Skip to main content

ঝুরঝুর ঝুরঝুর

হাতের মুঠোর ভিতর দিয়ে বালি ঝরছে
   ঝুরঝুর ঝুরঝুর ঝুরঝুর ঝুরঝুর

সব বালি পড়ে গেলে, মুঠোটা খুললাম
   কয়েকটা বালি আঙুলের ফাঁকে আটকে

দস্তয়েভস্কির 'ব্রাদার্স কারামাজোভ'

দস্তয়েভস্কির 'ব্রাদার্স কারামাজোভ' আমার জীবন দর্শনকে দুটো টুকরো করে আছে। এক, প্রাক কারামাজোভ, দুই উত্তর কারামাজোভ। এর বইটা পড়ার পর থেকে সব বই-ই কেমন - "এও বাহ্য আগে কহো" হয়ে গেছে।

সুরাসুর

যথারীতি এ বছরও মা দুগ্গা গট-আপ কেস করে, একটা আই ওয়াশ করে বেরিয়ে গেলেন। একখেন অসুরও মারা গেল না। বিশেষ করে কাল রাতে বেপাড়ায় নবমীর নিশির মদো নৃত্যের হুল্লোড় কথাটা প্রমাণ করেই ছাড়লে। এই সুরার মত অসুর সংসারে খুব কম আছে। কত মানুষকে অমানুষ, অমানুষ থেকে মহিষাসুর হতে দেখলাম তার ইয়ত্তা নেই।

ঝুল বারান্দা

উঠে বসে চশমাটা খুঁজতে শুরু করল হাতড়ে হাতড়ে। রাত দুটো। বৃষ্টির শব্দটা তুমুল। সাথে ঝোড়ো হাওয়া। জানলার কাঁচটা আটকাতে হবে। পা ভিজে যাচ্ছে। কিন্তু চশমাটা?

তা না নানা, তা না নানা

তা না নানা, তা না নানা
বাজি দেব, বোম দেব
নতুন জুতো দেব, প্যাণ্ট দেব
বেল্টটা দেব জামাও দেব
দুগ্গার সিংহটাকে আমায় দে না
তা না নানা, তা না নানা

সব অঙ্ক কষে দেব,
সব ইতিহাস পড়ে নেব
পটল খাব, ঝিঙে খাব
শুক্তো, কুমড়ো তাও খাব
একটা কথা শোন না, শোন না
দুগ্গার সিংহটাকে ঘরে আন না
তা না নানা, তা না নানা

আবছা অন্ধকার হয়ে আসছে

আবছা অন্ধকার হয়ে আসছে
বৃষ্টির একটানা শব্দমালা স্পষ্ট হচ্ছে ধীরে ধীরে

   তোমার না থাকাটাও....

নির্দ্বিধায়

পরিচয়ের কি আছে?
এক চিলতে বুকে যতটা ভালোবাসা ধরে
জীবনের দাবি তার চাইতে অনেক বেশি

সংশয় রেখো না
দু'পলকের জীবনের যাবতীয় হিসাব
এক ফুঁয়ে ওড়ায় মৃত্যু

কিছু মানুষকে কালের হিসাবে চিনি তো বহুদিন
বলা যায় কয়েক যুগ
কিন্তু বুঝতে পারিনি একরত্তি

পরিচয়ে কি আসে যায়?

তুমি নির্দ্বিধায় এসো
যদি ফিরে যাওয়ার তাড়া না থাকে

দুনিয়া তো এক বাজার

দুনিয়া তো এক বাজার
    তোমাকে খুঁজে পাওয়ার উপলক্ষ্য মাত্র

চলো এ বাজার ছেড়ে বাইরে
      একটু নিরালায় বসি

কুলটা

ফুলগাছটা কেনার সময় খেয়াল করেনি, ফুলটার রঙ, পাপড়ির বাহার শুধু চোখে পড়েছিল, কাঁটাগুলো খেয়াল করল বাড়িতে আনার পর।

