নতুন বাড়িতে একটা সমস্যা হল। জল ঢুকে বাড়ির দেওয়াল খারাপ করে দিল।
বাড়ির মালিক বলল, ভাই এরকম তো হওয়ার কথা ছিল না।
এখন ইঞ্জিনিয়ার বেশ চালাক মানুষ, সে হাজার একটা কারণ দেখিয়ে বলল, স্যার, এটা পসিবল, এটা অসম্ভব কিছু নয়, এটা তো হতেই পারে।
বাড়ির মালিক ছিল মার্কেটিং-এর লোক, ভাষার ব্যবহার সেও জানে। সে বলল, আরে ভাই, মানুষ তো দাঁত তুলতে গিয়েও মারা যেতে পারে, সেটা অসম্ভব কে বলেছে? কথাটা সম্ভব অসম্ভবের না, কথাটা এফিসিয়েন্সি আর ইনেফিসিয়েন্সির। মানুষ বেশি টাকা খচ্চা করে একজন ভালো সার্জেন এই জন্যে খোঁজে যে কাজের পর সে অজুহাত খুঁজবে না। সে বেশি টাকা নেয় তো তার এফিসিয়েন্সির জন্যেই। তো প্রশ্নটা আপনার এফিসিয়েন্সি নিয়ে, আপনার তত্ত্বজ্ঞান নিয়ে তো নয়। তার জন্যে তো গুগুল হ্যায় না।
কথা হচ্ছে কোনো কিছুকেই যদি ক্রিটিকালি না দেখা যায়, তবে হয় ভক্ত নয় দ্বেষী হতে হয়। 'ক্রিটিকাল থিংকিং' -এর চর্চায় আমাদের ততটা আগ্রহ নেই যতটা আমাদের ভাবাবেগে যাতে আঘাত না লাগে সেই জন্যে। আর আমাদের ভাবাবেগও হয়েছে তেমন আতুসী, চলতে ফিরতে তার আঘাত লাগে। কান্নাকাটি করে।
এই আলোচনাটা আমার শেয়ার করার ইচ্ছা হল, কারণ আমার এই সময়ে দাঁড়িয়ে খুব প্রাসঙ্গিক মনে হল। জাভেদ আখতারকে নিয়ে বলার কিছু নেই। কিন্তু অনেকেই হয় তো পুরুষোত্তম আগরওয়ালকে চিনবেন না, তাদের জন্য একটু বলে নিই। পুরুষোত্তমবাবুকে চিনি কবীর পড়তে গিয়ে। ইনি একজন কবীর বিশেষজ্ঞ। সঙ্গে আমাদের ইউপিএসসি বোর্ডেও ছিলেন। ইনি যার তত্ত্বাবধানে গবেষণা করেছেন, তিনি নম্ভর সিং, সাহিত্য আকাদেমী পুরষ্কার পাওয়া, যার ভাইও মহল্লা অসসি নামক উপন্যাসের জন্য বহু পরিচিত। এই নম্ভর সিং আবার গবেষণা করেন ও ডক্টরেট পান হাজারি প্রসাদ দুবেদির তত্ত্বাবধানে, যার মাথার উপর রবীন্দ্রনাথের হাত ছিল। এবং এই দুবেদি মহাশয় রবীন্দ্রনাথের উৎসাহে কবীরের উপর একটা অসামান্য বই লেখেন। দুর্ভাগ্য যারা হিন্দি পড়তে অক্ষম তারা এর স্বাদ থেকে এখনও বঞ্চিত থাকবেন, কারণ আমার চোখে পড়েনি এর অনুবাদ এখনও।
পুরুষোত্তম আগরওয়ালেরও কবীরের উপর দুটো ভীষণ অথেনটিক বই আছে, এক হিন্দিতে, দুই ইংরেজিতে। দুটোর কন্টেন্টই উৎকর্ষতায় অনেক গভীর।
তবে এখানে আলোচনা কবীর নিয়ে নয়, নেহেরুকে নিয়ে। সমালোচনা বলতে যা বোঝায় তাই। বেশ সমৃদ্ধ হলাম। ভালো লাগল ভীষণ।