Skip to main content

সে বাগানের গেটেই অপেক্ষা করছিল। তার জন্য। শুধু তার জন্য। 

     অটো থেকে নামার সময় তার বুকটা ধক করে উঠল। কেউ এভাবে অপেক্ষা করেনি তার জন্য। সে যে ফুল ভালোবাসে, এ কথাই বা ক'টা মানুষ জানে? কেউ ডাকেনি বাগান দেখতে কোনোদিন। সে নিজে থেকে গেছে। অযাচিতের মত। অনাকাঙ্ক্ষিতের মত। আজ কেউ তাকে ডেকেছে। 

     বাগানে গেট খুলে সে ডাকল, বলল, আসুন। 

     সে ঢুকল। চারদিক দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। সে বিস্মিত হয়ে বলল, এ সব আপনার হাতের কাজ? 

     সে একটু হেসে বলল, হ্যাঁ। হাসির সঙ্গে অল্প গর্ব, আরেকটা কিছু যেন। কি? বোঝা গেল না। তবে চেনা। 

     আধঘন্টা হল। হঠাৎ সে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলল, আপনি সঙ্গে কিছু আনেননি? ব্যাগট্যাগ কিছু? 

     কেন? ব্যাগ আনব কেন? 

     বাহ, আপনাকে যে আমি আজ অর্ধেক দামে দেব। আপনি যে ফুল চান। বাজারে যা পান তার থেকে অর্ধেক দামে! 

     হঠাৎ করে তার নাকে এলো অটোর গ্যাসের গন্ধ। তারপর মনে এলো রাস্তার ধুলোর জ্বালাপোড়া, সারা গাল জুড়ে। তারপর মনে এলো অটো ড্রাইভারের ঘামের গন্ধ। পাশে বসে থাকা মহিলার উগ্র সেন্টের গন্ধ। ফুল কিনতে হবে? যদি না কেনে? 

     তবু সে কিনল। ব্যাগও কিনল। অর্ধেক দামে। সে গেট অবধি ছাড়তেও এলো। তার হাসিতে গর্বের সঙ্গে মেশানো ছিল, চালাকি, শিকারির হাসি। এতবার দেখেছে এই হাসি। কেন যে চোখে পড়েও পড়ে না। নাকি দেখতে চায় না! 

     রাস্তার সব রঙ চটে গেছে। আকাশের রঙও আগের মত ফিকে। বুক মাথা আবার আগের মত ভার। অচল। 

     কিন্তু কেন কিনল তবু ফুলগুলো?

     অপেক্ষা করেছিল বলে। সে না করুক, সে নিজে তো করেছিল। নিজের অপেক্ষার সঙ্গে বেইমানি করা যায় না।