আমি তৈরি, সেই কবে থেকে
সৌরভ ভট্টাচার্য
18 June 2022
গোলাপ
সৌরভ ভট্টাচার্য
5 June 2022
বাচ্চাটা বারবার গোলাপটার দিকে হাত বাড়াচ্ছে। যতবার হাত বাড়াচ্ছে ততবার অস্বস্তিতে পড়ছে অনোখ। ভাতিণ্ডা থেকে বিরাশি বছরের মাকে নিয়ে এসেছে শিরডি, সঙ্গে অবিবাহিতা বোন, কুসুম। তার মায়ের ভীষণ ইচ্ছা সাঁইবাবার মন্দিরে আসবে। অনোখের জন্মের আগে থেকেই নাকি মানত ছিল মায়ের। আসা হয়নি। গরীবের পক্ষে চৌকাঠ পেরোনো হিমালয় পেরোনোর সমান।
গতকাল মাকে বোন নিয়ে এসেছিল মন্দিরে। অনোখের সময় হয়নি। সে আসলে একটা ব্যবসার কাজ নিয়ে এসেছে শিরডি। ভাতিণ্ডাতে তার ছোটোখাটো একটা ব্যবসা। আর সেই জন্যেই শিরডি আসা। মায়ের জেদ, সেও আসবে। তাই মা আর বোন সঙ্গে এলো।
...
গতকাল মাকে বোন নিয়ে এসেছিল মন্দিরে। অনোখের সময় হয়নি। সে আসলে একটা ব্যবসার কাজ নিয়ে এসেছে শিরডি। ভাতিণ্ডাতে তার ছোটোখাটো একটা ব্যবসা। আর সেই জন্যেই শিরডি আসা। মায়ের জেদ, সেও আসবে। তাই মা আর বোন সঙ্গে এলো।
...
সঙ্গগুণে
সৌরভ ভট্টাচার্য
4 June 2022
কানাই গাইয়ে ফিরছে। বুকের কাছে দলা পাকানো অভিমান, কান্না। আজ সুর লেগেছে, সুর জাগেনি। না বেহাগে, না শিবরঞ্জনীতে।
রাত তো অনেক। গ্রামের ফাঁকা রাস্তা। মাথার উপরে বাঁকা একফালি চাঁদ। রাস্তার দু ধারে মাঠ। কেউ তার সঙ্গে ভালো করে কথা বলছে না। কানাই সাইকেল থেকে নামল। সাইকেলটা স্ট্যান্ড করে রাস্তার পাশে বসল। গলাটা অল্প অল্প ব্যথা করছে। তার বয়েস কত হল? সামনের অক্টোবরে বত্রিশে পড়বে। কিন্তু এখনও নিজের মন বসল না। গোটা জীবনটাই ছড়ানো। গুরু বলেন, কানাই জীবনে কিছু দুঃখ গ্রহণ করে নিতে হয়, কিছু দুঃখকে বরণ করে নিতে হয়। নইলে জীবন চাষবাসহীন ক্ষেতের মত পড়ে থাকে। সে অভিশাপ।
...
রাত তো অনেক। গ্রামের ফাঁকা রাস্তা। মাথার উপরে বাঁকা একফালি চাঁদ। রাস্তার দু ধারে মাঠ। কেউ তার সঙ্গে ভালো করে কথা বলছে না। কানাই সাইকেল থেকে নামল। সাইকেলটা স্ট্যান্ড করে রাস্তার পাশে বসল। গলাটা অল্প অল্প ব্যথা করছে। তার বয়েস কত হল? সামনের অক্টোবরে বত্রিশে পড়বে। কিন্তু এখনও নিজের মন বসল না। গোটা জীবনটাই ছড়ানো। গুরু বলেন, কানাই জীবনে কিছু দুঃখ গ্রহণ করে নিতে হয়, কিছু দুঃখকে বরণ করে নিতে হয়। নইলে জীবন চাষবাসহীন ক্ষেতের মত পড়ে থাকে। সে অভিশাপ।
...
সমুদ্রতট ও মুক্তা
সৌরভ ভট্টাচার্য
5 May 2022
সমুদ্রের ধারে দাঁড়িয়ে সে মুক্তার হার বিক্রি করে। সকাল থেকে রাত। সমুদ্রের ধারেই খায়। হাত মুখ ধোয়। স্নান করে। বাড়ি যায় রাতে। অনেক রাতে।
সমুদ্রের ধারে সবাই তো তার ক্রেতা না। কয়েকজন ক্রেতা।
সমুদ্র দেখতে আসা সবাই তো আর তার মুক্তামালায় উৎসাহী নয়। কেউ কেউ আসে উৎসুক। তারা সবাই তো
...
