সৌরভ ভট্টাচার্য
11 October 2019
দুটো ভরপুর মিথ্যা কথা লেখা বই পড়লাম। এক, 'দ্য লাস্ট গার্ল'; দুই, 'গড অব সিন'। অবশ্য দুটো বই-ই সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা – এই বলেই বিক্রি হয়, কিন্তু আদতে কি তা? নয় তো। আমরা এ সব মিথ্যা বলেই জানি, বিশ্বাস করি। ভাবি এসব হয় না। মানে আমাদের সুখের জীবনে এ সবের কোনো মূল্য নেই। তাই আমাদের নিত্য জীবনে ব্ল্যাকহোল যেমন মিথ্যা, তেমনই এইসব মেয়েদের উপর অমানুষিক অত্যাচারের গপ্পোগুলোও মিথ্যা, মানে দূরের সত্য। মঙ্গলগ্রহে জল আছে কি নেই নিয়ে যেমন আমাদের কৌতুহল আছে, দুশ্চিন্তা নেই, তেমন আর কি। আমাদের মস্তিষ্কের তথ্য ভাণ্ডারে কিছু ঠাঁই পায় হয় তো, কিন্তু আমাদের অনুভবের রাজ্যে সে ক্ষণিকের – আহা রে!
এই বাস্তব। এইভাবে না চললে মানুষ সুখী হয় না, এই হল মনোজগতের ধর্ম আমাদের, এরকম নানা তত্ত্ব নিশ্চয় আছে। কেউ আবার বলবেন, খালি খালি যা বিকৃত, যা অশুভ, যা সংখ্যায় কম – সে সব নিয়ে লেখার কি আছে বাপু? এর বাইরে কেমন সুন্দর সুশোভিত জগত হেসেখেলে বেড়াচ্ছে দেখো, তাই নিয়ে লেখো, আমরা সুখের কল্কেতে টান দিয়ে দিয়ে তা পড়ি।
না, আজ সে সব কথা লিখব না। যাদের ইচ্ছা হবে না, এ সব লেখা না পড়ে অনায়াসে রাজনীতি অলসচর্চা করুন, কার্নিভাল দেখুন, সিরিয়াল দেখে হাসুন-কাঁদুন, গেম খেলুন, নেট মার্কেটিং বা দোকানস্থ মার্কেটিং করুন, এ লেখা পড়বেন না। আমি খারাপ কথা লিখতে চলেছি।
আজ হঠাৎ চোখে পড়ল – আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশুদিবস। তাই লেখাটা আজই পোস্টাতে ইচ্ছা করল। আমি মুরাদের কথা আগেও লিখেছি, আবার অল্প করে বলি। তারপর আসব আমাদের দেশে সদ্য ঘটে যাওয়া আশারামবাপুর আশ্রমের কথা।
মুরাদকে অপহরণ করে তালিবানেরা, তারপর তাকে যৌনদাসী বানায় একজন উচ্চপদাধিকারী জঙ্গীর। তাকে ধর্মান্তরিত করা হয় মসজিদে নিয়ে গিয়ে। মুরাদকে সেই বয়স্ক জঙ্গী, তার স্ত্রী-পুত্র সমাবৃত পরিবারের মধ্যে নিয়ে আসে। যৌনদাসীদের জন্য আলাদা ঘর থাকে। প্রতিদিন চলে নানা যৌনাচার। নানা অতিথি জঙ্গীরা এলে মুরাদদের স্বল্পবাসে অতিথিদের সৎকারে যেতে হয়, না তারা তাদের স্পর্শ করে না, কিন্তু হোস্ট জঙ্গী এতে শ্লাঘা অনুভব করে। পরিবারের মেয়েরা সবই দেখে, শোনে, কিন্তু সবাই নীরব, নিরুত্তাপ। এ সব গা-সওয়া, এমন একটা ভাব।
