আঁকাবাঁকা কিছু কথায় তুমি সোজা কথাটা ছুঁতে চাও। সোজা কথাটা সিঁড়ির নীচে, ছাদে, হাবুলের চায়ের দোকানের কোণে থাকে লুকিয়ে। তুমি ঘুমিয়ে পড়লে, তোমার বুকের ওপর একলা একলা বেয়ে ওঠে, কেন্নোর মত। কখনো বা সার দেওয়া পিঁপড়ের সারির মত। তুমি ঘুমের মধ্যে টের পাও - সোজা কথাটা তোমার বুকে। সকাল হয়। তুমি হারিয়ে ফেলো।
আবার সারাদিন ধরে খোঁজো সোজা কথাটাকে। কাচতে কাচতে। ঝাঁট দিতে দিতে। ফুটন্ত চায়ের জলের দিকে তাকাতে তাকাতে। মনকে ঘেঁটি ধরে বারবার খাপে বসাতে বসাতে। খুঁজতে থাকো। খুঁজতে থাকো। খুঁজতে থাকো। ওদিকে ভর দুপুরে রাস্তা দিয়ে ফেরিওয়ালা হেঁকে যায়.... পুরানো কাপড়ে বাসন রাখবে..... শিল কাটানো ডেকে যায়... শিল কাটাও... আয়েশাদের বাড়ির উঠানে জামরুল গাছটার ফাঁক থেকে কি এক পাখি ডেকে যায়... হুক....হুক....হুক... সোজা কথাটা কই?
তুমি সোজা কথাটা খুঁজেই চলো। রাতের অন্ধকারে ও তোমার বুকের ওপর হাত রেখেই হয় তো ঘুমিয়ে। তুমি ওর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকালে। ভাল লাগল। ভাল লাগার সাথে একটা কষ্টও হল। জানো না কেন হল। সব গভীর সুখে একটা কষ্ট থাকে।
তুমি জানলা দিয়ে বাইরের অন্ধকারে, রাস্তার আলোর দিকে তাকালে। ডিমের কুসুমের মত আলো। ঘুরন্ত পাখার দিকে তাকালে। সোজা কথাটা কই? তার শ্বাস-প্রশ্বাস তো টের পাচ্ছ তোমার আশেপাশে। সব কিছু যেন সেই সোজা কথাটারই মুখোশ। তবু সেই সোজা কথাটা কই? সবাই যেন জানে। তবু কেউ কাউকে বলছে না। সেই সোজা কথাটা কই?
সৌরভ ভট্টাচার্য
9 April 2016