প্রেমের জন্য হাপিত্যেশ করিনি

প্রেমের জন্য হাপিত্যেশ করিনি
   তোমার জন্যে করেছিলাম

দুনিয়া ওকেই প্রেম বলে
            পরে জেনেছিলাম

মধ্যরাতের প্রমোদাগার

অপু দিদির সাথে কাশের বনে ছুটেছিল। শরতের সেই দৃশ্যই হয়ত বা বাঙালীর মনে শেষ ডক্যুমেন্টেড শরতের দৃশ্য তার আগে পরে আরো ছিল আর হবেও বা। কিন্তু সেই দৃশ্যটাই আমাদের শরতের সিগনেচার টিউন।

ওরা তিনজন

অবন্তী, মল্লিকা, রেণু
তিনজন আজও দরজার কাছে বসে
    সন্ধ্যেবেলা
          রোজকার মত

অবন্তী, মল্লিকা দুই জা, রেণু শাশুড়ি

আজ বড্ড অন্ধকার লাগছিল ওদের বারান্দাটা
   মুখগুলো স্পষ্ট দেখতে পেলাম না

৬৫ ডেসিবেল

হেমন্ত, মান্না, কিশোর, আশা, লতা ইত্যাদি নিরীহ মানুষগুলোর অসামান্য প্রতিভাও যে কি প্রবল ভয়ংকর হতে পারে তা ফের টের পাওয়ার সময় শুরু হল। ৬৫ ডেসিবেলের নিকুচি করেছে। লাগাও গান...ফাটুক পর্দা..মরুক বুড়োরা...."শালা এই কদিনের তো মামলা একটু সামলে নিন না কত্তা!!!"

ছুটি

ক্যাপ ফাটালে একটু জোরে
সবাই কেমন আসে তেড়ে
বলে, ওরে কি দুষ্টু রে
নে তো ওর বন্দুক কেড়ে
দৌড়ে তখন মণ্ডপে যাই
দুগ্গা মায়ের মুখে তাকাই
দুগ্গার কেন মুখ নড়ে না?
ওকি বাংলা বলতে পারে না?
এতগুলো হাত কোলে তো নেয় না
একটা দিনও চুমুও দেয় না
কি রোজ শুধু মন্ত্র শোনে
অং বং ছং থাকে কি মনে?
নড়ে না চড়ে না খায় না দায় না

দেখ না ওরে

এ পূজোটা তোদেরই থাক
   বাবার মুঠোতে আঙুল পুরে
    বিস্ময় চোখে ঘুরে ঘুরে

পুরোনো রাস্তাটা ধরে

পুরোনো রাস্তাটা ধরে আবার হেঁটে এলাম
    কয়েকটা ঝরা হলুদপাতা ফুটপাথের ধারে পড়েছিল সেদিন
    এত বছর পরেও সেভাবেই রয়ে গেছে দেখলাম
         কয়েকটা পাতা হাতে নিয়ে ভাবলাম ফিরি
    তবু কি জানি কি ভেবে

সরি, ভুলে গিয়েছিলাম

ছাদের ধারে কার্নিশ ঘেঁষে দাঁড়িয়েছিলাম
    একাই ছিলাম। রাত কটা হবে তখন?
        সাড়ে বারোটার কাছাকাছি
    দূরে কিছু কুকুর জটলা করে ডাকছে
           কয়েকটা বাড়িতে আলো জ্বলছে

