মনে ভাবছি কিসের এ ব্যাথা?
যে গেছে চলে, তার?
না যে আসেনি আজও তার?
নাকি যে এসেও আসেনি, তার?
ভ্রমর বলল, সে আছে
এ বসন্তে না, সে অন্য বসন্তে আছে
আমি বললাম, আছে!
তবে কি সে জানে
প্রতি বর্ষাকালে
যখন নদীর বুক ওথাল পাথাল
আমি ডুবিয়ে পা হাঁটু অবধি জলে
তীরে বসে নৌকা ভাসাই
পায় কি সে তার কূলে?
ভ্রমর বলল, পায় পায় পায়
এক দৌড়ে ছাদে আসি
পাশের পলাশ গাছে -
থোকা থোকা পলাশ ফুটে আছে
শুনেছ পলাশ, সে নাকি অন্যদেশে
অন্য বসন্তে আছে
তুমি দেবে আমায় গুটি কয়েক ফুল
নাম লিখে পাঠাই তার কাছে!
পলাশ বললে, ভাই
নিয়ে যাও, ক্ষতি কিছু নাই
কিন্তু এযে ভরা বসন্ত
নদী নালায় জল বাড়ন্ত
নৌকা তুমি ভাসাবে কোন জলে?
আমি বললাম, হায়!
শেষ আশাটাও মরল বুঝি
পোড়াকপালের দায়
পলাশ বলল, নাও নাগো ফুল
রাখো নিজের কাছে
বর্ষা এলে ভাসিও ভেলা
ভাসতে ভাসতে চলবে পলাশ
যে দেশে সে আছে!
আমি বললাম, বেশ
কালের স্রোতে হাওয়া লাগল
বাদল হাওয়া আসল অবশেষ
ফুল আনতে গিয়ে চমকে গেলাম
হা ঈশ্বর! সব ফুল যে শুকিয়ে একশেষ! 
শুকনো ফুল কোলের পরে রেখে
বসি নদীর ধারে
পাড়ে ভাঙছে একে একে ঢেউ
বুকের ওপর আঘাত করে ফেরে
এল এক প্রজাপতি
কোথায় ছিল কে জানে-
বসল এসে কাঁধে, বলল কানে কানে
ভাসাও ভেলা শুকনো ফুলেই
শুকনো ফুলই যাক না তার দেশে
তার নাম লেখা সে ফুল
পৌঁছবে তার কূল
শুকনো পলাশ উঠবে জেগে
তার হাতের ছোঁয়া লেগে।
তার বসন্ত তোমার বাদল ছোঁয়ায়
উঠবে সজল হয়ে
তোমার বাদল তার বসন্তে মিশে
রাঙবে হৃদয় ছেয়ে।
ভাসাই ভেলা ভরা নদীর বুকে
দুলতে দুলতে চলল তরী
কালো মেঘে আকাশ আমায় ঘিরে
                          মরণ সুখে।