Skip to main content

একদিন শুনেছিলাম পৃথিবী থেকে ধর্মকে সরিয়ে দিলেই সব শান্ত হবে।

রাশিয়া ভুল প্রমাণ করল সে তত্ত্ব। বেসমেন্টে যৌনদাসী রাখা আছে এখন। লাস্টগার্ল পড়েছিলাম এরকম ঘটনা। সেখানে তারা ছিল ধর্মান্ধ, বর্বর। এখানে এরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটা দেশের সেনারা। মেয়েরা প্রেগনেন্ট হয়ে যাচ্ছে বেসমেন্টে। তাও ছাড় নেই। দিনে ক'টা পুরুষের লালসা মেটাতে হয়? না, কোনো বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্সে এ খবর ছাপা হবে না। যেমন লাস্টগার্লের কথাটা কেউ ছাপায়নি। সে নিজের বয়ানে না বললে জানাও যেত না কোনোদিন। এখন এই মুহূর্তে যখন আমি টাইপ করছি লেখাটা তখনও তো ইউক্রেন জুড়ে ধর্ষণ চলছে। শিশু শরীরগুলোও বাদ যাচ্ছে না। পুড়িয়ে স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে দেওয়া হচ্ছে।

গোটা বিশ্ব পড়ছে। জানছে। কিন্তু কিচ্ছু করার নেই। কেন নেই অতটা বোঝার মত শিক্ষিত আমি নই। আমি শুধু হতাশ হয়ে ভাবছি প্রতিদিন ক'টা শরীরকে শান্ত করে ওরা শুতে পায়, খেতে পায়, ঘুমাতে পায়? লাস্ট গার্লে আছে সদ্য কয়েজন পুরুষের খিদে মিটিয়ে শুতে না শুতেই আরেকদল এসে হাজির। অনেক দাবী। অনেক খিদে। সব প্রকাশ্যে ঘটছে। কেউ কিচ্ছু বলছি না। সবাই আড়চোখে দেখে রাখছি।

সংবাদ সংখ্যা জানায়। যন্ত্রণার বিবরণ জানায় না। ওটা অনুমান করে নিতে হয়। কারোর প্রত্যক্ষ বর্ণনা পড়লে বোঝা যায় মানুষকে আসলে ধর্ম খারাপ করেনি, মানুষ আদতে খারাপই। বর্বরই। নইলে এত এত নীতির কথা রাতদিন শেখাতে হয় কেন, দিনের শেষে অবশেষে যা ব্যর্থ? স্বাভাবিকভাবে বিবেক কাজ করে না কেন? একজন শিশুর যৌনাঙ্গে নিজেকে প্রবেশ করিয়ে যে উল্লাস, তার যন্ত্রণায় যে নিজের তৃপ্তি, সে শিক্ষক হোক, আত্মীয় হোক, রাশিয়ার সৈন্য হোক… সে আদতে মানুষ তো? একজন যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাওয়া মানুষের শরীরকে পেষণ করে কি সুখ, কি আনন্দ? আমি সত্যিই বুঝি না বিশ্বাস করুন।

আমি ঈশ্বর, ধর্ম বোঝার আশাও রাখি না। কিন্তু মানুষের স্বভাব? সে এত দুর্বোধ্য হয়ে উঠলে বাঁচা যে ভীষণ কঠিন, অসহ্য! নিজেকে কত কতভাবে ঠকানো যায়? মুখ ঘুরিয়ে রাখা যায়! আমি তো ঈশ্বর নই! রাতদিন যে ভাবে মানুষের নানা স্বভাবের পরিচয় পাচ্ছি, বুঝতে পারছি না আমরা কি সত্যিই এতটা ঘৃণ্য লালসাকে অবচেতনে দমিয়ে বাঁচি? এতটা ঘৃণ্য? যে সুযোগ পেলেই ঝাঁপিয়ে নিংড়ে পিষে ফেলতে পারে যে কোনো একটা শরীর? সে শিশু হলেও? এত এত মানুষ তো সাইকোপ্যাথ নয়। এত এত সেনার তো সংসার আছে, তাদেরও শিশু আছে। তবে? সেদিন কাবুলিওয়ালার গল্প পড়েছিলাম। যে তার কলকাতার খোঁকিকে ভালোবেসেছিল বহুদূরে থাকা তার দেশের নিজের মেয়ের কথা ভেবে। তার বাবা মা তার সঙ্গে যে নিশ্চিন্ততায় তাদের মিনিকে ছেড়ে দিতেন সেদিন আজ পারতেন? জানি না। কাবুলিওয়ালার গল্পে হয় তো কাবুলিওয়ালার উদ্দেশ্য নিয়ে আজ গভীর আলোচনা হত। কি পরিণাম হত জানি না! তবে অনুমান করতে পারি।

যে মানুষের সংসার আছে, স্ত্রী আছে, সন্তান আছে সে মানুষ শুধু দীর্ঘদিন স্ত্রীসঙ্গ ছাড়া বলে এতটা বর্বর হয়ে ওঠে? তার সব অনুভব, বিবেকবোধ এমন শূন্য হয়ে যায় যে সে একজনের মরণযন্ত্রণায় সুখ পায়?

আমি জানি না আমি কোন বধির, ঘুমন্ত ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করব মেয়েগুলোর জন্য। যারা এমন দিনের আলোয় প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর চাইতেও বিভীষিকাময় জীবনকে দেখছে, মানুষকে দেখছে। জানি না ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে কেউ কেউ বেঁচে ফিরলে তারা আরেকটা লাস্টগার্ল লিখবে কিনা। শুধু জানি আমি মানুষের স্বভাবের গভীরে ঘুমিয়ে যে পিশাচ, তার পরিচয় পাচ্ছি রোজ। আর জানছি আমাদের এই সভ্য সমাজের শৌখিন দেবতা কি অসহায় তার সামনে। হা ঈশ্বর! তবু তোমার কাছে আমার প্রার্থনা, যদি কোথাও আমার অজ্ঞানতার প্রান্তদেশে তুমি মানুষী অনুভবে আছ, তবে রক্ষা করো। এ যন্ত্রণা যদি বিচার না পায়, দরদ না পায়, তবে সব প্রার্থনালয়, সব দেবালয় স্বেচ্ছার্পিত মূকবধির জন্য হোক। কোনো কানে শোনা মানুষ, চোখে দেখা মানুষ যেন ও পথে না হাঁটে।