ঘুঁটেগুলো তুলে নিয়ে ফিরতে যাবে, হঠাৎ গাছের উপর থেকে কেউ যেন বলল, দুটো দিয়ে যা না রে, ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছি, একটু আগুন জ্বেলে বসি।
রমার ঠাকুমার তো দাঁত কপাটি লাগার জোগাড়। "রাম রাম" বলতে আবার দু পা এগিয়েছে, অমনি গাছ থেকে আবার সে বলল, রাম নামে পালাবো আমি অমন পাপী ভূত না রে, ভ্যাকেন্সি নেই উপরে তাই মাঝখানে রিজার্ভে আছি। বডি পেলেই ঢুকে যাব।
রমার ঠাকুমা বলল, গোনাগুনতি ঘুঁটে, এও যদি দিই লোকসান হবে যে!
গাছের উপর থেকে সে বলল, খুব লোকসান হবে? তবে এক কাজ কর বাড়ি থেকে একটা কম্বল দিয়ে যা অন্তত।
রমার ঠাকুমা বলল, সেও নেই। যা আছে তাতেই আমরা কুলিয়ে উঠতে পারি না। তোমায় দিলে তো আর...
দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে বলল, তবে কি ঠাণ্ডায় মরে যাব রে....
রমার ঠাকুমা সাহস করে বলল, আর কতবারই বা মরবে দাদা....
সে বলল, তাও। তবু.. আচ্ছা এক কাজ করবি? আমায় তো কিছুক্ষণ জড়িয়েও বসতে পারিস। ভূতে আর কি ভয় বল?
রমার ঠাকুমার কান, নাক, গাল গরম লাল হয়ে গেল। চটপট একটা ঘুঁটে মাটিতে রেখে বলল, এই নাও বাপু, আমি যাই।
রমার ঠাকুমা ফিরছে। কিন্তু মনের মধ্যে কি যেন একটা হয়ে গেল। খালি খালি ফিরতে ইচ্ছা করছে। সব ঘুঁটে দিয়ে আসতে ইচ্ছা করছে। বাইশ বছরের নিস্তেজ শরীর-মনটা যেন পুরীর সমুদ্রের মত ডেকে ডেকে উঠছে।
রমার ঠাকুমা ইষ্টদেবকে স্মরণ করে বলল, আমায় রক্ষা করো ঠাকুর।
রমার ঠাকুমা স্পষ্ট দেখল, ঠাকুর সামনের রাস্তার আলোর নীচে দাঁড়িয়ে, এক হাতে বাঁশিটা নিয়ে, মুচকি হেসে, তার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে বলল, বোকা কোথাকার!