লক্ষ্মী ছেলে আপিসে যায় মায় প্রণমিয়ে।
মা বলেন করিও ফোন আপিসে পৌঁছিয়ে।।
লক্ষ্মী ছেলে ফোন করে থাকি থাকি মায়।
কী খাইল, কী হইল সেথা সব বলি যায়।।
লক্ষ্মী ছেলে ঘরে ফিরি মায়ে চুমো খায়।
মা বলে আহা রে বাছা কী ধকল যায়।।
লক্ষ্মী ছেলে খাইতে থাকে মায়ে হেরে বসে।
উগারি উগারি স্নেহ উঠে ভসভসে।।
স্নেহের ধোঁয়াতে মাতা পাগলের প্রায়।
ইতি উতি দেখে তবু কিছু নাহি ভায়।।
বিবাহবন্ধনে পুত্র পড়িয়াছে বাঁধা।
এ কথা ভাবিতে মায়ের প্রাণে লাগে ধাঁধা।।
লক্ষ্মীছেলে তোষে মায়ে ভয় কেন পাও।
পরঘর নারীরে কেন এত ভাও দাও।।
আমি আছি চিরকাল কোল আলো করে।
থাকিব এমনই মাগো তব বাহুডোরে।।
লক্ষ্মী ছেলে শুইতে যায় মাতৃশয্যা পরে।
কভু কভু মাতৃ আজ্ঞায় যায় স্ত্রীর ঘরে।।
একদিন মরিল স্ত্রী গায়ে দিয়ে আগুন।
সে ছিল দোলের দিন, বাহিরে ফাগুন।।
কোর্টকাছারি সব হইল, দোষ পাইল স্ত্রীয়ে।
দিয়াছিল বিয়ে তারা মনোরোগ লুকাইয়ে।।
কথাটা মিথ্যা নয়, এ বাড়িতে আসি।
লক্ষ্মী ছেলের লক্ষ্মীমিতে পড়েছিল ফাঁসি।।
ক্রমে ক্রমে মনোরোগে সত্যিই ধরিল।
লক্ষ্মী ছেলে চিকিৎসায় ত্রুটি না করিল।।
সেই হইল প্রমাণ এবে, ছাড়া পায় বেকসুর।
মায়েপোয়ে তীর্থযাত্রায় গেলা বহুদূর।।
ফিরে আসি মাতা কহে ওরে বাছা মোর।
শীঘ্রই দ্বিতীয় বিয়া দিয়া দিব তোর।।
লক্ষ্মী ছেলে হাসি কহে যা তোমার সাধ।
দাসী আনি রাখি পায়ে নাহি মনে বাধ।।
ঘুমন্ত ছেলের মুখে মায়ে চাহি রয়।
রাত কাটি ভোর হয় ঘুম নাহি হয়।।
একদিন মায়ে কহে, “বিবাহের পরে।
সুখেতে সংসার কোরো, কাশী পাঠাইয়া মোরে”।।
লক্ষ্মী ছেলে ইহা শুনি ভূতলে মূর্ছি পড়ে।
আনন্দে কান্দিয়া মাতা শির কোলে করে।।
না যাইব না যাইব বাছা মাথার দিব্যি তোর।
দুজনে রহিব সুখে যুগযুগান্তর।।
লক্ষ্মী ছেলে উঠি বসে মনে পায় বল।
মায়ে চুমি কহে, বাছা এক তুই তো সম্বল।।
সৌরভ ভটচাযে ভণে লক্ষ্মীছেলে গাথা।
পুণ্যবানে শোনে যত ঘোরে তত মাথা।।
(আমারও হইল সাধ পাঁচালি লিখি।
যশোদির লেখা হইতে কিছু লই শিখি।।)