তোমায় প্রথমবার কোথায় দেখলাম? বলব না। তোমায় দেখলাম। তুমি দেখলে না। কারণ তখনও তুমি, তোমার তুমি নও। তখনও তুমি নির্ভুল তুমি। আমার তখন ডানে বামে ভুল, উঠতে বসতে ভুল, ঘুমে জেগে থাকায় ভুল। সেই ভুলেই আমি প্রথম তোমায় চিনলাম।
তুমি হাঁটলে অনেকটা ঠিক রাস্তায়। আমি ছায়ার মত ফিরলাম ভুলের বাঁশি নিয়ে অলক্ষ্যে তোমার পিছেপিছে। তুমি শুনতে পেলে না। পাবেও তো না। কারণ তখনও তুমি সত্যি তুমি নও। তখনও তোমার কানে বাঁধা নির্ভুল মন্ত্রের স্বর।
তোমার ঠিক রাস্তাটা ফুরাল। ফুরাবে জানতামও। কারণ সব ঠিক রাস্তাই কোনো না কোনো ভুল রাস্তায় এসে মেলে। লোকে হায় হায় করে ওঠে। সেই কোলাহলে ঠিক রাস্তাটা যায় হারিয়ে। ঠিক রাস্তার আবার হইচই সয় না কিনা! যেই না ঠিক রাস্তাটা পড়ে ঘুমিয়ে, অমনি জাগে ভুল রাস্তা। সব্বাই তখন সেই ভুল রাস্তাটাকেই ঠিক রাস্তা বানাতে যায়। ভুল রাস্তাটা যায় মরে। ওরা মৃতদেহটাকে বলে পবিত্র। ভুলের আত্মাটা তখন আবার একটা নতুন ভুলের শরীর খোঁজে।
তাই তুমি ঠিক রাস্তাটা হারালে। আমার ভুলে এসে পা মেলালে। তুমি, তুমি হলে যেই, আমায় দেখতে পেলে। চমকে উঠে বললে, আমি যে তোমায় চিনি! তুমি সেই কত জন্মের আমার, চিরকালের আমার।
আমি বললাম, হ্যাঁ তো। আমার সব ভুলের উত্তর তুমি। আমার সব ভুলের গর্ব। ওগো ভুল, সেই সৃষ্টিলগ্নে কি এক ভুলে বিধাতা গড়েছিলেন হৃদয় - তুমি তারই জয়মাল্য!