Skip to main content

সুখ

বালাপোষটায় দু-তিনবার হাত বোলালো মিতা। ন্যাপথলিনের গন্ধ বেরোচ্ছে হুহু করে। পুরোনো দিনগুলো যেন তরতাজা হয়ে আছে ন্যাপথলিনের আদরে। পাশের ঘর থেকে কাতরানোর আওয়াজ আসছে। থাকবে না লোকটা। বালাপোষটা?

প্রবর্তন


"আমি যেন আমায় সহ্য করতে পারি।" বৌদ্ধ ভিক্ষু উচ্চারণ করলেন। আড়ষ্ট উচ্চারণ।


    "এর মানে কি?"

কন্যাদিবস

ভারতের মত দেশে, যেখানে এখনও জন্মের আগে লিঙ্গ পরীক্ষা নিষিদ্ধ, অবশ্যই কারণটা সবার জানা, কন্যাভ্রুণ হত্যা যাতে না হয় সেই জন্যে, সেইখানে আজকের এই Daughter's day বা কন্যাদিবস উদযাপন আমার দারুণ লাগল। খুব খুব খুব ভালো লাগল। অনেকেই তাদের টাইমলাইনে নিজের মেয়ের সঙ্গে ছবি দিচ্ছেন। দিন দিন। আমার একটুও আদিখ্যেতা লাগছে না, আমার একটুও মনে হচ্ছে না বাড়াবাড়ি, ন্যাকামি ইত্যাদি ইত্যাদি

কেউ বদলে গেলে 

কেউ বদলে গেলে 
তাকে জিজ্ঞাসা করতে নেই
      "কেন বদলে গেলে?"

বিদ্যাসাগর, কমলা ভাসিন প্রমুখেরা

সংসারে বিদ্যাসাগরের অভাব হয়নি কোনোদিন। আজও নেই। বরং বিদ্যাসাগরের সুনামিতে সমাজের প্রাণান্তকর অবস্থা হয় মাঝে মাঝে। বিদ্যাসাগরেরা প্রাচীনকালেও ছিলেন, আজও আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। বিদ্যাসাগরের ঢেউয়ের গর্জনে কান ঝালাপালাও হবে।

চাঁদের উদয়

গোঁসাই বলল, শরীরের পিছনে মন হাঁটে, না মনের পিছনে শরীর?

    রতন বিড়ি ফেলে বলল, ওই হল। দুই আছে। কখনও এ আগে, কখনও সে।

    গোঁসাই বলল, আজ থাকবি?

    রতন বলল, টোটো দাঁড় করিয়ে রেখে এসেছি। এই যে কমলা। প্রণাম কর।

সত্যিই আমায় মানায়?

যে মানুষটা 
রাতের বেলা
 একফালি রান্নাঘরটুকু ধুয়ে মুছে 
    আগামীকালের রান্নার জন্য যা যা দরকার গুছিয়ে
    নিশ্চিন্তে শুতে যায়

একান্নবর্তী পরিবার

একজন আমার কাছে খুব দুঃখ করত, "দেখো আমাদের একান্নবর্তী পরিবার। আজকাল তো দেখাই যায় না এরকম। কিন্তু কেমন যেন সব ছাড়াছাড়া। কেউ কারোর ঘরে আসে না। সব আলাদা আলাদা রান্না। ভালো লাগে না।"

    আমি শুনে, 'হাঁ, হুঁ' বলতাম।

আলোর নিশ্চয়তা

যদি বলি,
সে এসেছিল

তারা বলবে 
সে কে? সে কেমন? কি তার রঙ গায়ের? কি ভাষা? কি নীতি? কি চায় সে? সে কি রাজা? না সে ফকির? 

আমি উত্তর দিতে পারব না
    সব প্রশ্ন অবান্তর 

সুরমার সংসার

সুরমার সঙ্গে এটা খুব হচ্ছে। আগে মাসে একবার কি দু'বার হয় তো হত, এখন প্রতিদিন হচ্ছে।

             আজ সকালেই, রান্নার পর গ্যাসট্যাস মুছে বসার ঘরে খবরের কাগজটা নিয়ে বসল। অতীন মিউনিসিপালিটি চলে গেছে। মেয়ে টিউশানে। এখন কেউ আসার নেই। যেই ভেবেছে খানিক বাদেই কলিংবেল বাজল, মাসতুতো দিদি আর তার বর। মানে আবার গ্যাস জ্বালো। নইলে আপ্যায়ন হবে কি করে?