বর্ণপরিচয়

১৯ পাঠ

গোপাল অতি সুবোধ (বা)লোক। সে কাহাকেও ধর্ষণ করে না। যাহার সহিত তাহার বৈবাহিক সম্পর্ক তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধেও যৌন সংসর্গ করে না। যাহা পায় তাই খায়, যাহা পায় তাই পরে। ভাল খাব, ভাল পরিব বলিয়া অফিসে ঘুষ নেয় না। সবার আগে অফিসে যাইয়া নিজের কম্পিউটার খুলিয়া বসে। মন দিয়া কাজ করে। দ্বিপ্রহররের কর্মবিরতির সময় বন্ধুদের সাথে গল্প করে, ফেসবুক করে, ওয়াটস অ্যাপ করে। কোনো মহিলা কর্মচারীর সহিত অসভ্য ব্যবহার করে না। কাউকে কোনো ঘরে আলাদা ডাকিয়া লইয়া নিজের পদের ও অঙ্গের অসদ্ব্যবহার করে না। বাড়ি ফিরিবার কালে কি অফিস যাওয়ার কালে ট্রেনে বাসে নিজের হাত, জিভ ও চোখের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। ট্রেনে পর্ণ দেখে না। কাহারও কোনোরূপ উদ্বিগ্নতার কারণ হয় না। বাড়ি ফিরিয়া আসিয়া কিছুক্ষণ টিভি দেখে। স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের সহিত গল্প করে। বন্ধুদের আড্ডায় যায় আবার বেশি দেরি না করিয়াই ফিরিয়া আসে। রাতের খাবার পরিবারের সাথে একসাথে খাইয়া শুইয়া পড়ে। ...

ট্যু গণ্ডগোলস


"Reformation of society in line with 'BARANASHRAMIC (বর্ণাশ্রমিক)' tradition, creation of a state and then a world's state without the so called Democratic system"
'অর্থাৎ আমরা আমাদের বর্ণভেদ ব্যবস্থার আস্থায় তোমাদের তথাকথিত গণতন্ত্রের বিশ্বাসকে হটিয়ে নতুন পৃথিবী গড়ার শপথ নিচ্ছি। এটাই আমাদের লক্ষ্য।'

সত্য পরিচয়


===
জানলা দরজা বানাতে গেলে
  আগে দেওয়াল বানাতে হয়

বোকার হদ্দ তুমি!

জানলাকে বলো - আকাশ
দরজাকে বলো - মুক্তি


===
চিড় ধরা দেওয়াল থেকে বাঁচায়
    আকাশ, খোলা মাঠ, নদীর জল

দৃষ্টি

সন্ন্যাসী সব ত্যাগ করল
শুধু ত্যাগ করল না তার ত্যাগের স্মৃতি

ভোর থেকে সন্ধ্যে সে তার ত্যাগের সমতুল বস্তু খুঁজে বেড়ায়। পায় না।

ঈশ্বরকেও তুচ্ছ মনে হয়। সে তো জগৎভোগী!

সন্ন্যাসী তাকালে ভস্ম হয়
  জীবজন্তু গাছপালা, এমনকি মানুষও

আত্মহনন আর না

(বড্ড বেশি বাড়ছে আত্মহত্যা। সব আত্মহত্যা ঠেকানো সম্ভব কি না জানি না। তবু বহুলাংশে সম্ভব হয়ত। একটু শুনতে চাওয়া। নিজের সাধ্যমত।)


সমাজ মানে তো সহস্রহাত
  হাত বাড়ালে একটা না একটা হাতে ঠেকবেই

শরৎ অভিসার

কাশ বর্ষাকে দেখে ইতস্তত করল খানিক
বর্ষা বলল, আমার হল যাওয়ার দেরি, তুমি এসো

কাশ দ্বিধা ভরে আকাশের দিকে চাইল
সেখানে কালো মেঘের ঘনঘটা
দীঘির জলের দিকে চাইল
সেখানেও কালো মেঘের ছায়া

কাশের মুখ হল ম্লান।
তবে কি শরতের সাথে হবে না মিলন?
  ব্যর্থ হবে এবারের আসা?

মূর্তিগুলো

এই মূর্তিগুলো দুদিন আগেই মণ্ডপ আলো করেছিল। মন্ত্র, স্তব, আরতি, ভোগ, মালা, চন্দন, ভক্তি - সব এই মূর্তি কেন্দ্র করেই (অশালীন আচরণ ভক্তির নামেও প্রবল, সে না হয় অপসংস্কৃতি। তা তো শাস্ত্রে লেখা ছিল না।)
        আজ সেগুলো সার দিয়ে গঙ্গার তীরে রাখা। মাটির সাথে মিশে যাবে, বৃষ্টির জলে ধুয়ে। তবে কি হিন্দু মূর্তিপূজক? পৌত্তলিক? তবে এরা এত অনাদরে অবহেলায় কেন?