সমুদ্রের ধারে সবাই তো তার ক্রেতা না। কয়েকজন ক্রেতা।
সমুদ্র দেখতে আসা সবাই তো আর তার মুক্তামালায় উৎসাহী নয়। কেউ কেউ আসে উৎসুক। তারা সবাই তো
...
অ-স্থির
সৌরভ ভট্টাচার্য
3 May 2022
পাহাড়ের চূড়ায় একটা প্রজাপতি বসেছিল। কেউ জানত না। তার ডানায় সূর্যের আলো ঠিকরে জ্যোতি বেরোচ্ছিল। কেউ দেখল না।
মেঘ করল। খুব বৃষ্টি হল। প্রজাপতি জলের তোড়ে ভাসতে ভাসতে নেমে এলো রাস্তায়। বৃষ্টির জলে ভেসে ভেসে এলো গ্রামে।
উঠল গা ঝাড়া দিয়ে একজনের বারান্দায়। বসল চুপ করে বাঁশের গায়ে। যে বাঁশের আগায় দাঁড়িয়ে বাড়ির ছাদ।
ও কিছু না
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
ঝড়ে আটকে গেলাম চায়ের দোকানে। টিনের চালে শিল পড়ছে। বারবার মোমবাতি নিভে যাচ্ছে। ঝড়ের দাপট সামলাতে টিনের দেওয়াল থরথর করে কাঁপছে। আর কাঁপছে কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়া।
এই মুহূর্ত
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
গুরু বললেন, তুমি যখন বাড়ি থাকবে তোমাকে তখন গিয়ে দীক্ষা দিয়ে আসব।
শিষ্য আশ্চর্য হয়ে গেল। বলল, তবে তো ভীষণ ভালো হবে গুরুদেব। আমার বাড়িতে আপনার পায়ের ধুলো পড়বে।
গুরু হাসলেন। বললেন, কাল সকালে আসব।
বাঁচতে গেলে একটা সুতো লাগে
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
যার কোনো কূলে কেউ নেই, সেও চায় তার যাওয়ার পথ কেউ অন্তত আটকাক। কেউ দাঁড়িয়ে বলুক, তুমি চলে গেলে আমার অসুবিধা হবে। তোমার থাকাটার একটা মানে আছে আমার কাছে।
যার কেউ নেই। তারও অভিমান হয়। কার উপর সে স্পষ্ট জানে না। কিন্তু হয়। কেউ চোখ মোছানোর নেই জেনেও সে চোখের জল ফেলে। সে রাগে। ভালোবাসে। কাকে সে নিজেও জানে না।
কোমল প্রাণে
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
ডাবগুলো সব বিক্রি হল। গ্রামে ফিরছে ফাগু। সোজা রাস্তা। খুব গরম। রাস্তার ধারে একটা শিবের মন্দির। ফাগু দাঁড়ালো। পকেট থেকে একটা পাঁচটাকার কয়েন বার করে মন্দিরের বারান্দায় রাখল। ফাগু শেখের বিক্রিবাট্টা ভালো হলে কিছু টাকা দেয়। ধর্ম দেখে না। জানে সবই এক। আব্বু একতারা বানাতে পারত খুব ভালো। খোলও বানাতো দারুণ। দূর দূর থেকে মানুষ আসত। তখন ফাগু কত ছোটো। ফাগু মানুষে বিশ্বাস করে। মসজিদ, মন্দির যাই পড়ে, ফাগু সামর্থ্যে কুলালে কোনো একটা জায়গায় একটা কয়েন রেখে দেয়। মানুষের জন্য। আল্লাহ যাকে দেখাবেন সে দেখবে।
মোড় ফিরিয়ে দে
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 May 2022
গোঁসাই ভাবল স্টেশানে গিয়ে বসে। কিন্তু এই ফাঁকা রাস্তা। পাশে দীঘির জল। ঠাণ্ডা বাতাস, জুড়িয়ে যাচ্ছে শরীর। গোঁসাইয়ের সন্ধ্যে থেকে ভিক্ষা জোটেনি। যা হোক, না জুটুক। গোবিন্দের ইচ্ছা। সামান্য একটু মুড়ি ছিল। তাই খেয়ে একতারাটা বার করল। নাম গাইবে। নিঃসহায়ের সম্বল নাম ছাড়া আর কি? নাম মানেই প্রেম। প্রেম মানেই নাম। প্রেম মানেই সত্য। সত্য মানেই প্রেম। একতারায় সুর উঠল। নাম, প্রেম, সত্য - এক হল।