নিন্দুক

ছোটোবেলায় একটা গল্প শুনেছিলাম। গল্পটা খুব ক্লিশে হলেও আরেকবার বলতে ক্ষতি কি আছে?
             একজন লোক সে শহরে এক ধনীর বাড়ি কাজ পেয়ে গ্রাম থেকে চলে যায়। কিন্তু মাঝে মাঝে সে গ্রামে ফিরে আসে, আর এসেই বলে, এই তোমাদের রাস্তা? এই তোমাদের হাস্পাতাল? এই তোমাদের স্কুল? এই তোমাদের পঞ্চায়েত? এই তোমাদের শিল্প? এই তোমাদের সততা? ইত্যাদি, ইত্যাদি। 
             তো গ্রামের বেশিরভাগ লোকেই কিছু বলে না তাকে। আবার কেউ কেউ মৃদু প্রতিবাদ করে। কিন্তু বেশিরভাগ লোকই সে নিন্দুকের শহুরে পোশাক, অনুকরণ করা আচার ব্যবহারে মুগ্ধ হয় না বলে সে নিন্দুক যায় আরো আরো রেগে। 

ঝড়ের মধ্যে এসো

ঝড় থামলে যে শান্তি?
সে শান্তি চাই না


ঝড়ের মধ্যে এসো
পাশে দাঁড়াও 

তখন ঝড় থামুক 
     না থামুক

পরোয়া করি না

শামুক

পাঁচু পাগলা জেটিতে এসে বসেছে। গ্রামে সবাই তাকে এই নামেই ডাকে। লঞ্চ আসতে দেরি আছে আরো আধঘন্টা। হঠাৎ খুব জোরে আওয়াজ শুনে ফিরে তাকালো, একটা লরি করে অনেক লোক এসেছে। বড় বড় বক্স বাজছে। হিন্দী গান হচ্ছে। কি ড্রাম পেটানো আওয়াজ। বেশি লোক দেখলে পাঁচু পাগল জড়সড় হয়ে যায়। এখনও হল। তার পিঠের ব্যাগটা পিঠ থেকে খুলে বুকের কাছে নিয়ে নিজেকে শামুকের মত গুটিয়ে বসল।

সে কুড়িয়ে নেবে

প্রতিদিন ফুল চুরি করার সময় 
   তার একটা কথাই মনে হত
       তার নিজের একদিন ফুলের বাগান হবে

নাকি পৌরুষের প্রয়োগশালা?

ওদের স্কুল আলাদা করো
ওদের রাস্তায় বেরোনো বন্ধ করো
ওদের মুখ দেখানো বন্ধ করো
ওদের উপার্জনের আইন বন্ধ করো
ওদের জনপ্রতিনিধি হওয়া বন্ধ করো

বিস্ময়হীন অলসতা

একজন কেউ অপমান করবে
আর তুমি সেই কাদা
    নিজের গায়ে, মাথায়, চোখেমুখে, হাতেপায়ে মেখে বসে থাকবে?

আর একে তাকে ওকে ডেকে
   অভিমান করে বলবে,
       দেখো কি করেছে,
           দাও জল দিয়ে ধুয়ে দিয়ে যাও?

মেঘলা আকাশ

সন্ধ্যে হুস করে হয়ে গেল। আসলে মেঘলা। নইলে এই জুলাই মাসে এত তাড়াতাড়ি অন্ধকার হয়?

               ঝন্টি রাস্তার মাঝখানে বসে একটা বিড়ি ধরালো। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। অনেকদিনের কাজ। রাস্তা চওড়া হচ্ছে। মাঝখানে খুঁড়ে একটা বড় ঢিবি মত করেছে। বাবুদা যা বলছে, তাই করছে। ঝণ্টির লেবারের কাজ। রাণাঘাটে বাড়ি। বাবা নেই। মা নেই। ভাই নেই। বোন নেই। ঠাকুমা ছিল। নেই। সে আকাশ থেকে জন্মেছে। ঠাকুমা ভিক্ষা করত। রাণাঘাট স্টেশানে। মরার সময় ছিল না ঝণ্টি। কেরলে ছিল। বাবাইদা নিয়ে গিয়েছিল কাজে। বিল্ডিং বানানোর ওখানে লেবারের কাজ ছিল। ঠাকুমা মরেছে কেউ জানায়ও নি। কেরলের খাবার সহ্য হচ্ছিল না। খালি খালি বমি পায়খানা। বাবাইদা পাঠিয়ে দিল। রিজার্ভেশন করেনি। জেনারেলে দাঁড়িয়ে বসেই চলে এলো। ভোরে হাওড়ায় যখন ট্রেন ঢুকল শরীর আর দিচ্ছে না। পায়খানা দিয়ে রক্ত পড়ছে। কোনোরকমে বাসে চড়ে শিয়ালদা, তারপর ট্রেন। ট্রেনে তো অজ্ঞানই হয়ে গেল। লোকে বলল গ্যাস। গ্যাস না, খিদে। রাণাঘাটে নামল বেলা ন'টা। দরজায় তালা দেওয়া। কেন? এত সক্কালে মাল বুড়ি ভিক্ষা করতে বেরোল নাকি?

