রবীন্দ্রনাথের সাথে সহমত হতে নারলাম। কিছুতেই মানতে পারলাম না। সর্বাংশে, নিজের সর্বসত্তা দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বললুম... না... না.. না.. কভি নেহি... নেহি... নেহি... নেভার.. নেভার...নেভার... চাই না... চাই না... চাই না... দাদা আমি বাঁচতে চাই... চাই... চাই...
ব্যাপারটা কি? বলছি। বাঁশবেড়িয়া লঞ্চঘাটে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। লঞ্চ এসে ভিড়ল ঘাটে। উঠতে যাব। হঠাৎ শুনি বাঁশবেড়িয়া জেটি কর্তৃপক্ষের ঘোষণার মাইকে শানের গলা। গান হচ্ছে। সুরকার ও কথাকার দুই রবীন্দ্রনাথ। গানটির একটি পদ হল, "টুকরো করে কাছি, আমি ডুবতে রাজী আছি"
বালাই ষাট! কি অলুক্ষুণে কথা মাইরি। সদ্য লঞ্চে প্রথম পা-টা রেখেছি কি রাখিনি.. অমনি এমন কুডাকা কেন বাপু! বলি, না পার করতে পারিস করিস না। তবে এমন সুরময় ডোবাবার আহ্বান কেন বাপু!
লঞ্চে বসে দেখি, গঙ্গার জলে পূর্ণচন্দ্র একফালি কাটা শসার মত ফিনফিনে হয়ে দোল খাচ্ছে ঢেউয়ে ঢেউয়ে। চারদিক অন্ধকার। দূরে ওপারের আলো। লঞ্চের ঘড়ঘড় আওয়াজ। পায়ের নীচে মাঝগঙ্গা। শত্তুর মন, টাল খেল। বলল, আহা কি সুন্দর কথাখানি না গা! "টুকরো করে কাছি আমি ডুবতে রাজি আছি"...
মনকে বললুম, হতাচ্ছাড়া চুপ কর.. ওই গেরুয়া গেরুয়া লাইফ জ্যাকেটগুলো দেখ... ঘাটের টিকিট সামলা.. ডোবার জন্য টিকিট লাগে না... পারাপারের জন্য লাগে... তুই ডুবতে চাইলে ডোব, আমি চললুম।
ঘাটে এসে লঞ্চ ভিড়ল। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে দেখি, বড় বড় কাঠের গুড়ির ফাঁকে গঙ্গার জলের ঢেউ আছাড় খাচ্ছে, আর তার উপরে ছিন্নবিচ্ছিন্ন চাঁদের টুকরো.. আশেপাশে কিছু ভেসে আসা কচুরীপানা আটকে সেই জলে ডোবা গুঁড়ির সাথে লেগে...
ভিতরটা কেমন আটুপাটু করে উঠল। মন অমনি বলল, তখনই বলেছিলাম, ডুববে?
আমি বললাম, টিকিট কোন পকেটে রেখেছি মনে আছে?