একদিন মুরাদ পালাতে চেষ্টা করে। তাকে ধরে ফেলা হয়। শাস্তিস্বরূপ তাকে সেই জঙ্গীর পাহারাদারেরা একে একে পালা করে ধর্ষণ করে, অবশ্যই তার মালিক জঙ্গীর অনুমতি নিয়ে। তারপর তাকে বেচে দেওয়া হয়। তাকে একটা চেকপোস্টের গুমটি ঘরে রাখা হয়। মাঝে মাঝে এ সে আসে, ধর্ষণ করে যায়। লাগাতার সে ধর্ষণ চলে। সে যতই অসুস্থ হয়ে পড়ুক, ধর্ষিত হতে হতে বমি করুক, অজ্ঞান হয়ে যাক... তবু সে ধর্ষণ চলতেই থাকে, চলতেই থাকে, চলতেই থাকে... এরপর আরেকজন তাকে নিয়ে যায়। সেখান থেকেও সে পালায়, এইবার সফল হয়। এক পরিবারের সাংঘাতিক সাহস ও সহানুভূতিতে সে জঙ্গীদের কবল থেকে মুক্ত হয়। বাকিটা আমরা জানি, গতবারে তাকে শান্তির নোবেল দেওয়া হয় তাও আমরা হয়ত অনেকেই খোঁজ রাখি।
মুরাদের লেখার একটা বৈশিষ্ট্য আছে। সারাটা লেখা জুড়ে মুরাদ তা ফুটিয়েছেন। তার আবেগহীন দেখার চোখ, আর অত্যন্ত অসহনীয় মুহূর্তেও নিজের বিচারশক্তিকে তীক্ষ্ণ করে রাখার ক্ষমতা। উদাহরণ হিসাবে বলি, এক, এমন একটা নৃশংস কাণ্ড শহরের কেন্দ্রেই হচ্ছে জেনেও এত নিরুত্তাপ জনজীবন কি করে চলতে পারে? শুধুই কি ভয়ে? কিন্তু ভয় তো মনুষ্যত্বের শেষ কথা নয়। এমন একটা ঘৃণ্য প্রথাকে আপামর নরনারী কিভাবে সহ্য করে চলেছে? অবশ্য ‘সহ্য’ শব্দটাই বা আসছে কেন? যা নিয়ে তারা এত উদাসীন তার সাক্ষী থাকাকে কি আর সহ্য বলা চলে? তাই শহর জুড়ে নিত্য জীবনের দোকান-বাজার, হাসি-তামাশা, বিয়ে ইত্যাদি নানা উৎসব চলছে আর তার সাথে সাথে মাঝে মাঝেই যৌনদাসী পরিবৃত বড় বড় বাড়িগুলোও বিরাজ করছে, ওদিকে না তাকালেই হল, এমন একটা ভাব জনতার। মুরাদ আসুরিক প্রবৃত্তির নিষ্ঠুর জঙ্গীদের থেকে পাঠকের দৃষ্টি সরিয়ে বারবার এই উদাসীন জনজীবনের দিকে এনেছেন। তাদের প্রতিই তার বিস্ময়, হতাশার চূড়ান্ত অভিব্যক্তি।
মুরাদের আরেকটি লেখার বৈশিষ্ট্য, তিনি কোনো ধর্ষণের বর্ণনার ডিটেলিং করেননি। মানব চরিত্রের সাথে পরিচয় তো অনেক গভীর হয়েছে না মুরাদের? তিনি জানেন, অনেকেই যেমন এ বই পড়বেন না এত নিষ্ঠুরতা সহ্য করতে পারবেন না বলে; আবার তেমন ধারার অনেক মানুষ হয়ত বইটা নেবেন কিছু রোমহর্ষক যৌন বিবরণ পড়বে বলে। বইটাতে না আছে উগ্র সেন্টিমেন্টাল কিছু, না তো রগরগে বর্ণনা কিছু। মুরাদের আবেদন