POEMS OF LIFE

 

এ হওয়ারই ছিল

"না বললেও হত" র সঙ্গে "কেন বললাম" এর মুখোমুখি দেখা হল একদিন। কেউ কারোর কাছে কোনো কৈফিয়ৎ চাইল না। তাকালোও না একের অন্যের দিকে। দুজনে দুজনকে এড়িয়ে, ফিরে যেতে, হাওয়া উদাস হল, বলল,

    "এ হওয়ারই ছিল"। 

খেলনার দোকানগুলো

বিশ্বকর্মা পুজো মানে দারুণ উত্তেজনা। উঁহু, এই আজকের কথা না, সে বহুযুগ আগেকার কথা, যখন আমার উচ্চতা কম ছিল, দাড়িগোঁফ হয়নি, কেশ কৃষ্ণবর্ণ ছিল, চোখে চালসে পড়েনি, এবং সর্বোপরি সংসারে নানা বস্তুর উপর কুতুহল ছিল বেজায়।

নিজের চিত্তের মাধুর্য

মহালয়ার দিন। গঙ্গার ঘাটে প্রচণ্ড ভিড়। বাবা তর্পণ করতে যাবেন। সঙ্গে আমিও গেছি। কারণ, বাবা স্নানে নামলে কাপড়জামা, চটি পাহারা দিতে হবে। বাবাকে দেখছি আগের দিন রাতে একটা মোটা বই থেকে কি সব লিখছেন। বইটা খুব সম্ভবত 'পুরোহিত দর্পণ'। ঠাকুর্দার বই। বইটার প্রায় নির্বাণ প্রাপ্তির সময় এসে গেছে, এতই ছেঁড়া।

পাঁচুর সংশয়

সমস্যা ঘোরতর হইল। পাঁচু তর্কালঙ্কারের সাধ ছিল পিতামাতার স্বর্গবাস হইলে গয়ায় গিয়া পিণ্ডদান করিবে, এবং পিতামাতার স্বর্গে সুখে দিনযাপনের একটি পাকাপাকি ব্যবস্থা করিবে। 
             পাঁচুর পিতামাতার দেহাবসান হইল। কালের নিয়মেই হইল। ঘোরতর নিন্দুকেও কহিল, পাঁচু যা সেবা করিয়াছে পিতামাতার, তাহা এই কলিকালে দৃষ্টান্ত হইয়া রহিল। গ্রামের সকলে ধন্য ধন্য করিল। পাঁচু শুধু সেবাই করিল না, সেবার নানা মুহূর্ত ইনস্টাগ্রামে বাঁধাইয়া রাখিল। যাহাতে পরপারে গিয়াও সে সকল চিত্র দেখিয়া পিতামাতা সুখী হইতে পারে।

খোঁজ

"এত দূরে গিয়ে ছাড়বি যেন আর ফিরে আসতে না পারে... এবার ফিরে এলে তোদের দুটোর পিঠে এই বাটামটা ভাঙব দেখিস”....
             একটা বস্তায় ভরে ছেড়ে এসেছিল। সাইকেলের পিছনে বস্তা ধরে বসেছিল ছোটোভাই। কথা বলছিল না, কাঁদছিল। জানে সে। প্যাডেলে চাপ দিতে বুকে লাগছিল। যেন খায়নি অনেকক্ষণ। অনেক ঘুরে ঘুরে মাঠে গিয়ে যখন ছাড়ল, তখনও বাচ্চাটা লেজ নেড়ে নেড়ে দুই ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে ছিল। যেন বেড়াতে নিয়ে এসেছে। ভাই একটা বিস্কুট ছুঁড়ে দিয়ে বলেছিল, যা!..... তারপরেই ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলেছিল। বলেছিল, দাদা, আমরা ওকে রোজ দেখতে আসব, আসবি?

