স্বাধীনতা দিবস। উৎসব? কত বন্ধু ট্যাগ করছেন এখানে। কত বন্ধু ভারতীয় পতাকা পাঠাচ্ছেন ওয়াটস অ্যাপে। খুব ভাল থাকতে চাইছি। মহান মানুষদের কত ত্যাগ, বীরত্ব, ইত্যাদি শুনছি টিভিতে। সত্যি কথা বলতে, ভালো লাগে না এগুলো আর।
আজ সকাল থেকে খবরের কাগজ খুলিনি। কি হবে? সেই কেচ্ছা, সেই ধর্ষণ, সেই চুরি-ডাকাতি-বাটপাড়ি.....ভুলে থাকতে চাই? না, তা ঠিক না। আজ অন্তত দূরে থাকতে চাই।
যাঁরা যাঁরা মাঝে মাঝে আসেন ভিক্ষার পাত্র নিয়ে, তাঁরা এসেছেন। ওদের দিকে তাকাতে লজ্জা লাগছিল, টিভিতে দেশাত্মবোধক গানের শব্দটা কমিয়ে দিয়ে ওদের সাথে কথা বললাম। কি করব, বাংলা ভাষাটা যে বোঝেন। কেমন ব্যঙ্গ শোনাবে না ওদের কানে? তার চেয়ে থাক।
ভেবেছিলাম তো লিখব না। তবু মনে হয়, দুটো কথা এই ফাঁকে বলি। খুব ভাবায়। এক শিক্ষা, দুই স্বাস্থ্য।
আচ্ছা একটা দেশে এতগুলো সিলেবাস কেন? আপনি গরীব? আপনার স্কুল আলাদা। আপনার অনেক টাকা, আপনার শিক্ষা আলাদা। ভাষা আমাদের অনেক, সংস্কৃতিও আলাদা। মানলাম। তাই বলে এতগুলো সিলেবাস?! এতগুলো বোর্ড? কেন? আমরা একদেশের মানুষ হিসাবে ছোট থেকে এক শিক্ষার আলোক পেতে পারি না? কেন এই রকম অসাম্য জীবনের শুরুতেই?
আরেকটা স্বাস্থ্য। বহুল আলোচিত বিষয়। তবু, কেন আজও সেই খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ হয় না, আর কেন তা সম্পূর্ণভাবে সরকারি আওয়াতায় আসে না, বুঝি না। সেই এক পার্থক্য। আপনার অর্থ আছে, আপনার সুস্থ বেঁচে থাকার, সুচিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ বেশি। আপনার নেই, আপনি অপেক্ষা করুন। দিন, ক্ষণ, সুযোগ, পরিস্থিতি মিলুক - চিকিৎসা পাবেন।
কথাটা হচ্ছে, অর্থনৈতিক বৈষম্যতা আমার বিলাস, জীবনযাত্রার অন্যান্য দিকে পার্থক্য আনুক। আপনি পাঁচতারা হোটেলে খান, আমি ধাবায় খাই। আপনি প্লেনে যান, এসি ফার্স্ট ক্লাসে যান, আমি জেনারেলে যাই, স্লিপারে যাই। আপনি গাড়ি চালান, আমি বাসে যাই...ইত্যাদি ঠিক আছে।
তা বলে আপনার প্রাণের মূল্য আর শিক্ষার মান আমার থেকে দামী হয়ে গেল? শুধু আপনার বেশি বিত্ত বলে? এটা বুঝি না। এগুলো জীবনের প্রাথমিক চাহিদা না?