Skip to main content


"Reformation of society in line with 'BARANASHRAMIC (বর্ণাশ্রমিক)' tradition, creation of a state and then a world's state without the so called Democratic system"
'অর্থাৎ আমরা আমাদের বর্ণভেদ ব্যবস্থার আস্থায় তোমাদের তথাকথিত গণতন্ত্রের বিশ্বাসকে হটিয়ে নতুন পৃথিবী গড়ার শপথ নিচ্ছি। এটাই আমাদের লক্ষ্য।'

        উপরোক্ত বাক্যগুলো কোনো প্রাচীন পুঁথি থেকে নেওয়া নয়। বর্তমানের একটা অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ধর্মীয় সংগঠনের ওয়েবসাইটের প্রথম পাতায় সুসজ্জিত করে লেখা। যে সম্প্রদায়ের সাথে জড়িত আছেন অত্যন্ত প্রথিতযশা সাহিত্যিক 'মানবজমিন' এর শ্রদ্ধেয় লেখক মহাশয়।

        অর্থাৎ গণতন্ত্রের যে মূল বিশ্বাস, প্রতিটা মানুষ সমান আর তার সমান অধিকার - এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। প্রতিটা মানুষ সমান নয়, মেধার যোগ্যতায় সে বিজ্ঞানও মানে। কিন্তু প্রতিটা মানুষ সমান নয় বংশের প্রেক্ষাপটে? না মশায়, বুঝলাম না।
মজার কথা হচ্ছে, এই কথাটা প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে এবং লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত-অশিক্ষিত মানুষ তার অনুগামীও হচ্ছেন।



কাল জানলাম যে চিকিৎসককে অসুর সাজিয়ে দেখানো হয়েছে কোনো পূজামণ্ডপে। খারাপ লাগত না, যদি পাশাপাশি বাকি সব পেশার অসুরদের পুতুল রাখা থাকত। কারণ অসুরহীন এমনকি সাধকমহলও যে নয় তার প্রমাণ বহুজন শ্রদ্ধেয় জেলনিবাসী বাবাজীরা তো আছেনই। তবে শুধু চিকিৎসক কেন? পাব্লিক সেন্টিমেন্টে সুড়সুড়িটা বেশি লাগবে বলে? মানুষের অজ্ঞতা আর স্বল্পদর্শীতার মত পুঁজি বড্ড কম। তাতে ঢেউ তোলা যায় আর খুব সহজেই। অগত্যা খোঁচাও..খোঁচাও..যে যত কম বোঝে, সেই বেশি ক্ষেপে ওঠে, তাকে ক্ষ্যাপাও ক্ষ্যাপাও। সমস্যা আমাদের রাজ্যে চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু একটা নিশ্চই আছে। নইলে এত ক্ষোভ, এত আলোচনা, এত লেখালেখি, ভিনরাজ্যে কাতারে কাতারে চিকিৎসা শরণার্থী হওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি সব ঘটে না, মানছি। কিন্তু একটা পেশাকে এভাবে কলঙ্কিত করে দেখানো তা বলে? কেন বাকি ক্ষেত্রগুলোতে আমরা বুঝি ভারতের এক নম্বর রাজ্য বলে ভূষিত হয়েছি?

        উপরের দুটো ঘটনার মিল কোথায়? মিল তো আছেই। রবি ঠাকুর একবার মেয়েদের শিক্ষায় যখন সমাজ বাগড়া দিচ্ছিল, বলেছিলেন, আমরা এমন একটা পাখি বানাতে চাইছি যার ডানাদুটো সামনে ওড়াবে আর পা'দুটো পিছনের দিকে টানবে।
বিজ্ঞান বলতে জীবনবিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান ইত্যাদি বোঝানোর আগে যেটা বোঝায় - বিশেষ রূপে জানা। সে চর্চাটা হচ্ছে কোথায়?
        তুমি তোমার বিশ্বাসে, মতে অনড়, অটল, অচল থাকতেই পারো। চোখ বন্ধ করে মূর্খের স্বর্গে বাঁচতে তোমায় কেউ কোনোদিন আটকাবে না। কিন্তু কথা হচ্ছে, তোমার সামনে যেদিন পরের প্রজন্ম প্রমাণ চাইবে যাতে সে নিজেও সে বিশ্বাসের বৌদ্ধিক সমর্থন খুঁজে পায়, সেদিন তুমি কি বোঝাবে? বলবে পশ্চিমবঙ্গের সব চিকিৎসক কসাই ছিল? আরেক পক্ষ বোঝাবে দেশটা বর্ণাশ্রম না মেনে রসাতলে গেল? বুঝবে সবাই?
        ব্যক্তিগত আক্রমণ করে ফেললাম? হয়ত বা। কিন্তু কি করব বলো, তোমাদের বাড়ির ভিতরে এটুকু অন্ধকার মেনে নিতে পারতাম, তোমার সে অন্ধকারের মহোৎসবকে তুচ্ছ করেও দেখতাম হয়ত বা, কিন্তু তুমি যখন মানুষের অজ্ঞতা আর স্বল্পদর্শীতাকে পুঁজি করে ব্যবসা ফাঁদতে চাও, স্বার্থসিদ্ধি চাও, তখন তা কি আর ব্যক্তিগত থাকে বাছা? তোমার বাগানের টক আম তুমি খাওগে, বাজারে জনগণে বিলাবে আর বলবে ওছুধ, ওছুধ...অমনি আমিও চিল্লাবো..ওরে খাইসে নে রে.. খাইস নে!