মন একটা

মন একটা
তার হাজার টুকরো
প্রতিটা টুকরো স্বেচ্ছাচারী, স্বাধীন, একগুঁয়ে

পা কাটছে,
রক্তে থাকছে কোনো টুকরোর আত্মজীবনী

মন একটা
তার হাজার টুকরো
একান্নবর্তী পরিবারের একচিলতে ছাদ
       একটা বেখাপ্পা হৃদয়

তোমারই আছি

তুমি যেন অলৌকিক

হাত ছুঁইনি তোমার
পাশে বসিনি
কয়েক পা হেঁটেছিই শুধু
   তাও বাজারের মাঝখানে

বাজার মিলিয়ে গেল
    তোমায় রেখে

তোমার চোখের সাথে
চোখ মিলিয়ে
ঘুরে এসেছি কতবার

বারণ করোনি,
চোখের ভাষা দুর্বোধ্য করে
    ভ্রান্তও করোনি

এও আরেক দেবীপক্ষ

এও আরেক দেবীপক্ষ
"যে সব মহিলাদের দেখতে ভালো নয়, মানে সেই অর্থে সেক্স অ্যাপিল কম, তারাই নারীবাদী হয়ে মিছিল মঞ্চ করে বেড়ায়।"
বক্তা একজন মহিলা। তিনি জিজ্ঞাসিতা হয়েছিলেন, কেন এত সং এর মত সেজেগুজে কুমারটুলিতে পোজ দিয়ে ছবি তুলে তুলে ফেসবুকের পেজ ভরানো। সেকি পণ্য, না বিজ্ঞাপন?

ওগো চিত্তগামী

ওগো চিত্তগামী

প্রাণের কেন্দ্রে আমারও তো একটা ভোর আছে
 আশ্বিনের আকাশ যদিও
    ছেয়ে আছে আজ কালো মেঘে

তবু জানি,
   আমার নীলাকাশ হারিয়ে যায়নি
        কালের স্রোতে সেও আসছে আমারই কাছে

সেদিনের একটুকরো ছেঁড়া গপ্পো

স্যুটকেশ গোছানো বাকি
সব কিছু খাটের উপর বার করে রাখা
     তবু গোছানো হয়নি।

স্নান করতে ঢুকল। জলটা তেমন ঠাণ্ডা নয় যেন আজ।
চশমা চোখে নেই, তবু বুঝতে পারছে বাথরুমের ছাদের দেওয়ালের কোনে একটা বড় মাকড়সা।
   ঝড় হয়েছে কাল সন্ধ্যেতে, ঢুকে পড়েছে।

সেরকম ভয় করল না। একবার ভাবল ডাকে, তারপর ভাবল, থাক ঘুমাক। ট্রেনে তো ঘুম হয় না।

আনন্দ সংবাদ

আনন্দ সংবাদ! আনন্দ সংবাদ! আনন্দ সংবাদ!
বেলুড় মঠে একটি প্রকাণ্ড কনভেনশান হল গঠিত হইতেছে।
খরচ?
মাত্র কুড়ি কোটি..২০ কোটি...20 crore....
উপযোগিতা?
উহাতে : -
১) অ্যাট্রিয়াম থাকিবেক ( atrium is a part of building such as hotel or shopping centre that extends up through several floors of the building and often has a glass roof.....ডিক্সনারি মতে)

কেউ-ই

কেউ পুরো অন্ধকারে
    কিম্বা পুরোপুরি আলোতে দাঁড়িয়ে নেই

  তুমিও না। আমিও না।

  অদলবদল প্রায়শই হয়
      আমারও হয়। তোমারও হয়।

কোথায়?

