সাদা ধবধবে শাড়িটা। খাটের পাশে বসে। মেঝেতে। মাটির মেঝে। টিনের দেওয়াল। টালির ছাদ। মানুষটার বয়েস হয়েছে। যেন একশো পার। রাস্তার দিকে তাকিয়ে বসে। খোলা দরজা। কার জন্যে কে জানে? দেওয়ালে হেলান দেওয়া কয়েকটা বাসনকোসন। আর দু একটা ঠাকুরের পট। সামনে প্রদীপ। এখনও জ্বালানো হয়নি। সন্ধ্যে হয়নি যে।
মানুষটা উবু হয়ে বসে। মাথাটা নেমে এসেছে দুই হাঁটুর কাছে। ঘরে দেখার মত কিছু নেই। কিন্তু ওই খোলা দরজাটা, আর খোলা দরজা দিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে যে মানুষটা..... সে মানুষটা এখনও বেঁচে আছে। এখনও অপেক্ষা করছে। এখনও রাস্তায় চলা মানুষের দিকে কী আগ্রহে তাকিয়ে আছে।
অথচ সে মানুষটা অনায়াসে ঈশ্বরকে অভিশাপ দিয়ে, ভাগ্যকে তিরস্কার করে, ঘরের আলো নিভিয়ে দরজা বন্ধ করে দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে শুয়েই থাকতে পারত। কিন্তু থাকেনি তো। আশ্বিনের পড়ন্ত বিকেলে, বাতাসে যখন লাগছে ঈষৎ হিমেল ছোঁয়া, সে দরজাটা খোলাই রেখেছে। সে সুখী নয়, অসন্তুষ্টও নয়। সে কে আমি জানি না। কিন্তু সে বেঁচে আছে এটুকু জানি। এটাই অনেক।