অথোরিটি

কয়েকটি কথা আবশ্যক বিবেচনা করিয়া লিখিবার প্রয়াস পাইতেছি। আমি নানাবিধ বিষয় লইয়া লিখি। যে বিষয় আমায় পাইয়া বসে সেই বিষয়ই আমায় দিয়া লিখাইয়া ছাড়ে। কিন্তু কোনো বিষয়েই আমি নিজেকে অথোরিটি মনে করি না। অথোরিটির কোনো বাংলাই মনোমত না হওয়ায় অথোরিটিই লিখিলাম। 

অধরম মধুরম

অধরম মধুরম।
 

    বলা হল মধুর। মাধুর্য। এ কোথায়? যে দেখে না, যা দেখে?

    দর্শন থাক। হৃদয় কি বলে? যা দেখে? না, যে দেখে?

পরিবার

পরিবার মানেই কি ভালোবাসার ক্ষেত্র? "মায়ের ভায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ?"... এ পুরো ঢপের কেত্তন। এত অত্যুক্তি বাপু খুব কম গানেই শোনা যায়। পদে পদে অতিকথন। সে যাক, গীতা মনে আছে? আর ধুর, পুরো গীতাটা কে মুখস্থ বলতে বলেছে, কনটেক্সটটা নিশ্চয়ই জানা আছে। সেটা কি পারিবারিক সুখকর কিছু ভাবভালোবাসার উদাহরণ?

আত্মহত্যা করবেন?

আত্মহত্যা করবেন? বেশ। আমি একটু সময় নেব। টুল দড়ি সব রেডি? আচ্ছা পাখাটাও বেছে নিয়েছেন? এই পাখাটায় ঝুলে পড়বেন? বেশ বেশ। ভালো সিদ্ধান্ত। খেয়েছেন কিছু?

তুমিই আমার সব

তোমায় কৃতজ্ঞতা জানাতে সংকোচ হয় 

নদী কি জলের কাছে কৃতজ্ঞ থাকে? 

তোমায় কৃতজ্ঞতা না জানালে
 নিজেকে অকৃতজ্ঞ লাগে

মাটির প্রদীপ কি 
   জ্বলাপোড়া শেষ হলে
      মাটির বুকে ফিরে বলে না -
               তুমিই আমার সব!

ঠা-দা

উনি দম আটকে এলেই জানলার দিকে চলে যান। পরনের লুঙ্গিটা হেঁচড়ে যেন খুলেই যাবে শরীর থেকে। গারদ দুটো আঁকড়ে ধরে নাকটা খোলা বাতাসে বার করে দেন। বিস্ফারিত চোখে সামনের পার্কটার দিকে তাকিয়ে বলেন, পরী... পরী..

বলতে নেই

- মায়ের নাম কি?
- বলতে নেই
             এখনও মায়ের নাম বলতে দ্বিধা। অবচেতন খটকা। ঠিক হবে কি? এটা বিবেক না। এটা সংস্কার। কুসংস্কার না। ভুল সংস্কার। কারণ বাবা প্রধান। মা দ্বিতীয় অভিভাবক। মায়ের নামে আবার কিসের পরিচয়? বাড়ির নেমপ্লেটে দেখেছি বাবার নাম, তারপর তাদের কৃতী সন্তানদের নাম। অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে। সে ইদানীং চোখে পড়ে টুকটাক। কিন্তু মায়ের নাম নেই। যদি তিনি তথাকথিত শুধুমাত্র গৃহবধূ হন তবে তো আরো সে নাম থাকার প্রশ্নই আসছে না।

প্রশ্নপত্র

যেদিন ওর প্রথম সুগার ধরা পড়ল,
    এদিকে তো মানুষটা প্রচুর খেতে ভালোবাসেন 
একটু হেসে স্ত্রীকে বলেছিলেন, 

     "ঈশ্বর পরীক্ষা নিচ্ছেন"

যেদিন প্রথম পাইলস ধরা পড়ল
    রক্তারক্তি অবস্থা
ঘেমে-নেয়ে টয়লেটের বাইরে এসে বলেছিলেন 
     করুণ হেসে

"বুঝলে গো, ঈশ্বর পরীক্ষা নিচ্ছেন"

খাঁটি বাস্তব

যে মানুষ অপমানের উপযুক্ত জবাব দিতে পারে না, সে মনের মধ্যে গুমরে মরে। সে তখন একটা খেলায় মাতে। সে প্রতিপক্ষকে কল্পনায় ভেবে নিয়ে তার মুখে কাল্পনিক অপমান বাক্যগুলো তৈরি করে তার উত্তর দেয় মনে মনে। এ এক যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। ক্রমশ এ খেলা তাকে গ্রাস করে নেয়। সে রাতদিন নিজেকে দ্বিধাবিভক্ত করে, এক খণ্ড প্রতিপক্ষকে দেয়, আরেকপক্ষকে নিজের দিকে রাখে। ক্রমশ সে মনে মনে দুর্বল হয়। বুঝতেও

