Skip to main content

 

 

 

 

 

 

 

রবীন্দ্রনাথ কোন পিতার কথা বলেছিলেন? রবীন্দ্রনাথ সারা জীবন কটা মন্দির সংস্কার করেছিলেন? রবীন্দ্রনাথ কি কোথাও বলেছিলেন, প্রাচীন মন্দিরকে অত্যাধুনিক করলেই ভারতের উন্নতি? রবীন্দ্রনাথ কি আদৌ কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মে নিজেকে রেখেছিলেন? তবে "মানুষের ধর্ম" কার লেখা? তবে "দীনদান" কার লেখা? আজ ভারতের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, ভারতে প্রাথমিক স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানীয় জল ইত্যাদি নিয়ে যতটা রাস্তা আমাদের চলা বাকি আছে, রবীন্দ্রনাথ কি সত্যিই বেঁচে থাকলে সেই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে গণ্যমান্য অতিথি হয়ে যেতেন?

রবীন্দ্রনাথ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ মশায়কে রাশিয়া থেকে অসুস্থ শরীরে লিখছেন, - "রেখো মা দাসেরে মনে এ মিনতি করি পদে" এ কথা একেবারেই না। দরকার নেই। স্মরণ সভার চৌকিটেবিল ভাড়া করবার জন্য কেউ যেন চাঁদার খাতা নিয়ে বেরোয় না....

ডাক্তার বলে আমি নিজেকে মারচি, কিন্তু এর চেয়েও আমাকে মারবে যদি স্বদেশে নিঃসহয়তার মরুপথে আবার আমাকে বিনা পাথেয় চলতে হয়।"

চিঠিটা ২৮শে অগাস্ট, ১৯৩১ সালে লেখা, মানে রবীন্দ্রনাথ যখন সত্তরের কোঠায় এসে পৌঁছেছেন।

রবীন্দ্রনাথের লাইন ব্যবহার করা যেতেই পারে। কিন্তু কোথায় কিভাবে কখন ব্যবহার করা হবে, সেটার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে ভাবা হবে না? একজন মানুষের আদর্শের সঙ্গে অসঙ্গত শুধু না, একজন মানুষের আদর্শের বিরুদ্ধ কাজটা করে তারই লাইন ব্যবহার করাটা কি ধরণের আচরণ? জানি না এখানে পিতা কাকে বলা হয়েছে, রবীন্দ্রনাথ কাকে বলেছেন সে জানা আছে, কিন্তু এখানে কে পিতা? মহাদেব, না ছবিটার বাকি অংশ জুড়ে প্রধানমন্ত্রীর যে ছবি সেটা জানি না। তবে যিনিই হোন, রবীন্দ্রনাথের লাইনের এমন রাষ্ট্রীয় ব্যবহারে আঘাতই পেলাম। রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং থাকলেও নিশ্চয়ই অনুরোধ করতেন লাইনটা তুলে নেওয়ার। আরো তো অনেক কবি আছেন, যারা এই সংস্কারের সমর্থক, তাদের লাইনে কি আস্থা নেই? না কি তাদের খ্যাতির জ্যোতিতে ভরসা নেই?

 

(ছবিটা আজকের TOI এর দ্বিতীয় পাতায় ছাপা।)