Skip to main content

যেখানেই স্বাধীনতা সেখানেই বৈচিত্র্য। মানুষ স্বাধীন হল চিন্তায়। হল বৈচিত্র্যময়। আদবকায়দা, পোশাক-আশাক, রীতিনীতি, বিশ্বাস, ধর্ম - সব হল বৈচিত্র্যময়।
বিজ্ঞান এল এগিয়ে। সবাই এলো কাছাকাছি। কিছুটা অতিরিক্ত কাছাকাছি। যেন দরজা খুললেই ভিনদেশ। টিভিতে, উড়োপথে হাতের কাছেই সারাবিশ্ব। ইন্টারনেট চিত্রগুপ্তের খাতাকেও নস্যি করে দিয়েছে।
মুশকিল হল এইবার। সব ক্রিয়ারই একটা বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। হচ্ছেও। যতই আমরা কাছাকাছি আসছি, যতই কিনা নানানরকম প্রকার দেখছি, ততই নিজেকে জোর করে নিজে বানাবার চেষ্টায় উঠে পড়ে লেগে গেছি। ওই যেরকম অনেকেই আছে না, বাইরের লোক দেখলে ঘরের লোকের সাথে একটু বেশি বেশি প্রেম দেখায় - এও সেরকম আর কি। নিজস্বতা রক্ষার তাগিদে সাম্প্রদায়িকতা বাড়ছে। আচমকাই নিজের ভাষার প্রতি, নিজের ধর্মের প্রতি, নিজেদের রীতিনীতির প্রতি ভালবাসা হুসহুস করে বাড়ছে। প্রেম করবে বলে না, প্রেমের মাধ্যমে আত্মজাহির হবে বলে সেজেগুজে বসাটা কি খুব কাজের কথা? না বোধহয়। সেটা খুব একটা স্বাস্থ্যকর না। তাতে অন্যের উপর চোখরাঙানীতে যতটা মন যায়, নিজের উন্নতিতে তার শতাংশের এক অংশও না। আমি যে আছি - এটা বেশ জোরের সাথে না বোঝালে অস্তিত্বসংকট অনুভব হয়। অস্বাস্থ্যের লক্ষণই হল - মাত্রাহীনতা। সেই মাত্রাহীনতা লাগামছাড়া হয়ে অন্যের ত্রাসের কারণ হয়ে উঠতেও সময় লাগে না। জন্ম হয় সন্ত্রাসবাদের। এক বিশেষ অস্তিত্ব জাহিরের কৌশল।
এর কোনোটাই প্রকৃতির নিয়মে চিরস্থায়ী নয়। প্রকৃতি কখনোই ঔদ্ধত্য বরদাস্ত করেনি। সহাবস্থানই তার মূল চলার ছন্দ। এর বিপরীতাচরণ মানেই নিজের ধ্বংসের পথ রচনা করা - অতি দর্পে হতালঙ্কা।