প্রতিটা মেয়ে আত্মগোপন করে সমাজে জন্মায়

সেদিন খাঁচার পাখি আর বনের পাখির মধ্যে তুমুল তর্ক হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের গান কি কবিতা যাই বলুন, আমরা পড়েছি। তাদের মধ্যে যে একটা মিলনের পিয়াস ছিল, তাও পড়েছি। কিন্তু তা হয়নি। বিধাতার মনে কি ছিল সে জানি না, কিন্তু বনের পাখিটার মনে কি হয়েছিল তারপর, বনে ফিরে গিয়ে? তার কি একবারও মনে হয়নি যে খাঁচার পাখি যা বলেছে সে তার প্রাণের কথা নয়?

গুরুমশায়

"হাসছ কেন খোকা, এটা কি নাট্যশালা?"


    শিক্ষক দিবসে 'পথের পাঁচালী'র গুরুমশায়কে ভুলি কি করে? বিশ্বের দরবারে ভারত থেকে নানা মহান মহান গুরুমশায় বেদবেদান্ত, উচ্চাঙ্গের নৃত্যগীত শিখিয়েছেন এ ইতিহাস সাক্ষী। তাছাড়াও নানা খ্যাতনামা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও বহু ভারতীয়। 

বরবটি

(এ নিতান্ত মজার জন্য লেখা। মতামত সম্পূর্ণ ক্ষেমীর। লেখকের দায় নেই।)

নিজেকে নিঃশেষে দিয়ে

তুমি পরিপূর্ণতাকে বলো সত্য
তুমি পরিপূর্ণতাকে বলো প্রেম
তুমি পরিপূর্ণতাকে বলো ঈশ্বর

আমি অসম্পূর্ণতাকেই বলি সত্য
আমি অসম্পূর্ণতাকেই বলি প্রেম 
আমি অসম্পূর্ণতাকেই বলি ঈশ্বর 

তোমারই শুধু যেন 
    কোথায় যাওয়ার তাড়া
কি একটা হওয়ার যেন
          পবিত্র জেদ

লে লে, আমায় গেল

এ আমার একার অস্তিত্ব। অল্প অল্প ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের মত। আকাশ ধরো সময়। ধরো সব মেঘ বিছিয়ে দিলেও আকাশ শূন্য থেকে যাবে। আমি সব সময় একা। এত মানুষ এলো গেলো। এত ভালোবাসা-বাসি। এত বুকফাটা বিরহ। এ সবই হল। কিন্তু দাগ কাটল না। আমি একা। এটাই আমার পরিচয়।

অতিশয়োক্তি

সত্যের সমস্যা মিথ্যাকে নিয়ে ততটা নয়। মিথ্যা সত্যের সতীন। তাদের মধ্যে কোন্দল আছে যেমন, তেমন পাশাপাশি অবস্থান করে সংসার চালানোও আছে। সত্যে মিথ্যায় মিলে জগৎ সংসার। এ আমরা একপ্রকার মেনেই নিয়েছি। এইতেই স্বাভাবিক ছন্দ আমাদের। কে আর বেছে বেছে খাঁটি সত্যে জীবন ধারণ করবে রে বাবা, অমন পরমহংস হলে আমাদের পেট ছেড়ে দেবে। তাই মানুষের আরেকটি আবিষ্কার হল, অতিশয়োক্তি। 

হ্যাপি জার্নি

তুমি যা বলছ সে অতীতের কথা। অতীতের স্মৃতিগুলো আঁকড়ে তো বেঁচে থাকা যায় না, এটা আমরা দু'জনেই বুঝতে পারছি, না কি? খারাপ দু'জনেরই লাগছে। ভবিষ্যতেও লাগবে। কিন্তু অতীতটা অতীতই, তাকে জাগিয়ে রেখে বর্তমান চলে না, এটা কি সত্যি নয়? 
 

ভবিষ্যৎ কি বলে

প্রভাব কার বেশি? শক্তির, না নীতির? এর কোনো স্পষ্ট উত্তর নেই। নীতি আলোচনার। কূটনীতি, উদারনীতি ইত্যাদি। কিন্তু সেই নীতিকে বাস্তবে আনবে কে? শক্তি। কোন শক্তি? প্রশাসনিক শক্তি। তবে নীতি কার উপর নির্ভর করছে? প্রশাসকের উপর।