মানুষের বিবেকের কাছে, মনুষ্যত্বের কাছে, বিশ্বের কেন্দ্রে যে নীতিকে সার্বজনীন বলে বিশ্বাস করেছি আমরা, যার উপর দাঁড়িয়ে আমাদের মানবাধিকারের নিয়মাবলী রচিত, তার কাছে। তাই সস্তা সিমপ্যাথি চাইতে তিনি দাঁড়াননি পাঠকের সামনে, পাঠকের জাগ্রত বোধের কাছেই দাঁড়িয়েছেন, প্রশ্ন করেছেন। মনে করিয়েছেন আজও হাজার হাজার মুরাদ বন্দী, একই জীবন কাটাচ্ছে, যেখানে জীবন আর মৃত্যুর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই তাদের।
দ্বিতীয় বইটি হল আশারামবাপু ও তার সুযোগ্য পুত্র নারায়ণ সাঁইয়ের কীর্তিকলাপ নিয়ে লেখা – গড অব সিন। লেখক আউটলুক পত্রিকার সাংবাদিক উশীনর মজুমদার। প্রকাশক – পেঙ্গুইন।
মিতা, অবশ্যই নাম পরিবর্তিত, তার বাবা-মা আশারামের একান্ত অনুগত। প্রচুর আর্থিক ক্ষমতা থাকতেও যে বাবা-মা ঠিক করেন মেয়ে বাবার আশ্রমিক স্কুলেই পড়বে, তবে তার মধ্যে শুভসংস্কার জন্মাবে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। বাচ্চাটা ভর্তি হল স্কুলে।
ক’দিন বাদেই বাবা'র কৃপাদৃষ্টি পড়ল মেয়েটির উপর। বাবা'র মহিলা শিষ্যারা, যারা অত্যন্ত উচ্চশিক্ষিতা, এমনকি আই আই টি পাশ, এম বি এ পাশও আছে, তা-ও বাইরে থেকে করা ডিগ্রী, তারা সে মেয়েকে ক্রমে ছক তৈরি করে বাবার কাছ অবধি নিয়ে এল দীর্ঘদিন ধরে তার মগজধোলাই করতে করতে।
এখানে একটু বিদ্যা ফলিয়ে নিই। নেটফ্লিক্সে এরকম কয়েজন গুরুকে নিয়ে তথ্যচিত্র আছে। সবকটাতেই এই ‘সিডাকশান’ পদ্ধতিটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ এখন যেমন বাড়ির মেয়েদের মুখে রান্নার আগে ‘ম্যারিনেট’ করতে শুনি, এও তেমন। ধীরে ধীরে মস্তিষ্কটাকে পাকাও। কিভাবে? তাকে বোঝাও যে সে বিশেষ। সে এ পৃথিবীতে এসেছে অত্যন্ত বড় কাজের জন্য। সে দিব্য ক্ষমতার অধিকারী, সে এই পৃথিবীর সব চাইতে ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ, মানে ভগবান, তার যে দূত, অর্থাৎ গুরুর জন্য বলিপ্রদত্ত। কি হবে সংসারে ফিরে গিয়ে? যেখানে গুরুর চরণ সাক্ষাৎ সেবার সুযোগ সে পাচ্ছে? ত্যাগ করো এ নশ্বর সংসার। নাও গুরুকে জীবনের মূল করে – তোমারেই করিয়াছি জীবনেরও ধ্রুবতারা। ব্যস। মাথাটা ক্রমে ভোঁ ভোঁ। সত্যজিৎ মহাশয়ের সিনেমা – দেবী – মনে পড়ে? সেই সঙ্কট, তবে কি আমি সত্যিই বিশেষ কিছু?
