ভাস্কো-ডা- গামা ভারতবর্ষে আসেন ১৪৯৮ সাল ২০ শে মে। অর্থাৎ আজকে। তখন চৈতন্য মহাপ্রভুর বয়স ১২ বছর। মহাপ্রভুর দাক্ষিণাত্য ভ্রমন ১৫১০-১৫১২। যখন ওঁর বয়স ২৪-২৬। তখন ভাস্কোডা গামা পর্তুগালে ফিরে গেছেন। তখন পর্তুগীজদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আলফন্সো আলবুকার্ক। গোয়া উপকূল দখলের লড়াই চলছে।
মহাপ্রভুর সঙ্গে কি কোনো পর্তুগীজের দেখা হয়েছিল? যদিও মহাপ্রভুর গোয়ায় যাওয়ার কোনো ইতিহাস নেই, কিন্তু কালিকট (বর্তমানে কোজিকোড) যাওয়ার কথা কোথাও কোথাও উল্লেখ আছে। উনি মালাবারেও গিয়েছিলেন। কোল্লাম, কোচি প্রভৃতি জায়াগায় যেখানে পর্তুগীজ আসার আগে থেকেই খ্রীষ্টানদের বসবাস ছিল। তাও কোনো কোথাও কোনো উল্লেখ নেই খ্রীষ্ট ধর্মের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার। এখানে আরেকটা দিকও উল্লেখ করা যেতে পারে, পুরোটা অপ্রাসঙ্গিক না হলেও, নানকের যাত্রাপথেও দাক্ষিণাত্য এসেছিল, সময়কালটা মোটামুটি কাছাকাছি। মজার কথা হল সেখানেও কোথাও তেমন কোনো উল্লেখ নেই খ্রীষ্টধর্মের।
কারণ কী কী হতে পারে? এক, দেখা হয়নি। দুই, দেখা হলেও ভাষা বুঝতে নিশ্চয়ই সমস্যা হয়েছিল দুইপক্ষের। কিম্বা হয় তো দেখা ও কথা দুই হয়েছিল আমরা জানতে পারি না। কারণ মহাপ্রভুর জীবনের আদর্শ বা উদ্দেশ্যর সঙ্গে যায় না বলে। তাছাড়াও আরেকটা কথা হল খ্রীষ্টানদের উপস্থিতি নিশ্চয়ই এত যৎসামান্য ছিল যে তা চোখে পড়ার মত না। কিন্তু অভূতপূর্ব পোশাক, ভাষা, বিশ্বাস কী কারোর চোখে পড়েনি? কী জানি। অতীত বড় রহস্যময়। ইতিহাস তার সচেষ্ট সরলীকরণ। একটা গ্রহের এক এক পাকে এত এত জটিল ঘটনা, স্নায়ুন্তন্ত্রের সাধ্য কী তাকে ধরে! এক আঁজলায় আর কতটা জল ধরে!