আমাকে অনেকে অনেক কথা দিয়েছে। ভাগ্যে সেগুলো তারা রাখেনি। তা না হলে, অত কথা আমি রাখতাম কোথায়?

    কোনো মানুষ কথার খেলাপ করলে নাকি সে মানুষটার গুরুত্ব কমে যায়। বালাইষাট, তা হতে যাবে কেন? বরং শান্তি পাওয়া যায় এই ভেবে যে - আরে একে তো অন্তত সিরিয়াসলি না শুনলেও হবে! সবাই যদি এত সিরিয়াস হবে, তবে হাল্কা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া মানুষ পাব কোথায়?

বেমানান নাতো!

বদলায় তো সবাই
কাউকে বদলায় সময়
কেউ বদলায় নিজেকে, সময়ের আগে

মেয়েটাকে দেখলাম অনেকদিন পর
চোখে যে দুটো কালোদীঘি ছিল
    শুকিয়ে ফেলেছে। এখন আগুন।
চলনে আগে দ্বিধা ছিল, ব্রীড়া ছিল,
          এখন দৃঢ় স্থির সলক্ষ্য পদক্ষেপ।
সিঁথিতে সিঁদুর ছিল। কোর্টে রেখে এসেছে।

নাগরিকত্বের অধিকার

নাগরিকত্বের অধিকার পেলেই মেলে বুঝি নগরের অধিকার ?

বন্দুকও তো একই শুনলাম
পাল্টা যুক্তি ফিরিয়ে দিতে বুলেট লাগে কেন?

সমস্যার সমস্যা

আদৌ কোনটা সমস্যা আর কোনটা সমস্যা না, সেটা বোঝাই একটা জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনটা তৈরি করা হয়েছে আর কোনটা নিজে থেকেই একটা সমস্যার রূপ নিয়েছে সেটা বড্ড গোলমেলে ব্যাপার। যেমন রোহিঙ্গা সমস্যাটা কিছুটা তৈরি করা আর বাকিটা ঐতিহাসিক জটিলতা। জল ঘোলা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল যতটা উদ্বিগ্ন হওয়া দরকার তা হয়ে উঠছে না। এ ওকে, সে তাকে দোষারোপ, চাপসৃষ্টি ইত্যাদিতেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। এমনকি যথেষ্ট পরিমাণ

আপনার খাতাটা দেখাবেন?

লেখক তো স্রষ্টা। কবি স্রষ্টা নন, সাক্ষী। একটা সৃষ্টির সাক্ষী।
সব শেষে বড়জোর চুলটা একটু ঠিক করে দেওয়া, টিপটা মাঝখানে কিনা দেখে নেওয়া কিম্বা জুতোর ফিতেটা একটু আঁট করে বেঁধে দেওয়া।

শপিংমলে থিকথিক করছে ভিড়

শপিংমলে থিকথিক করছে ভিড়। সন্ধ্যেবেলা। পেমেন্টের লাইনই চার পাঁচটা। একটা অবাঙালী পরিবার। হিন্দিভাষী। হিন্দিটা শুনলে ছত্রিশগড়ের মানুষ মনে হয়। ভদ্রলোকের বয়েস চল্লিশের একটু উপরে। ভদ্রমহিলার তিরিশের আশেপাশে। সালোয়ার কামিজ পরা শীর্ণ শরীরটায় যেন ভার বহনের আর শক্তি নেই। চোখ দুটো কোটরে। একটা বিপন্নতা আর উদ্বেগ মিলেমিশে চাহনি।

রোহিঙ্গা

কবিতা লিখব? পারছি না যে
বুক কামড়ে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা

পূজাবার্ষিকী দোকানেই থাক
ঘর বার শুধু লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা

কান্না পাচ্ছে, মাথার মধ্যে গুলিয়ে দিচ্ছে
কূটনীতি থেকে তথ্যপ্রমাণ ধুলিঝড় শুধু ধুলিঝড়
চোখেতে ভাসছে গলাকাটা শিশু
আল্লাহ মালিক, রাম প্রভু, দয়াল পিতা
  কই গেল সব!
বুকের তন্ত্রী ছিঁড়ে ঝুলছে রোহিঙ্গা!