এখন বিশেষ সুবিধা কে না চায়? সে ব্যাঙ্কের থেকে বেশি সুদের লোভে যেমন অতিশিক্ষিতও সারদা-নারদার লোভে পড়ে, এও তেমন। তাছাড়া বিশেষ হতে কে না চায়? আর দায়িত্ব নিচ্ছে কারা? মহিলারাই তো। তবে? সন্দেহের কোনো অবকাশই নেই। তারা কি আর জেনেশুনে এরকম একটা কাণ্ডের দিকে নিয়ে যেতে পারে এক বাচ্চাকে?
সে বাচ্চা মেয়েটা গুরুর ডেরায় ঢুকে বুঝতে পারল বাবার কৃপা কি পথে আসে। ক্রমে মেয়েটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবা বলে প্রেতাত্মা ধরেছে। তার জন্য যজ্ঞ চলে। আবার বাবার কৃপা আসে। মেয়েটা আর থাকতে না পেরে সব কিছু গিয়ে বাবা-মা'কে জানায়। বাকিটা আমরা জানতে পারি, অবশ্যই দুঁদে মহিলা পুলিশ চঞ্চল মিশ্র ও সোলাঙ্কি নামক উকিলের জন্য, যাকে রাম জেঠমালানির মত উকিলের সাথে লড়তে হয়েছিল, এমনকি নিজের পরিবারের জীবন বাজি রেখেও। কারণ? বাবাজী যে ভীষণ প্রভাবশালী। রাষ্ট্রশক্তি থেকে জনশক্তি বাবার মুঠোয়।
ছেলে নারায়াণ সাঁই। তারও কৃপাদৃষ্টি মারাত্মক। দুই বোনের গল্প। দু'জনেই দেবী হয়ে ওঠে আশ্রমের অন্যান্য শিষ্যাদের ষড়যন্ত্রে। তাদের নারায়ণ সাঁই কৃপা করে মুখমেহনে তার বীর্য্য তাদের মুখের মধ্যে দিয়ে দেয়। বলে পান করো, তোমাদের দেহ শুদ্ধ হবে। আর বাইরে কাউকে বোলো না, কারণ তারা ঈর্ষা করবে তোমাদের। (গা পাক দিয়ে উঠছে না? আমায় ক্ষমা করবেন, কিন্তু এইটুকু না হয় সহ্যই করলেন, নইলে জানতেন কি করে বলুন? বাচ্চামেয়েটার চোখদুটোর কথা কল্পনা করুন, তাকে শুনতে না, বাস্তবে সহ্য করতে হয়েছিল।)
তারা যখন প্রতিবাদ জানায় তখন তাদের একটা ঘরে আটকে রাখা হয়। গুরুপুত্র এসে লাথি-কিল-চড় ইত্যাদি মেরে তার কৃপা জানিয়ে যায়। বাড়ির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তারপরে কোনোক্রমে তারা পালায়। বাড়িতে নানা হুমকি আসে একের পর এক এর পর থেকে।
বাবা আর পুত্রের মাত্র ষোল হাজার কোটি টাকার মত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির দেখাশোনা করতেন নানা পুরুষ শিষ্যেরা। আর বাবা ও তার পুত্রের যৌনলালসার সাহায্যে এগিয়ে আসতেন নানা উচ্চমার্গীয় শিষ্যেরা। রামরহিম বাবা, নিত্যানন্দ বাবা ইত্যাদি বাবাদের গল্পতেও এরকম একটা করে এপিসোড আছেই। কেন? সে প্রশ্নের উত্তর সমাজ বিশেষজ্ঞেরা বলতে পারবেন। আমি জানি ভক্তি একটা দিকশূন্য গতি, যদি না তাতে জ্ঞানের আলো থাকে। জ্ঞানহীন ভক্তি যেখানেই জন্মেছে সেখানেই এ অনাচার।
