Skip to main content

পরিচয়

কিছু পরিচিত মানুষ ছিল
      নাগালের বাইরে তারা আজ

নাগালের মধ্যে যারা
     রক্তের পরিচয়ে অপরিচিত

তবু কোথায় যেন চির-পরিচিতের সাজ

 

বন্ধুতা

আমার সাথে ভাব করবি মেঘ?
আমি যুগযুগান্ত এখানেই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে
সময়ের দাঁড়ি।
তোমায় দেখি খোলা আকাশটার বুকে কেমন রঙ পাল্টিয়ে পাল্টিয়ে খেলো
জানো কতবার ভিজে গেছি তোমার ঢালা জলে
গর্বে বুক ফুলেছে। সবাইকে ডেকে বলেছি দেখ, ওই আকাশের জল আমারও সারা গায়ে!
পরেরদিনই সব জল শুষে নিয়েছে ওই আকাশের সূর্য, আমার যেন অধিকার নেই আকাশের জলে ভিজে থাকার!

মিথ্যার মত সত্যি কথা

ছেলেটা একলা হাঁটল অনেক দূর
মেঘের সাথে দেখা হল। সে বলল, যাবি?
ছেলেটা বলল, চল
মেঘের সাথে এক যুগান্ত হেঁটে এল
নদী বলল, যাবি?
ছেলেটা বলল, যাব
নদীর সাথে এক সমুদ্র বেড়িয়ে এল

এভাবে সে এক জঙ্গল হাঁটল গাছের সাথে
এক তেপান্তর হাঁটল দিগন্তের সাথে
এক স্বর্গ হাঁটল দেবতার সাথে
এক নরক হাঁটল অসুরের সাথে

মমি

হাত বাড়ালে
          স্পর্শ দিও
                 শর্ত দিও না
অনেক হাত
       শর্ত নিয়ে
            থমকে আছে
মমির মত

অমিতাভ

যিনি এসে দাঁড়ালেন,
  তিনি গৌতম নন। তিনি বুদ্ধ।
সামনে তৃষ্ণার্ত মানুষের
      নিশিযাপন যুগান্তের অন্ধকারে।

বুদ্ধের কমললোচন স্নিগ্ধ করুণ জ্যোতিতে

স্বর্গের দেবতারাও হলেন উৎকর্ণ
       পাতালবাসী অসুরদের সাথে
কি বলবেন শাক্যমুনি?

যে হাতদুটো

যে হাতদুটো প্রবল উৎসাহে জানলার কপাট দিত
        দরজায় খিল দিত
এখন তার জানলা দরজার আগল খুলতেই মুক্তির স্বাদ
     সিঁথির সিঁদুরের দাগ কাঁপা
                  দ্বিধায়
সাতপাকের সুতোয় ঘিরছে ফাঁসের ঘের

ইচ্ছা

কথাগুলো ডুবুক
ভাবনাগুলো পথ হারিয়ে হোক নিরুদ্দেশ
আমার অনেক দিনের শখ
   আমি একটা আস্ত সূর্যাস্ত দেখি -
দেখতে দেখতে সারা আকাশে ফুটুক একটা একটা তারা
             সন্ধ্যাতারার হাত ধরে
আর ধীরে ধীরে মনের ভিতর ভরুক জুঁইয়ের সুবাস

ভিজে কাক

এলোমেলো ঝোড়ো হাওয়ায় কাঁপছে ভিজে কাক একটা সামনের আম গাছটায়।
বৃষ্টি মায়ার মত হাত বাড়িয়ে বলল, ভিজে আকাশটা ছুঁয়ে দেখো একবার....

ভিজে আকাশটা ছুঁয়ে কাকটার গায়েও হাত বুলিয়ে ফিরলাম।
  ওর শরীরে নিবিড় আত্মীয়তা
         এ কাক নয় তো!
  এ তো কাকের শরীরে আমার অসম্পূর্ণ কান্নারা!

সময়

জ্ঞান হওয়া ইস্তক দেখছি
   একটা সাদা চাদরে পা থেকে গলা অবধি ঢাকা আমার
   মাথার কাছে কিছু ছায়ামূর্তি ঘোরাফেরা করছে
   ফিসফিস করে বলছে -
 যা কাজ আছে তাড়াতাড়ি সেরে নাও
      বুঝে নাও সব কিছু
   ধর্ম বিজ্ঞান রাজনীতি ইতিহাস
      খানিক পরেই চাদরটায় ঢাকব মুখ

সৌজন্যতা

সব শাড়িগুলো মন খারাপে ভিজে
   একটা শাড়িও শুকাতে পারেনি সকাল থেকে।
ছাদে উঠেছে চোদ্দোবার, হারমোনিয়াম খুলেছে বন্ধ করেছে, সুর আসেনি গলায় কিম্বা আঙুলে।
 পুরোনো দিনের কথারা চুন সুরকির মত খসে খসে পড়েছে সারাটা দিন
      মেয়েটার মন ভাল নেই
   মেয়ে তো নয়, বউটার মন ভাল নেই।

"আচ্ছা, ও ভালো আছে?"

Subscribe to কবিতা