নিক

নামতার মত মুখস্থ করা সংলাপগুলো
  আলনায় কাপড়ের মত সাজিয়ে একটু বসলাম।
লালার সাথে মিশে মিশে এখনও ভিজে,
     খানিক শুকিয়ে নিক।

মনের থেকে মন ছাড়িয়ে আগলা দিয়ে বসে
   সব ক্ষত তো মিলাবে না,
      তবু কিছু ক্ষত তো মিলিয়ে নিক।

যা তাই-ই

হঠাৎ করে ভীষণ মেঘ করল। কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। সব কিছুরই কি আর পূর্ব প্রস্তুতি থাকে?
এই যেমন যে মহিলা যৌনাঙ্গে ভাঙা বোতলের টুকরো নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে, ওর কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছিল?
তুমুল বৃষ্টি নামল। সাথে কি বাজ রে বাবা! ইনভার্টার খুললাম, ফ্রিজ, টিভির প্লাগ খুললাম। খুলব না? গেলবার বাজ পড়ে ইনভার্টারটা পুড়ল না? কিন্তু সব সময় কি আর দ্বিতীয় সুযোগ পাওয়া যায়!

মানুষই খুঁজত!

বাবা হাস্পাতালে থাকাকালীন কয়েকবার ব্লাড আনতে ব্লাডব্যাঙ্ক যেতে হয়েছিল। একটা আশ্চর্য জিনিস দেখলাম। যারা ব্লাড নিচ্ছেন তারা কেউ ব্লাডগ্রুপের প্যাকেটটা সেভাবে চেক করছেন না। শুধুমাত্র যে গ্রুপটা চান সেটাই দেওয়া হয়েছে কিনা মিলিয়ে দেখছেন।

ভালোবাসা

দীঘির জলে ফুলটার প্রতিবিম্ব। ফুলগাছটা একদম দীঘির পাড় ঘেঁষে।

বাজে গল্প

পদার অঙ্কে মাথা যে কোনোকালেই ভালো নয়, তাহা আমরা সকলেই জানিতাম। তবু অসুবিধা ছিল না। বিদ্যালয়ের গণ্ডী পার করিয়া চায়ের দোকান করিয়া দিব্যি সংসার পাতিয়াছিল।
     কথায় বলে দশচক্রে ভগবান ভুত হন। আর এ তো সামান্য পদা মণ্ডল। হইল কি, কাহার কথা শুনিয়া জানি না, পদা রাজনীতিতে যোগদিল।

স্নিগ্ধ বিশ্বাস

গুরু বললেন, "ঈশ্বরলাভ করতে কাম ত্যাগ করো"

শিষ্যের কামঘরে পড়ল তালা। তিলে তিলে জমে উঠছে বিষ। বাইরে ধূপধুনো চন্দনের গন্ধ। আরতির কাঁসরের আওয়াজ, পঞ্চপ্রদীপের শিখার তাপ। দিনে দিনে তালাতে পড়ল জং।

ধর্ম-সত্য-বিজ্ঞান

বর্তমানে কর্পোরেট গুরুমহলে সদগুরুর নামটা বহুল পরিচিত। জাগ্‌গি বাসুদেব। তার দাবী তিনি আলোকপ্রাপ্ত পুরুষ। তিনি মানবকল্যাণে নিয়োজিত। সে কল্যাণে বহুল অর্থ-বিত্ত-নেতা ইত্যাদির যোগ। একজন বরিষ্ঠ সাংবাদিক তাকে রামরহিম, আশারাম ইত্যাদি ধর্মগুরুদের বিষয়ে মতামত জিজ্ঞাসা করেন। তিনি উত্তর করেন, তাদের আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না, মিডিয়ায় আমার বিশ্বাস নেই, আমি নিজের অনুভবের বাইরে কিছু বলি না, আর দেশের আইনের পথে

