তো হল কি, মামুর মাথায় বেজায় ব্যথা। উঠতে, শুতে, নাইতে, খেতে সবেতেই মাথা টিসটিস করে। দিদি বেজায় চিন্তায় আমায় ফোন করল। আমি বললুম, তবে তো একজন চক্ষুবিশারদকে দেখাতে হয়।
যেমন পরামর্শ তেমন কাজ। মামুর মনে বেজায় সুখ, চক্ষুবিশারদ মামুর চোখের কোটরে চোখ রেখেই বলবেন, বাব্বা! এত পড়ে নাকি কেউ! সব জ্ঞান চোখের ভিতর দিয়ে মাথায় ঢুকতে গিয়ে এক্কেরে পোস্তার মত জ্যাম লাগিয়েছে গো! থামো থামো, বেশ করে বিশ্রাম নাও"।
কিন্তু বাস্তবে হল তার বিপরীত। বয়স্ক চক্ষুবিশারদ মহাশয় মামুকে জিজ্ঞাসা করলেন, খুব মোবাইল ঘাঁটা হয় বুঝি... উম... কি? তাই?
মামু তো থ। একি কথা! মোবাইল তো বই নয় যে বারোমাস একই ছাপা অক্ষর নিয়ে বসে থাকবে। জগত এদিক ওদিক হয়ে গেলেও তারা একইরকম থেকে যাবে। ওদিকে মোবাইল কেমন ক্ষণে ক্ষণে নিজেকে বদলে, ক্ষণে ক্ষণে কত জায়গায় নিয়ে চলে যায়। তার কত ভাব, কত রূপ, কত সুর! তবে মোবাইল দেখব না?
ডাক্তার বললেন, না! একদম না। কদিন একদম বিশ্রাম!
মামু ডাক্তারের কাছ থেকে বেরোলো। মোবাইলটা অন করল। তারপর ধাঁই ধপাধপ্ কটা ছবি তুলে আমাকে আর দিদিকে হোয়াটসঅ্যাপ করে দিল।
মাথা ব্যথা?
ভ্যানিশ! ওসব আবার কি? ও আপনিই আসে, আপনিই যায়। ও ডাক্তারে বোঝে নাকি!
মামুকে জিজ্ঞাসা করলাম, মাথা ব্যথাটা কোথা থেকে শুরু হয়েছিল মামু?
মামু বলল, মাথা ব্যথা মাথা থেকেই শুরু হয়েছিল, কিন্তু ডাক্তারের কথা শুনে দুই কান দিয়ে ভোঁ করে বেরিয়ে গেল।
বুঝলাম, অমন মাথাব্যথা, পেটব্যথা অনেকেরই হয় যা চিকিৎসা শাস্ত্রে লেখা থাকে না। মায় দাদুদিদিমা, ঠাকুমাঠাকুর্দারও যতবার আচমকা দেহত্যাগ হয় ততবার দাহ আর শ্রাদ্ধ করাও বাস্তবে সম্ভব নয়। এমন অনেক কিছু হয় যা যুক্তি বোঝে না, কিন্তু অভিজ্ঞতা বোঝে। তাই নয় কি?
(ছবিতে মামুর পিছনে দাঁড়িয়ে জামাইবাবু, মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যথেষ্ট কনফিউজড। ব্যথা গেল কই?)