধিতে না বুঝলে চলবে কী করে? দুর্গোৎসবটা ঐতিহ্য, কিন্তু কার্নিভালটা তো না!