7ই অগাস্ট থেকে আজ 9ই সেপ্টেম্বর

7ই অগাস্ট থেকে আজ 9ই সেপ্টেম্বর, বাবাকে নিয়ে ফিরলাম BR SING হাস্পাতাল থেকে। মাঝে অগাস্টের শেষের ক'দিন চলল যমে মানুষে টানাটানি, প্রায় দশ/বারোদিন।

অর্থহীন

আসলে তো সব অর্থহীন।
অর্থ কিছু বানিয়ে নিই।
অর্থ কিছু বানিয়ে দিই।

আসলে তো সব অর্থহীন।
উদ্দেশ্যহীন। শূন্যে লীন।

সব যুক্তির শেষে দাঁড়ানো
যুক্তিহীন।
আসলে তো সব অর্থহীন
         অর্থহীন অর্থহীন।

দুটো বিচ্ছিন্ন বিন্দুর সংযোগ

হলিউড অসম্ভব কিছু ভালো সিনেমা বানিয়েছে বিজ্ঞানীদের উপর। আমাদের খেলোয়াড়, সাধক, অপরাধী, তারকা ইত্যাদিদের জীবনী বানিয়ে যদি কিছু রিল বা সময় বাকি থাকে তবে সেই ধরণের সিনেমা বানানো হোক না। বিজ্ঞান আর বিজ্ঞানীদের উপর।

মাটি না ধূমকেতু?

মানুষের চাহিদার শেষ নেই। ধন,মান,যশ ইত্যাদি ইত্যাদি। কত কত মহাপুরুষেরা সাবধান করে গেলেন যুগ যুগ ধরে, 'ওরে অত চাস নে, চাস নে', তা কে শোনে কার কথা! আমিও শুনিনা, তুমিও শোনো না, রাম শ্যাম যদু মধু কেহই শোনে না।

তবু একদিন

তবু একদিন

একট্রেন বোঝাই অফিসযাত্রী চীৎকার করে উঠবে - আর না!

এক শপিংমল ভরতি মানুষ চীৎকার করে বলবে -
তফাৎ যাও!

ট্র‍্যাফিকে দাঁড়িয়ে থাকা অজস্র মানুষ চীৎকার করে বলবে -
রাস্তা ছাড়ো!

সিনেমাহলের সব কটা মানুষ উঠে দাঁড়িয়ে বলবে -
চুপ করো!

স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে বাচ্চাগুলো জড়ো হয়ে বলবে -
গাছ চেনাও, কালো বোর্ডটা সরাও!

বারুদ জমাচ্ছো

বারুদ জমাচ্ছো। জমিয়ে যাও যাও।
শুধু মনে রেখো,
আগুন কিন্তু সীমানা মানে না।

I Think

One of the greatest irony may be, when a conservative, fanatic, biased person starts his/ her sentence like this - "I think...."

স্পষ্ট

স্পষ্ট তাকিয়েছিলাম
স্পষ্ট তাকালে তুমিও

স্পষ্ট কথা বললাম
স্পষ্ট কথাগুলো তোমারও

রেস্টুরেন্টের খাওয়ার বিল
সংশয় নেই, স্পষ্ট হিসাব
মিটিয়ে উঠলাম
উঠে দাঁড়ালে তুমিও

তাড়া আছে
তাড়া তো আছে তোমারও

তবু কেন যেন বেয়াড়া কষ্ট
বুক তো চিরছে তোমারও

দ্বিধা

একটা চেয়ার নিজেকে বলত টেবিল। টেবিলের পাশে তাকে রাখলেই সে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠত। আর একা হলেই সে নিজেকে বলতে শুরু করত - আমি টেবিল... আমি টেবিল... আমি টেবিল।

