Skip to main content

 

একগুঁয়ে তার্কিক সেদিনও ছিল। অবিশ্বাসী সেদিনও ছিল। তবু সেদিনও সে এসেছিল, যাকে দেখে লোকে বলেছিল, পাগল। উন্মাদ।

সেদিনও মানুষ মানুষকে ঠকিয়েছিল। হত্যা করেছিল। বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। তবু সেদিনও মা সন্তানের কপালে ভোরের চুম্বন এঁকে বলেছিল, ভালো থেকো, সুস্থ থেকো, আনন্দে থেকো। পিতা সারাদিনের শ্রমের পর গভীর রাতে ঘুমন্ত সন্তানকে কোলে নিয়ে, বাড়ির উঠানে, চাঁদের আলোয় হাঁটতে হাঁটতে বলেছিল, চারদিক যেন স্বর্গ, জগতের সব সুখ যেন তুই পাস।

মাংস কাটার দোকানের সামনে কুকুরের ঘেউ ঘেউ সত্য। ফুলের বাজারে মধুপের গুনগুন সত্য। নাভিকুণ্ডের গঙ্গা নিমজ্জন সত্য। নাভিরজ্জু ছিন্ন করে ভূমিষ্ঠ হওয়াও সত্য।

মন দুই তারে বাঁধা। এক তারে সুখ, তো আরেক তারে দুঃখ। একতারে কী বাঁধা তবে?

চেতনা।

সেটা কী? একটা শব্দ। যার কোনো মানে নেই। যার রাশি রাশি অনর্থক ব্যাখ্যা আছে। তৃষ্ণা মেটার অনুভব তৃষ্ণার্ত জানে। ভাষা জানে না। ভাষা তো মুহূর্তের নকল করে শুধু। সে স্মৃতির ভাণ্ডারে জমায় শুকানো অনুভবের হার্বেরিয়াম দলিল। মিথ্যা সেটা। নকল। মাধুর্যহীন ফুল যেমন মিথ্যা, ফুলের আকার শুধু সে।

এই তো সে। এই যে। এই মুহূর্তই সেই মুহূর্ত। এই যে আনন্দ সে। এই যে পরিপূর্ণ সে অযুত-নিযুত অপূর্ণতাকে কী মাধুর্যে ঢেকে!

মুহূর্তের পর মুহূর্ত চলে যায়। বোকা মন আশায় জাগে পরম মুহূর্তের। জানে না, রাতের এক এক মুহূর্তে লেগে থাকে ভোরের আলো। ভোর পরম না। মুহূর্তধারার এক মুহূর্ত কেবল। পরম কী তবে? ঢেউয়ের সমুদ্রের কল্পনা। মিথ্যা না। আবার সত্যিও না।