Skip to main content

মন

মন কোথায় রাখব? স্বস্তি নেই মনে। দু বছর আগে যে জীবনটা মনে হত একঘেয়ে, তেমন কিছু কেন হচ্ছে না। আজ সেই জীবনটার চাইতে কাঙ্ক্ষিত আর কিছু নেই। সেই সাদামাটা জীবনটাই চাই। দরকার নেই কোনো বিশেষ অভিজ্ঞতার। দরকার নেই নিত্য জীবনের বাইরে কোনো অসাধারণ জীবনের। প্রাণ গলায় এসে ঠেকছে। রাতের ঘুম বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চেনা অচেনা সব মানুষের সঙ্গে যে এত কাছাকাছি রকমের বাঁধা আছি সেটা এত স্পষ্ট করে বুঝতে পারিনি আগে। এত এত মর্মান্তিক ছবি ছাপা হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেগুলোর মুখোমুখি কিভাবে হব? শুধু আতঙ্ক তো নয়। অসহায়তায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। জীবিকার জন্য কাজটুকু করেই হোয়াটস অ্যাপে, মেসেজে, ফোনে বসে পড়ছি চেনা অসুস্থ মানুষজনদের খোঁজ নিতে। আজ কেমন আছেন? কোনো মানুষ বাড়ি ফিরে গেছেন শুনে আনন্দে চোখে জল আসছে। তেমনই কেউ চলে গেছেন শুনে হেরে যাওয়া বিষণ্ণতায় আবার কুঁকড়ে যাচ্ছি।

দেশ ভগবানের ভরসায় চলছে

আজ হাইকোর্ট বলেছে বর্তমানে দেশ ভগবানের ভরসায় চলছে। অবশ্যই কোর্টের বিচারকদের দিব্যজ্ঞান হয়নি যে তারা এ কথা বলছেন। তারা এ কথা বলছেন চরম আক্ষেপের সঙ্গে, এ বলার অপেক্ষা রাখে না। 

    আসলে শুধু নেতার দোষ না। যেদিন অত বিশাল মূর্তি বসল, যেদিন অত কোটি টাকা দিয়ে মন্দিরের প্রকল্প হল, সেদিন আমরা একজোট হয়ে বলতে পারিনি, এই টাকাগুলো আগে আমাদের স্বাস্থ্যের খাতে খরচ হোক। গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো উন্নত হোক। সরকারি হাস্পাতালেগুলোতে চিকিৎসার সঠিক সরঞ্জাম আসুক। না, এগুলো

রবীন্দ্রনাথ ও স্প্যানিশ ফ্লু

রবি ঠাকুরের সময় এসেছিল স্প্যানিশ ফ্লু, ১৯১৮ থেকে ১৯২০ সে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল। ১৮ মিলিয়ন মানুষ মারা গিয়েছিল শুধুমাত্র ভারতেই নাকি। রবীন্দ্রনাথ কিভাবে সামলেছিলেন? বিশ্বভারতী গড়ে উঠছে, হাজার একটা সমস্যা তো আছেই, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ইত্যাদি। তার মধ্যে এই অতিমারী। 

অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াড

একবার হল কি ওশোর যৌনতার উপরে লেখা একটা বই নিয়ে একজন বরিষ্ঠ জ্ঞানীগুণী মানুষ, খুব সম্ভবত মোরারজী দেশাই মন্তব্য করেন, খুব অশালীন বই ইত্যাদি ইত্যাদি। ওশোকে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনার এই বিষয়ে কি বক্তব্য।

সত্যের জোর

সত্যের উপর ভালোবাসা নেই অথচ দেশের উপর, ধর্মের উপর, স্বজাতির উপর ভালোবাসা আছে যারা বলে, তারা আদতে মিথ্যাই বলে। সুচারু রূপে বলে। 

আবেগপ্রবণ

বাঙালি হুজুগে জাত। জন্মাবধি শুনে আসছি। আমার জন্মানোর বহুযুগ আগে যারা বাঙালি হয়ে জন্মেছিলেন তারাও একই কথা লিখে গেছেন। অর্থাৎ এই নিয়ে মতান্তর থাকার কথা নয়। 

    হুজুগের মাত্রাটা আরেকটু চড়িয়ে বললে, বাঙালি আবেগপ্রবণ জাত। এ কথাও বাঙালি সৃষ্টি করার সময় বিধাতা বিশেষ করে মাথায় রেখেছিলেন বলেই শুনেছি। 

সব গোল্লা

গ্রীষ্মকাল। প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। হাওড়ার সালকিয়ায় থাকি তখন। ঘিঞ্জি শহর। ছাদে সবাই শুয়েছি। গরমকালে তখন তেমনই শোয়া হত। অনেক রাত। আমার ঘুম আসছে না। পাশে সবাই ঘুমাচ্ছে। মাঝে মাঝে হাওয়া দিচ্ছে আর সামনের অশ্বত্থ গাছের পাতাগুলো হাততালি দেওয়ার মত আওয়াজ করে উঠছে। আকাশে চাঁদ। ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের দল ভেসে যাচ্ছে। অল্পক্ষণের জ

হে সরীসৃপ

দেওয়াল জুড়িয়া দুইখানি টিকটিকি ঘুরিয়া ফিরিয়া বেড়ায়। ঝগড়া, ভালোবাসা লইয়া উহাদের সংসার। সারাদিন কয়েকটি পতঙ্গের খোঁজ পাইলে তাহাদের আমোদে-প্রমোদে দিন কাটিয়া যায়। আমার ঘর ভর্তি এত এত মূল্যবান বই, এত গভীর আলোচনা, কিছুতেই তাহাদের কোনো আগ্রহ দেখি না। তাহারা সুখে শান্তিতে আছে বলিয়াই বোধ হয়।

পাখিটা মরে না

পার্থক্য শুরু হয় পেন্সিল বক্স আর টিফিন বক্সের মান থেকে। তারপর টিফিন বক্সের ভিতর খাদ্যের মান, প্রকারভেদ থেকে। তারপর ইউনিফর্ম হলে কাপড়ের মান থেকে। সাইকেলের মান থেকে, বেল্টের মান থেকে।

আমার ঈশ্বর

স্নান সেরে, শুচি বসনে, মন্দিরের শুদ্ধ পবিত্র আসনে বসে জপ করে যখন বাইরে এলাম, যখন নর্দমার পাশে পড়ে থাকা অচেতন মাতালের পাশে বসে থাকা অসহায় আকুল স্ত্রীর চোখের দিকে তাকালাম, তখন বুঝলাম, আসলে এতদিন আত্মশ্লাঘাকে ঈশ্বরের উপস্থিতি বলে জেনেছিলাম নিজের বুকের মধ্যে, ঈশ্বর তো ওই যে, নর্দমার পাশে বসে, সমস্ত অশুচি, অপমান মেখে ভালোবাসায়, অমনি শুচির আগল খসে পড়ল, সমস্ত বিশ্বজুড়ে এক সর্বগ্রাসী আলো বন্যার মত আছড়ে পড়ল, আমার সামনে কেউ নেই, শুধু তুমি, আমার আগলহীন ঈশ্বর, আমার শ্লাঘার ঈশ্বরকে ছাপিয়ে, আমায় কাঁদিয়ে, ভাসিয়ে, ছাপিয়ে, আমার সমস্তব্যাপী ঈশ্বর।  
Subscribe to চিন্তন