খারাপ পোস্ট

রবীন্দ্রনাথের পর বোধ করি এই প্রথম কোনো বঙ্গকবি এত বিদেশ ভ্রমণ করিতেছেন। তাহাতে বাংলা সাহিত্যের কি প্রসার বা উন্নতি হইতেছে বলিতে পারিনে কিন্তু বাঙালী পাঠক-পাঠিকাকূলের হৃদয়ে গভীর আন্তর্জাতিক ভাব জাগিতেছে। এতদিন কবিরা চৌরঙ্গী, খোয়াই, ময়দান, পুরীর সমুদ্রসৈকত কিম্বা কাঞ্চনজঙ্ঘার দিকে মুখ ফিরাইয়া কিম্বা পাছু ফিরাইয়া ছবি তুলিবেন, ইহাই রীতি ছিল। সে রীতি ভাঙিয়া কবির বিদেশের নদনদী, পথঘাট, রেস্তোরাঁ, বিদে

অমল

অমল তো একটা বয়েস কিম্বা একটা লিঙ্গ না। অমল একটা বাধ্যতামূলক অবস্থা। অমল একটা ইচ্ছা। একটা আস্পৃহা। একটা গভীর নিষ্পাপ কৌতুহল। তীব্র বাঁচার ইচ্ছা। ভালোবাসার ইচ্ছা।
        হাস্পাতাল, ট্রেন, স্টেশান, রাস্তাঘাট, ট্রামবাস, বাড়ির আধখোলা জানলায় যে কত কত অমলকে দেখি। হাতটা বাড়িয়ে আছে অথচ এগোতে পারছে না। কে ধরবে? সবাই ব্যস্ত যে!

মাঝ সাগরে

আমার জন্য ভালোবাসা না হয় নাই রাখলে
   খানিক সময় পারলে রেখো

যখনই আসি তখনই তো অসময়
   মাঝ সাগরে জোয়ার ভাঁটার হিসাব কোথায়?

তোমার নদীতে নোঙর না ফেলি দেখো

স্বর্ণ আর দর্পের বুদবুদ

তুলসীদাসজী তাঁর কালজয়ী 'রামচরিতমানস' এ আগামী দিনের উল্লেখ করছেন -

"বহু দাম সঁবারহি ধাম জতী। বিষয়া হরি লীনহ ন রহি বিরতী।।
তপসী ধনবন্ত দরিদ্র গৃহী। কলি কৌতুক তাত ন জাত কহী।।"

অমৃত

তোমরা অমৃত কোথায় দেখো?
আমি তো যন্ত্রণাই দেখি চারদিকে,
        অসহ্য যন্ত্রণা!

এত যন্ত্রণা সহ্য করেও তবু টিকে থাকতে চাইছি

  সেই ইচ্ছাই কি তবে অমৃত?

নীল তিমির গ্রাস

"All happy families are alike; each unhappy family is unhappy in its own way"

        'Anna Karenina' র বিখ্যাত প্রথম লাইন। আমার কথাটা মাথায় এলো 'নীল তিমি' খেলার প্রসঙ্গে। তবে কি নিঃসঙ্গতাই এর কারণ? নিঃসঙ্গতার কারণ অনেক হতে পারে।

অভাবটা তোমার

কান্নাটা আমার
     যন্ত্রণাটা আমার

         অভাবটা
          তোমার

চক্ষু চড়কগাছ

একখেন পোস্ট পইড়া চক্ষু চড়কগাছ হইল। একজন রামকৃষ্ণ ভক্ত লিখছেন যে, 'রামকৃষ্ণ মিশনের নিন্দা শোনা পাপ। গুরুতর পাপ। রামকৃষ্ণদেবের গৃহীভক্ত নাগ মহাশয় একবার গুরুনিন্দা শুনে নিন্দুককে বেগো জুতোপেটা করেছিলেন। আমাদেরও উচিৎ নিরুত্তর না থাকা'।

ধর্মসভার আওয়াজ

মাইকে ভেসে আসছে ধর্মসভার আওয়াজ। বক্তা গদগদ হয়ে উচ্চৈঃস্বরে বলছেন -

নীলতিমি

কিশোর-কিশোরীদের নীলতিমি। আর বড়দের গুরুবাদ। কোথায় যেন একটা মিল আছে।