একটা ছোট্ট চারাগাছ জন্মাল বনে। বড় হতে লাগল। বনের পাখি, পশু, মানুষ সব্বাইকে সে ভালোবেসে ফেলল। পাখি ডালে বাঁধল বাসা। মানুষ ক্লান্ত হয়ে পেল আশ্রয়, পেলো মনের কথা বলার সাথী।
সে গাছটাকে বন থেকে আনা হল শহরে। সে শহরে আসল বটে। তবু, "ইটের পরে ইট, মাঝে মানুষ কীট" সে হল না। এখানেও আশ্রয় পেল অনেক শহুরে পাখী, শহুরে মানুষ। একটা ছোট্ট সংসার। তাকে ঘিরে একটা বড় সংসার। চিরকালের সংসারে যার ডাক, ক্ষণকালের সংসার তাকে বাঁধে কি করে? বাঁধতেই পারেনি। অচেনা, অজানা, দুঃখী, বঞ্চিত... সব্বাই তার আত্মীয়। যার ঘর নেই তাকে দিয়েছে নিজের ডাল কেটে, নিজের পাতা দিয়ে বানিয়েছে ছাউনি। শিকড় উপড়ে বানিয়েছে ওষুধ আর্তের জন্য। আঘাতের পর আঘাত এসেছে। চুপ করে থেকেছে। তার মাথায় যেন যুগ-যুগান্ত দায়, হৃদয়ে যেন এক ঈশ্বর ভালোবাসা। সবার শেষে সেই জিতেছে। মানে জিতেছে তার নাছোড়বান্দা ভালোবাসা, যাকে ঠকিয়েও ঠেকিয়ে রাখা যায় না, সে যে কি অসম্ভব! সে সুদ, আসল সব উসুল করে, ঋণের সাথে ঋণী মানুষটাকেও ফেলে বেঁধে। এ গাছটাও বেঁধে ছিল এমন অদৃশ্য বাঁধনে বহু নিরাবলম্ব প্রাণকে। সে হয়ে উঠল মূর্তিমান সান্ত্বনা, আশ্বাস, ভালোবাসা।
সব গল্পের মত এ গল্পেরও নটে গাছটা মুড়ালো। বড্ড তাড়াতাড়ি, এই যা।
শুভ জন্মদিন, মা।