দুটো ঘটনায় মিল এক জায়গায়, অন্ধবিশ্বাসের ভয়াল ক্ষমতা আজকের পৃথিবীতেও। শিকার, মেয়েরা। বাচ্চা মেয়েরা। একজন যখন সেজেগুজে দুর্গার পায়ের কাছে বসে হাজার হাজার মানুষের সামনে দেবী হয়ে ওঠে, সেটা যেমন তলিয়ে দেখলে ভয়ের, এ-ও তেমন উল্টোদিকে। ধর্মের আনুগত্য রক্ষার্থে মেয়েদের অবদান অনেক। কারণ ‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে”, অলক্ষ্মী কোনো পুরুষের হওয়ার ক্ষমতা নেই। সমাজে ধর্মের হাল, প্রধান হাল যে মেয়েরাই ধরে আছে, সে যে-কোনো ধর্মানুষ্ঠানে মেয়েদের সংখ্যাধিক্য দেখলেই বোঝা যায়। আর সেই সুযোগে মেয়েদের নানা লালসায় ব্যবহার করার উদাহরণও সর্বত্র, আদিকাল থেকে।
অন্ধবিশ্বাসের মত এমন ভয়ংকর প্রসাধন সমাজে আর দুটি নেই। তার বিরুদ্ধে শিক্ষা বাড়ি থেকেই যদি শুরু না হয় তবে বিপদ। আপনার বাচ্চা মেয়েটিকে সংস্কার শেখানোর নামে কি অন্ধবিশ্বাসের কূপে ঠেলে দিচ্ছেন --- একটু খেয়াল রাখবেন। সে কূপ থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পথ সে হয়ত আজীবন পাবে না।
কিন্তু মুরাদ আর মিতা? একজন জঙ্গীদ্বারা, আর একজন গুরুদ্বারা ধর্ষিতা। তারা না হয় পালিয়েছিল, সাহস আর ভাগ্য অবশেষে সহায় হয়েছিল। কিন্তু যারা আজও হয়ে চলেছে? এই মুহূর্তেও?
জঙ্গীদের মনে দৃঢ় বিশ্বাস সাধারণ মানুষ কিছু বলবে না। তাদের অস্ত্রের ভয় আছে, তাদের ধর্মের ভয় আছে। আশারামের মনেও দৃঢ় বিশ্বাস ভক্ত এতেও বিমুখ হবে না, হয়ত কয়েকজন দুর্বল বিশ্বাসী ভক্ত কমে যাবে এই আরকি। নইলে এত কিছু জানার পরেও তার ধনী ভক্ত কিছু নানা অপরাধ স্বেচ্ছায় ঘটিয়ে জেলে যেতে রাজী হয়ে যায় শুধু গুরুসঙ্গ করবে বলে? জেলের বাইরে তারা গাড়ি নিয়ে প্রদক্ষিণ করে সপরিবারে? আরে হ্যাঁ মশায়, বইতেই লিখেছে এসব।
আমার বারবার পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, অসহায়তার জায়গায় যেন বাচ্চাগুলো সব এক জায়গায়। তাদের অপরিণত মস্তিষ্কের সামনে সংসারের যে রূপ এল, এর মদত দিচ্ছে আদতে কারা? অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার। অত্যন্ত চালাক কিছু মানুষ সে সুযোগটুকু নিয়ে তাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করে চলেছে, আর আমরা কয়েকটা আশারাম-রামরহিমকে ধরে জেলে পুরে আর একটা মুরাদকে দেখে যদি ভাবি ভাগ্যিস, এই তো পেরেছি আমরা, তবে এই ঘুম আমাদের পাপের ঘুম হবে। জমা জল বের করতে না পারলে শ্যাওলার শেষ কোনোদিন হবে না। কিন্তু সে আর হবে কবে? আলো জ্বালতে উদ্যম লাগে, তার চাইতে গ্র্যান্টেড অন্ধকারের শীতলবাতাসই ভালো বলে বোধ হয় তাও জানি, কিন্তু হিংস্র নিশাচরেরা যে ওতেই বেড়ে চলেছে।